Thursday, March 13, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

কুখ্যাত গোপন কুঠুরি আয়নাঘরে মৃত্যুর প্রার্থনা!‌ ‘জয় বাংলা’ বললেই ভয়ংকর শাস্তির খাঁড়া, নজর ঘোরাতেই ইউনুসের নয়া চাল

চরম অরাজকতার পরিস্থিতি বাংলাদেশে। দেশের সর্বত্র নিপীড়িত হিন্দুরা। নিপাড়নের রাজত্ব চালাচ্ছেন নোবেলজয়ী ইউনুস। প্রশ্নও উঠেছে কীভাবে তিনি নোবেল জয় করতে পারেন। এতো হিংসার আশ্রয় যে শাসকের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছতে ব্যস্ত। একে একে সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মুজিবের স্মৃতি। ‘জয় বাংলা’ বললেই সাধারন মানু্ষের উপর নেমে আসছে ভয়ংকর শাস্তির খাঁড়া। এই সমস্ত অরাজকতার কর্মকাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতেই আয়নাঘরকে হাতিয়ার করতে চেষ্টা করছে ইউনুস সরকার? উঠছে নানাবিধ প্রশ্নও। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলের গোপন বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ নিয়ে বেশ উদগ্রীব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

শেখ হাসিনার ‘আয়নাঘর’। কৌতূহলের অন্ত নেই সাধারণ মানুষের। কুখ্যাত গোপন কুঠুরিতে বন্দিরা মুক্তি চাইতেন না। মৃত্যুর প্রার্থনা করতেন। বহু মানুষকে গুম করেও রাখা হত এখানে বলে কথিত। নানা বিতর্ক রয়েছে এই গোপন বন্দিশালা বা ‘গুমঘর’ নিয়ে। ঘনিয়েছে রহস্যও। গোপন বন্দিশালার বিভিন্ন ঘর, ইলেকট্রিক চেয়ার-সহ নানা জিনিসপত্র রয়েছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথাও শোনা যায়। জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সেসময় নাহিদ ইসলাম ও সজীব ভূঁইয়াকে সাদাপোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে গিয়ে রাখা হয় এই টর্চার সেলে। এখন সেই ঘরগুলো শনাক্ত করেন তাঁরা, যেখানে তাঁদের রাখা হয়েছিল। মুজিবকন্যার কুখ্যাত সেই আয়নাঘর সামনে নিয়ে আসার অন্তিম প্রচেষ্টায় রত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। ৫ আগস্ট হাসিনার দেশত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন অনেকেই। স্বপ্নেও কখনও ভাবেননি আবার কখনও মুক্ত পৃথিবীতে শ্বাস নেওয়ার আশায় নেমে আসতে চলেছে আরও এক যন্ত্রনা।

আয়নাঘর নিয়ে বিতর্কের পাশাপাশি অভিযোগ, হাসিনার আমলে কেউ সরকার বা আওয়ামি লিগের বিরোধিতা করলেই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হত। বন্দিশালায় ধৃত ব্যক্তিদের বিনা বিচারে দিনের পর দিন আটকে রাখা হত। বিভিন্ন রিপোর্ট মোতাবেক, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সরকারের বিরোধিতা করা অন্তত ৭০০ মানুষ স্রেফ গুম হয়ে যান। দাবি, বাস্তব সংখ্যাটা এর চেয়ে আরও বেশি। বাংলাদেশের মানুষ জানতেন গুম হয়ে যাওয়া সেই সব মানুষকে রাখা হয়েছে আয়না ঘরে। তবে কোথায় এই আয়না ঘর, সে বিষয়ে কোনও ধারণা ছিল না কারও। এ এক গোপন কুঠুরি। যেখানে একবার গেলে কেউ ফেরে না। আয়না ঘর বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর এক গোপন কুঠুরি। হাসিনা সরকারের বিরোধিতা বা সরকারের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে এমন ব্যক্তিদের অপহরণ করে নিরাপত্তা এজেন্সির লোকেরা। সাদা পোশাকে তাঁদের বাড়ি, অফিস, বাস, ট্রেন থেকে অপহরণ করে আনা হত। হাসিনা জমানায় বাংলাদেশের এই আয়না ঘর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রিপোর্টেও উল্লেখিত। রাষ্ট্রসংঘও এই আয়না ঘর নিয়ে সরকারকে সতর্ক করে।

এখান থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকের দাবি, যে ঘরে তাঁদের রাখা হত তাকে কবর বললেও কম বলা হয়। নড়াচড়ার জায়গা নেই এখানে। বন্দিদের নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হত। একইসঙ্গে চলত চরম শারীরিক নির্যাতন। চার থেকে ছয় মাস অন্তর চুল কাটা হত বন্দিদের। জেলের প্রতিটি ঘরের শেষে ছিল শৌচাগার। প্রত্যেক ঘরে থাকত বিরাট এক্সজস্ট ফ্যান। যার আওয়াজে বাইরের কোনও শব্দ শোনা যেত না। একজন মানুষকে উন্মাদ করে দেওয়ার জন্য সব রকম আয়োজনই ছিল এই জেল খানায়। হাসিনা সরকারের পতনের পর এই আয়নাঘর নিয়ে মানুষের কৌতূহল তুঙ্গে ওঠে। এবার প্রকাশ্যে আনা হল নানা ছবি। আয়নাঘর নিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে ইউনুস সরকার। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নজর ঘোরাতেই হাসিনার বন্দিশালা নিয়ে এত মাতামাতি করছেন ইউনুস। নির্বাচনের আগে এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে আওয়ামি লিগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করার চক্রান্তের ঘুঁটি সাজাচ্ছেন মহম্মদ ইউনুস।

অভিযোগ, তৎকালীন হাসিনা সরকারের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দিনের পর দিন আয়নাঘরে নির্মম অত্যাচারের শিকার হওয়া কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ইউনুস পরিদর্শন করেন গোপন বন্দিশালা ও টর্চার সেল বা নির্যাতনকেন্দ্র যা আয়নাঘর নামে পরিচিত। সঙ্গে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহম্মদ নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উপস্থিত গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য ও সাংবাদিকরাও। গোপন বন্দিশালাগুলো আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles