Sunday, June 8, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

‘এক্সোপ্ল্যানেট’ মহাজাগতিক? ছোট নক্ষত্রের কক্ষপথে বিশাল গ্রহের প্রদক্ষিণ

বিরাট এক গ্রহ চক্কর দিচ্ছে ছোট্ট এক সূর্যকে ঘিরে। চলছে গবেষণা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ছোট নক্ষত্রের কক্ষপথে বিশাল গ্রহের প্রদক্ষিণের ঘটনা খুবই বিরল। এক্সোপ্ল্যানেট। সৌরজগতের বাইরের সমস্ত গ্রহকে এই নামেই অভিহিত করা হয়। গ্রিসের মানুষ ওদের নাম দিয়েছিল ‘প্লানেট’ অর্থাৎ পরিব্রাজক। অন্তর্নিহিত অর্থকেই যেন সত্যি প্রমাণিত করে দিয়েছে পৃথিবী থেকে ২৪০ আলোকবর্ষ দূরের এক দানব গ্রহ। মহাজাগতিক অসঙ্গতির নজির তৈরি করে নিজের আয়তনের তুলনায় আনুপাতিক হিসেবে ক্ষুদ্র এক নক্ষত্রের কক্ষপথে নিরন্তর ঘুরে চলেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ছোট নক্ষত্রের কক্ষপথে বিশাল গ্রহের প্রদক্ষিণের ঘটনা খুবই বিরল। নবতম উদাহরণ ‘এক্সোপ্ল্যানেট’। আকারে তা আমাদের সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনির সমান। পৃথিবীর মতো কঠিন নয় মোটেই। আদতে জমাট ধূলিকণা এবং ঘনীভূত গ্যাসের পিণ্ড। অন্য দিকে, যে নক্ষত্রটিকে সে প্রদক্ষিণ করে চলেছে, সেই টিওয়াই-৬৮৯৪-এর ভর সূর্যের মাত্র এক পঞ্চমাংশ! আয়তনে আমাদের সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির তুলনায় সামান্য বড়। অন্য দিকে, সূর্যের আয়তন বৃহস্পতির ১০ গুণের চেয়েও বেশি! সাধারণ ভাবে এমন আয়তনের নক্ষত্রের উপগ্রহের আকার সৌরজগতের বুধ বা মঙ্গলের মতো হওয়া উচিত। মহাকর্ষজ বলের সাধারণ উদাহরণকে ভুল প্রমাণিত করেছে টিওয়াই-৬৮৯৪। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’ টেস-এর সন্ধানে ‘সিংহ ছায়াপথে’ মেলা এই নক্ষত্রটি মহাকাশবিজ্ঞানের ভাষায় ‘লাল বামন’। অর্থাৎ জ্বালানি ফুরিয়ে আসা নক্ষত্র। বস্তুত, এ যাবৎ কাল পর্যন্ত কোনও নক্ষত্র এবং তাকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের মধ্যে ভর ও আয়তনের এত সামান্য পার্থক্য খুঁজে পাননি মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এত ছোট নক্ষত্র কী ভাবে বিশাল এক গ্রহকে মহাকর্ষীয় বলের মাধ্যমে ধরে রাখতে পারে? নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে বুধবার প্রকাশিত গবেষণপত্রে প্রধান লেখক ইংল্যান্ডের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড ব্রায়ান্ট এবং তাঁর সহকারী ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের মুলার্ড স্পেস সায়েন্স ল্যাবরেটরির এক্সোপ্ল্যানেট বিজ্ঞানী ভিনসেন্ট ভ্যান আইলেন তারই সদুত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন। ব্রায়ান্ট বলেছেন, আমরা এখনও সন্দেহাতীত ভাবে এ ক্ষেত্রে কোনও ‘কারণ চিহ্নিত করতে পারিনি।’’ সম্ভবত নক্ষত্রজগতের উৎপত্তি এবং গ্রহের অবস্থানের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে রহস্য। ব্রায়ান্ট জানিয়েছেন, নক্ষত্রজগতের জন্মের সূচনা হয় গ্যাস এবং ধুলোর একটি বৃহৎ মেঘ দিয়ে। যাকে আণবিক মেঘ বলা হয়। যা তার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে ভেঙে প্রথমে একটি কেন্দ্রীয় নক্ষত্র তৈরি করে। যাকে বলে প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক। অবশিষ্ট উপাদানগুলি গ্রহ, গ্রহাণুপঞ্জ, উপগ্রহ ইত্যাদি তৈরি করে। স্বাভাবিক ভাবেই ছোট আণবিক মেঘগুলি ছোট নক্ষত্র তৈরি করে এবং ছোট প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কগুলিতে গ্রহ তৈরির জন্য কম উপাদান থাকে। বিশাল গ্রহ তৈরি করতে, দ্রুত একটি বৃহৎ গ্রহকেন্দ্র তৈরি করতে হবে এবং তার পরে দ্রুত সেই কেন্দ্রের উপরে প্রচুর গ্যাস জমা করতে হবে। কিন্তু নক্ষত্রটি জ্বলতে শুরু করার আগে এবং প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কটি অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে এই প্রক্রিয়ার জন্য খুব বেশি সময় থাকে না।’’ সাধারণ ভাবে ছোট নক্ষত্রগুলির ক্ষেত্রে, ডিস্কটি অদৃশ্য হওয়ার আগে দ্রুত ঘূর্ণায়মান কণাগুলি একটি বিশাল গ্রহ তৈরি করার জন্য পর্যাপ্ত ভর সংযোজিত করতে পারে না। কিন্তু পৃথিবী থেকে সূর্যের যা দূরত্ব, ‘লাল বামনে’র থেকে এই বিশাল গ্রহ রয়েছে তার ৪০ ভাগের এক ভাগ দূরত্বে। সেটি তিন দিনে প্রদক্ষিণ করে সূর্যের চেয়ে অনেক হালকা টিওয়াই-৬৮৯৪-কে। এই অবস্থানজনিত সুবিধার কারণে ক্ষুদ্রতম নক্ষত্রটি মহাকাশের অন্যতম বৃহৎ গ্রহ গঠনে সহায়ক হয়েছে বলে দুই বিজ্ঞানীর অনুমান।

সৌরজগতে আরও এক বামন গ্রহ আবিষ্কার! সূর্যের চার দিকে এক বার ঘুরতে সময় নেয় ২৪,০০০ বছর নতুন বামন গ্রহ আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছেন আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিহাও চেং ও তাঁর দুই ছাত্র। যদিও তিন জনের গবেষণার এই ফসল এখনও কোথাও প্রকাশিত হয়নি। তবে নবম গ্রহের অস্তিত্ব প্রমাণিত হলে হয়তো আবার নতুন করে লিখতে হবে ভূগোল, বিজ্ঞানের বই! সৌরজগতে মিলল নতুন বামন গ্রহের খোঁজ! এর আগে সৌরজগতের যেখানে শূন্যস্থান রয়েছে বলে মনে করা হত, সেখানেই এই নয়া মহাজাগতিক বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। নাম ‘২০১৭ ওএফ২০১’, বৈশিষ্ট্যের নিরিখে খতিয়ে দেখলে যাকে অনায়াসে প্লুটোর মতোই বামন গ্রহের তকমা দেওয়া যেতে পারে। ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’-এর একটি প্রতিবেদন থেকে। এ হেন আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিহাও চেং ও তাঁর দুই ছাত্র। যদিও তিন জনের গবেষণার এই ফসল এখনও কোথাও প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু এমনটা সত্যি হলে আবারও ভেঙে যেতে পারে সৌরজগতের প্রান্তে ‘নবম গ্রহ’ আবিষ্কার ২০১৭ ওএফ২০১ আকারে-আয়তনেও বিশেষ বড়সড় নয়। ব্যাস মাত্র ৪০৩ মাইল প্রায় ৬৯২ কিলোমিটার। উপবৃত্তাকার কক্ষপথ ধরে সূর্যের চারপাশে এক বার পরিক্রমা করতেই খুদে এই বামন গ্রহের সময় লেগে যায় ২৪,০০০ বছরেরও বেশি! যেখানে সৌরজগতের শেষ গ্রহ নেপচুনই রয়েছে সূর্য থেকে প্রায় ৪৪৭ কোটি কিলোমিটার দূরে, সেখানে খুদে এই বামন গ্রহের সূর্য থেকে দূরত্ব ৬৭৬ কোটি কিলোমিটারেরও বেশি। ১৯৩০ সালে ‘২০১৭ ওএফ২০১’ শেষ বার সূর্যের সবচেয়ে কাছে এসেছিল, কাকতালীয় ভাবে সে বছরই প্লুটো আবিষ্কৃত হয়েছিল! এর পর সুদূর ২৬১৮৬ সালের আগে আর এত কাছ থেকে দেখা যাবে না এই গ্রহকে। নয়া বামন গ্রহের আবিষ্কারক তথা প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির গবেষক চেংয়ের কথায়, ‘‘সূর্যের একেবারে শেষ দিকের কক্ষপথে একটি বেশ বড়সড় ট্রান্স-নেপচুনিয়ান বস্তু আবিষ্কার করেছি আমরা।’’ আবিষ্কারের কৃতিত্ব অবশ্য চেংয়ের একার নয়। চেংয়েরই দুই গবেষক ছাত্র জিয়াক্সুয়ান লি এবং এরিটাস ইয়াং-ও রয়েছেন এই গবেষণার নেপথ্যে। এ জন্য দীর্ঘ সাত বছর ধরে চিলি ও হাওয়াইয়ের বিভিন্ন মানমন্দির থেকে টেলিস্কোপে আকাশের দিকে চোখ রাখতে হয়েছে তাঁদের। গবেষণার ফলাফল এখনও পর্যন্ত কোনও তাবড় ‘পিয়ার-রিভিউড’ জার্নালে না বেরোলেও এই আবিষ্কার যে নেহাত হেলাফেলার নয়, তা বুঝছেন সকলেই। এই মুহূর্তে সৌরজগতে জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়নের স্বীকৃত পাঁচটি বামন গ্রহ রয়েছে। এগুলি হল প্লুটো, এরিস, সেরেস, হুমিয়া এবং মেকমেক। এদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম সেরেস। আর সবচেয়ে বড়টির নাম প্লুটো। এই সেই প্লুটো, যে গ্রহের মর্যাদা হারিয়েছিল আজ থেকে প্রায় ১৯ বছর আগে! নতুন করে লিখতে হয়েছিল ভূগোলের বই। নতুন এই বামন গ্রহ আকারে প্লুটো, সেরেসদের চেয়েও বেশ কিছুটা ছোট। তবে বহু দূরে থাকার কারণে এর গঠন ঠিক কী রকম, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এটুকু নিশ্চিত যে, খুদে হলেও ‘২০১৭ ওএফ২০১’-এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বেশি, ফলে গোটা ভরকে গোলাকার আকৃতিতে ধরে রাখার ক্ষমতাও রয়েছে যা ‘বামন গ্রহ’ হয়ে ওঠার প্রাথমিক মানদণ্ড। ‘বামন গ্রহ’ নিয়ে ঝঞ্ঝাট বেশ পুরনো। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ গ্রহের তালিকা থেকে প্লুটোকে বাদ দিয়ে এই বিভাগটি তৈরি করেছিল। কারণ, গ্রহদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম বুধ কিংবা পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদের চেয়েও আকারে ছোট প্লুটো। তার উপর আবার নিজের উপগ্রহও রয়েছে তার, যে কিনা আকারে প্লুটোর অর্ধেক! অথচ সৌর পরিবারে অন্য গ্রহগুলির উপগ্রহেরা তাদের ব্যাসের একশো ভাগের এক ভাগ মাপের। এ হেন দলছুট প্লুটোকে গ্রহের পর্যায়ে ফেলতে রাজি হননি কেউই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনও মহাজাগতিক বস্তুকে ‘গ্রহ’ হয়ে উঠতে গেলে তিনটি শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন। এক, নক্ষত্রের চারদিকে ঘুরতে হবে তাকে। দুই, মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে মোটামুটি গোলাকার চেহারা থাকতে হবে তার। তিন, মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবেই কক্ষপথের আশপাশে থাকা ছোট ছোট বস্তুকে নিজের দেহে মিশিয়ে নিয়ে ‘পথের কাঁটা’ সরিয়ে এগোতে হবে তাকে। প্লুটো তৃতীয় শর্ত পূরণে অক্ষম, ফলে গ্রহের তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে সে। তা হলে ‘২০১৭ ওএফ২০১’-এর বেলাতেই বা নিয়মের নড়চড় হয় কী করে? তাই প্লুটোরই মতো বাদ পড়বে সে-ও। ঠাঁই পাবে বামন গ্রহদের তালিকায়।

গত বছর ক্যালিফর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ক্যালটেক)-র জ্যোতির্বিদ মাইক ব্রাউনের বক্তৃতা শোনার পর থেকেই সৌরজগতের ‘অতি দূরবর্তী অঞ্চলের’ অজানা রহস্য ভাবিয়ে তুলেছিল চেংকে। সে-ই শুরু। তার পর থেকে ‘প্ল্যানেট নাইন’-এর খোঁজে গবেষণা নিয়েই পড়ে থেকেছেন তিনি ও তাঁর দুই ছাত্র। সেই কোন ২০০৫ সালে এই মাইক ব্রাউন প্লুটোর চেয়েও দূরে প্লুটোরই আকারের একটি বিশ্ব আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন, নাম দিয়েছিলেন ‘এরিস’! তখনও প্লুটো গ্রহের সংজ্ঞা খোয়ায়নি। কিন্তু সে যদি গ্রহ হয়, তা হলে এরিস কেন নয়? তখনই তো প্লুটোর গ্রহ হওয়া নিয়ে ধন্দ শুরু! তারও আগে অবশ্য ২০০৩ সালে ব্রাউন খুঁজে পেয়েছিলেন ‘সেডনা’কে। নেপচুনের কক্ষপথ থেকে অনেক দূরে থাকা এই বামন গ্রহ আড়েবহরে ছিল ৭০০ মাইলেরও বেশি প্রশস্ত। বছরের পর বছর ধরে এ রকমই আরও নানা মহাজাগতিক বস্তু মহাকাশবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, কখনও কখনও যাদের ‘ট্রান্স-নেপচুনিয়ান বস্তু’ও বলা হয়। ব্রাউনের মতে, এদের মতো প্রায় ১০০টিরও বেশি মহাজাগতিক বস্তু বামন গ্রহের তকমা পাওয়ার সম্ভাবনা রাখে, কেবলমাত্র গোলাকৃতি হওয়ার শর্ত তারা পূরণ করছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ মিললেই কেল্লাফতে।
ক্যালটেকের গবেষক ব্রাউন এবং আর এক জ্যোতির্বিদ কনস্টান্টিন ব্যাটিগিনের দাবি, এই বামন গ্রহগুলির প্রত্যেকের কক্ষপথ একটি নির্দিষ্ট দিকে হেলানো। ফলে পৃথিবীর চেয়ে কয়েক গুণ বড় কোনও অদৃশ্য গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ যে এদের টানছে , সেই সম্ভাবনা নেহাত উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিজ্ঞানীরা এই অনাবিষ্কৃত গ্রহেরই নাম দিয়েছিলেন ‘প্ল্যানেট নাইন’, অর্থাৎ নবম গ্রহ। অথচ, নিউটন-কেপলারের সূত্র বলছে, নবম গ্রহের অস্তিত্ব থাকলে ‘২০১৭ ওএফ২০১’ যেখানে রয়েছে, সেখানে তার থাকার কথা নয়। আর যেহেতু ‘২০১৭ ওএফ২০১’ দিব্যি সশরীরে রয়েছে, ফলে নবম গ্রহ না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তবু নতুন গ্রহের খোঁজে চেংয়ের মতো অধীর আগ্রহে আজও দিনরাত এক করে গবেষণা করছেন বিশ্বের তাবড় মহাকাশ গবেষকেরা। অপেক্ষায় বিশ্বও। কারণ, নবম গ্রহের অস্তিত্ব প্রমাণিত হলে হয়তো আবার নতুন করে লিখতে হবে ভূগোল, বিজ্ঞানের বই! প্রতি ৪৪ মিনিট অন্তর পৃথিবীতে পাঠানো হচ্ছে রেডিয়ো এবং এক্স-রে সঙ্কেত! সম্প্রতি এমন আবিষ্কারে চক্ষু চড়কগাছ বিজ্ঞানীদের। সেই সূত্র ধরেই খোঁজ মিলেছে রহস্যময় এক মহাজাগতিক বস্তুর, যা আবিষ্কার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ওই মহাজাগতিক বস্তুর নাম ‘এএসকেএপি জে১৮৩২-০৯১১’। যা থেকে প্রতি ৪৪ মিনিট অন্তর রেডিয়ো এবং এক্স-রে ‘বার্তা’ পাঠানো হচ্ছে। এর আগে এমন ঘটনা কখনও দেখা যায়নি। ‘অস্ট্রেলিয়ান স্কয়্যার কিলোমিটার অ্যারে পাথফাইন্ডার’ (এএসকেএপি) এবং মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার শক্তিশালী চন্দ্র এক্স-রে মানমন্দিরে এই আবিষ্কার করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ওই মহাজাগতিক বস্তু থেকে পৃথিবীতে পাঠানো সঙ্কেতগুলি প্রতিটি ঠিক দু’মিনিট স্থায়ী হয়, এবং নির্দিষ্ট বিরতির পর পুনরায় একই সঙ্কেত পাঠানো হয়। এই আচরণকে বিরল বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ, ফলে এই আবিষ্কার মৃত নক্ষত্রের বিবর্তন এবং জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার নানা অজানা সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ‘এএসকেএপি জে১৮৩২-০৯১১’ কোনও পরিচিত নক্ষত্র বা পালসারের মতো আচরণ করে না। সাধারণ পালসারগুলি থেকে যে ‘পালস’ বা স্পন্দন নির্গত হয়, সেগুলি কয়েক মিলিসেকেন্ড বা কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কিন্তু ‘এএসকেএপি জে১৮৩২-০৯১১’ দীর্ঘ সময় ধরে, নির্দিষ্ট ব্যবধানে সঙ্কেত পাঠাচ্ছে, যা ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, ‘এএসকেএপি জে১৮৩২-০৯১১’ কোনও মৃত নক্ষত্রের চৌম্বকীয় অবশিষ্টাংশ হতে পারে। কোন যুক্তিতে ঠিক ৪৪ মিনিট অন্তর তা থেকে সঙ্কেত পৃথিবীতে এসে পৌঁছচ্ছে, গবেষণা নিরন্তর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles