ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে! সময়টি এখন দুর্যোগের। প্রকৃতি যেন ঘন ঘন বৈরী হয়ে উঠছে। এসবের জন্য মানুষের অনাচার দায়ী। প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ এক ভয়ংকর সংকটে পরিণত হয়েছে। শত শত বছরেও মাটিতে মিশে না গিয়ে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সংকটের প্রভাব স্পষ্ট। সচেতনতার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয়ভাবে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জনের প্রচার প্রয়োজন। প্লাস্টিকের টুকরোগুলো নদীতে পড়ে। মাছের খাদ্যে পরিণত হয়। এই মাছ মানুষের খাদ্য হয়ে আবার শরীরে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা মাইক্রোপ্লাস্টিক মানুষের রক্তে প্রবেশ করে। ক্যানসারসহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। পৃথিবীর বাতাস, জল ও মাটি আজ ভয়াবহ দূষণের শিকার। শিল্পায়ন, নগরায়ন ও মানুষের অসচেতনতা এই দূষণকে আরও ত্বরান্বিত করছে। আগে নদীতে মাছের খুব অভাব ছিল না। এখন প্লাস্টিক আর পলিথিনে নদী ভরে গেছে। জাল ফেললেই মাছের বদলে এসব বর্জ্য উঠে আসে। এগুলোর কারণে মাছও মরছে, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। জমিতে আগের মতো ফসল হয় না। বাজারের পলিথিন মাটিতে মিশে গিয়ে জমির উর্বরতা কমিয়ে দিচ্ছে। মাটিতে জলের শোষন আটকে যাচ্ছে, শিকড় ঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারছে না। উপকূলীয় অঞ্চল, নদ-নদী এবং সমুদ্রনির্ভর অর্থনীতি মূলত মৎস্য শিকার ও কৃষির ওপর দাঁড়িয়ে। প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল বাস্তুসংস্থান হুমকির মুখে।পলিথিন নদীতে পড়ে মাছের জন্য বিপদ। প্লাস্টিক ভেঙে ছোট ছোট টুকরোয় পরিণত হয়, যা মাছ খেয়ে ফেলে। এই দূষণ রোধ না করলে ভবিষ্যতে উপকূলের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। পলিথিনমুক্ত পরিবেশ গড়া সম্ভব। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পেইন এবং প্লাস্টিকমুক্ত পাথরঘাটা গড়তে নিয়মিত প্রচার দরকার। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে হবে। পাট,কাপড়, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। পরিবেশবান্ধব শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্লাস্টিক বর্জন নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে হবে। উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের জন্য পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে।

প্লাস্টিক দূষণ শুধু একক কোনো এলাকার সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সংকট। ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব। সচেতন মানুষদের পাশে দাঁড়ালে এবং সবাই মিলে প্লাস্টিকমুক্ত জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তুললে হয়তো আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে পারবো।অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ, পরিবেশ দূষণ ও পাপাচারের ফলে মানুষই প্রকৃতিকে বৈরী করেছে। প্রকৃতি নিজে কোনো বুদ্ধিমান চিন্তাশীল সত্তা নয়। প্রকৃতি যেসব মানুষ প্রকৃতিকে স্বয়ংক্রিয় একটি ব্যবস্থা বলে মনে করে মূলত মহাসত্যকে অস্বীকার করে।বিশ্বব্যাপী চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। অর্ধেক পৃথিবী এতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। গত প্রায় তিন বছর মানুষ করোনা নিয়ে অস্থির ছিল। বেশ কিছুদিন পৃথিবীর মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত ছিল। মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছিল। অজানা আশঙ্কায় তারা ছিল চরম সন্ত্রস্ত। বর্তমানে তারা সূর্যের প্রখর তাপে অতিষ্ঠ। এখানে মানুষ সম্পূর্ণ অসহায়। বিশ্বের সব মানুষ সম্মিলিতভাবে আত্মহত্যার পথে এগিয়ে চলেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহারে নিজেদের সামর্থ্যের ভেতর মানুষ কিছু করতে পারে। পরিবেশ ও প্রকৃতি মনুষ্য বসবাসের উপযোগী রাখার জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। নাসা একটি গ্রাফিক্সচিত্র প্রকাশ করেছে। এতে সারা পৃথিবীর ওপর বয়ে যাওয়া অভিনব ও অস্বাভাবিক দাবদাহের একটি দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। ৩৬ ডিগ্রি থেকে তাপ যেন নামছেই না। মানবদেহে অনুভূত হচ্ছে এরচেয়েও বেশি। আমেরিকার অনেকগুলো রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি। শীতের দেশ পর্তুগাল, স্পেন ও ফ্রান্সে নজিরবিহীন গরম। তিন শতাধিক মানুষ এ পর্যন্ত মারা গেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে জনজীবন বিপর্যস্ত। অনেক দেশে দাবানল। বাড়িঘর চলন্ত ট্রেনে দাবানল এসে পৌঁছে যাচ্ছে। নিউইয়র্কে বন্যায় মানুষ বুক জল। বহু রাজ্যে ঝড় জলোচ্ছ্বাস। অনেক রাজ্যে দাবদাহ। মূলত সাগরের অভ্যন্তরে ভয়াবহ পরিবর্তনের ফল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের তাপ ও পৃথিবীর উষ্ণতা প্রাকৃতিক বাধা সরে গিয়ে সরাসরি জল ও স্থলে পড়ছে। সমুদ্র স্বাভাবিক যে স্রোতধারা বহন করে তা ধীরে ধীরে গতি হারাচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণে পৃথিবীর জলভাগ প্রকৃতির নিয়মে আন্দোলিত হয়। এই স্রোতধারা সমুদ্রকে জীবন্ত ও পরিবেশকে সচল রাখে।

সাগরের উপরস্থ গরম জল যে স্রোত নিচে নিয়ে যায় আবার নিচের ঠাণ্ডা জল সাগরের উপরিভাগে টেনে আনে সে স্রোত যথানিয়মে ওঠানামা করছে না। এর ফলেই ভয়াবহ এই বিপর্যয়। এমন দাবদাহ। বেশ কয়েক বছর আগে ভূমধ্য সাগর থেকে আটলান্টিকে এবং ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত উপর নিচ বা উত্তরে দক্ষিণে যে বাতাস প্রবাহের ফলে সাগরের গভীরে স্রোতের ধারা বইত, তা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হতে চলেছে। বহু আগেই প্রকৃতির যে অদ্ভুত আন্দোলনের আবহমান স্রোতধারা বিঘ্নিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই ওয়েভ বিঘ্নিত হলে পৃথিবী প্রাণী বসবাসের উপযোগী থাকবে না। সম্পূর্ণ থেমে গেলে গোটা বিশ্বপ্রকৃতি শেষ হয়ে যাবে। সমুদ্রের এই স্বভাব পরিবর্তনের প্রতিও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। অর্থাৎ মানুষের অত্যাচার অনাচারের ফলেই সাগরে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভূমিধস, ভূমিকম্প, আগুন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অধিক সংখ্যায় সংঘটিত হতে থাকবে। মানুষের তৈরি উষ্ণতা, বিষাক্ত গ্যাস, সীমাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ ও জলবায়ুবিনাশী নানা সীমালঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া পরিবেশে দেখা যাচ্ছে।

এক গবেষণায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আশ্চর্য বিষয় প্রকাশ করেছেন। পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে বিশাল হিমবাহ-চালিত ভূমিধসের কারণে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। ৯ দিন যাবত প্রতি ৯০ সেকেন্ডে পৃথিবী কাঁপছিল। ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করে তুলেছিল বিস্ময়কর ভূমিকম্পের ঘটনাটি। অবশেষে প্রায় দুই বছর পর ব্যাখ্যা মিলল। টানা নয় দিন ধরে পৃথিবীতে ছন্দবদ্ধ কম্পন রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতি ৯০ সেকেন্ডে ঘড়ির কাঁটার মতো সঞ্চরণ ঘটেছে। সেটি ভূমিকম্পের মতো হলেও আদত ভূমিকম্প নয়। কিন্তু কোনও আপাত কেন্দ্রস্থল, কোনও আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ, বা কোনও দৃশ্যমান প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছিল না। এখনও পর্যন্ত এটি কেবল একটি বৈজ্ঞানিক রহস্য ছিল। নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তা প্রকাশ করলেন। পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে হিমবাহ-চালিত বিশাল ভূমিধসের কারণে এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি ঘটেছে। তার ফলে ৬৫০ ফুট পর্যন্ত উঁচু ঢেউ-সহ একটি বিশাল সুনামি সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম এটি দেখা যায় । এই অদ্ভুত ভূমিকম্পের সংকেতগুলি বিশ্বব্যাপী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। এটি কম্পনের স্বাক্ষর বহন করে ।কিন্তু সাধারণত এই ধরণের কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও পূর্বসূরী ঘটনা ছাড়াই এসেছিল। কোনও টেকটনিক পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা গ্রহাণুর প্রভাব নয়। এমনকী স্যাটেলাইট সিস্টেমগুলিও সেই সময়ে সূত্র শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য না পেয়ে, রহস্যটি আড়াল হয়ে যায়। যতক্ষণ না উন্নত স্যাটেলাইট তথ্য এবং পূর্ববর্তী বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই সাফল্য আসে। অক্সফোর্ডের গবেষণা অনুসারে, পূর্ব গ্রিনল্যান্ডের প্রত্যন্ত ডিকসন ফজর্ডে আকস্মিক, বিপর্যয়কর ভূমিধস এর জন্য দায়ী । দ্রুত গলে যাওয়া পার্মাফ্রস্টের কারণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়া ২৫ মিলিয়ন ঘনমিটার পাথর আর হিমবাহের বরফ সমুদ্রে ধসে পড়ে। এই আঘাতের ফলে বিপুল পরিমাণ জল স্থানচ্যুত হয়। যার ফলে “সিচে” নামে পরিচিত একটি ঘটনা ঘটে। তা হলো এক শক্তিশালী, ঢেউ খেলানো, বাথটাবের মতো জলের গতি, যা ফজর্ডের মতো একটি সরু অংশে আটকে থাকে। নাসা এবং ফ্রান্সের সিএনইএস কর্তৃক উৎক্ষেপিত SWOT (সারফেস ওয়াটার অ্যান্ড ওশান টপোগ্রাফি) উপগ্রহে প্রবেশ করে। SWOT-তে কা বান্ড রাডার ইন্টারফেরোমিটার (KaRIn) নামে একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র রয়েছে। সেটা অভূতপূর্ব নির্ভুলতার সঙ্গে জলের পৃষ্ঠতলের মানচিত্র তৈরির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ফিজর্ডের মতো সংকীর্ণ চ্যানেলে জলের উচ্চতা পরিমাপ করতে লড়াই করে এমন পুরানো উপগ্রহগুলির বিপরীতে, KaRIn প্রযুক্তি অসাধারণ ছিল। SWOT তথ্য ব্যবহার করে, বিজ্ঞানীরা সূক্ষ্ম কিন্তু স্পষ্ট লক্ষণগুলি লক্ষ্য করেছেন। ফোজর্ড এর উভয় পাশের জমি বিপরীত দিকে সরে যাচ্ছে বলে মনে হয়েছে।যখন এই তথ্য ভূমি-ভিত্তিক ভূমিকম্পের রেকর্ডিং এবং জোয়ারের রিডিংয়ের সাথে মিলে যায়, তখন ছবিটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অক্সফোর্ড গবেষণার প্রধান লেখক অধ্যাপক থমাস অ্যাডকক এই আবিষ্কারকে প্রসংশা করেছেন। তিনি বলেন, “পরবর্তী প্রজন্মের উপগ্রহ প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের গ্রহকে গঠনকারী লুকানো শক্তিগুলি বোঝার জন্য সক্ষম করছে তার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো এটা।” দুই বছরের পুরনো রহস্য সমাধানের বাইরেও, এই গবেষণাটি গুরুতর সতর্কীকরণ বহন করে। এটি ব্যাখ্যা করে যে হিমবাহের গলে যাওয়া – জলবায়ু পরিবর্তনের একটি লক্ষণ – কেবল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিই নয়, বিশ্বব্যাপী অনুরণনের সাথে সাথে বিশাল ভূতাত্ত্বিক ঘটনাও ঘটাতে পারে। পৃথিবীর হিমায়িত সীমানা গলতে থাকায় ভূমিধস, মেগা-সুনামি এবং সংশ্লিষ্ট ভূমিকম্পের ব্যাঘাত ক্রমশ সাধারণ হয়ে উঠতে পারে।

সম্প্রতি তাসমানিয়াতে নতুন করে ছড়ায় আতঙ্ক। সেখানে সমুদ্রতীরে ভেসে উঠল মৃত্যুর মাছ। এই মাছ দেখার পরই গোটা এলাকায় শুরু হয়েছে আতঙ্ক। কেন গভীর জলের এই মাছ ফের একবার সকলের নজরে এল তা নিয়ে চিন্তায় গবেষক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী সকলেই। ওরাফিস হল সমুদ্রের একেবারে তলায় বাস করা সেই বড় মাছ যাকে সকলে ওপরে দেখা যায় না। এটি ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। একে সকলে মৃত্যুর মাছ বলেও ডাকে। এর দেখা মেলার অর্থ হল বিরাট কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দেখা মিলতে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সমুদ্রের ধারে ঘুরছিলেন। সেখানেই তিনি এই বিশাল আকারের মাছটিকে মৃত অবস্থায় দেখেন। বেশ কয়েকটি সামুদ্রিক ইগল পাখি একে খাওয়ার জন্য ঘুরছিল। তবে তারা সেগুলিকে তাড়িয়ে দিয়ে মাছটিকে নিয়ে যান। মাছটিকে দেখে বোঝা গিয়েছিল সেটি জলের অনেক গভীর থেকে উঠে এসেছে। তার গায়ে অনেকগুলি ক্ষতচিহ্ন ছিল। একজন বলেন এটি আকারে ছিল প্রায় ৯ ফুটের সমান। এবার এর দেখা মিলেছে। ফলে সেখান থেকে ফের কোনও বড় বিপর্যয় নামতে চলেছে। এই মাছের ছবি তাসমানিয়ার সামাজিক মাধ্যমে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সকলেই এটিকে একটি খারাপ দিক হিসেবে দেখছেন। আবার অনেকে এই ছবিকে দেখে নিজেদের মতো করে নানা ধরণের কাহিনী তৈরি করছেন। তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জানিয়েছেন, এই ধরণের মাছ সমুদ্রের অনেক গভীরে বাস করে। এরা জলের নিচে ১৫০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরে নিজেদের বংশবিস্তার করে থাকে। ফলে এদেরকে সহজে ধরা যায় না। জেলের জালেও এদের সহজে দেখা যায় না। তবে এমন একটি মাছের দেখা মেলাতে তারা খুবই অবাক হয়েছেন। ওরাফিস সমুদ্রের একটি বিরাট মাছ। এটি ওজনে প্রায় ৪০০ কেজি। এটি সমুদ্রের অন্যতম একটি কুঁড়ে মাছ বলে পরিচিত। জলের নিচে এরা ধীরে ধীরে চলাচল করে থাকে। এরা নানা ধরণের জলের গাছ খেয়েই বেঁচে থাকে। এই ধরণের মাছের দেখা মেলাতে সকলেই ভীত। এদের দেখার অর্থ হল বিরাট কোনও বিপদ ঘটতে চলেছে। ফলে সেখান থেকে এবার কীভাবে বাঁচতে হবে সেদিকেই সকলের নজর থাকবে। এবার কী আসছে প্রলয়?

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য পরিবেশ রক্ষা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন ও সজাগ করা। প্রকৃতি ছাড়া মানুষের জীবন সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে গাছ, গাছপালা, বন, নদী, হ্রদ, জমি, পাহাড়ের গুরুত্ব বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭২ সালে ইউনাইটেড নেশনসের সাধারণ পরিষদ আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ সম্মেলনে আলোচনার পর এই দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৯৭৪ সালের ৫ জুন প্রথম বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলে পরিবেশ রক্ষা সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করার জন্য নানা ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রবন্ধ, বক্তৃতা, পোস্টার প্রতিযোগিতা হয়। প্রতি বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের একটি বিশেষ প্রতিপাদ্য বা থিম থাকে। এই বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, দেশে নিষিদ্ধ একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিবেশগত বিকল্প নিয়ে অনেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল মরুকরণ এবং খরার সমস্যা মোকাবেলা। ২০২৩ সালেও প্রতিপাদ্য ছিল প্লাস্টিক দূষণের সমাধান। নির্বিচারে গাছ কাটা এবং দূষণ বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দূষিত বাতাস মানুষের শ্বাসরোধ করছে। খারাপ পরিবেশের কারণে শহরগুলিতে অনেক মানুষ শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ এবং ফুসফুসের রোগে ভুগছে। আমাদের বুঝতে হবে যে সমগ্র মানবজাতির অস্তিত্ব প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। অতএব, একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া মানব সমাজের কল্পনা অসম্পূর্ণ। মানব জীবন কেবল পৃথিবীতেই সম্ভব, তাই এটিকে বাসযোগ্য রাখা আমাদের দায়িত্ব। প্লাস্টিক দূষণ আমাদের গ্রহের মুখোমুখি তিনটি হুমকি জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং দূষণ। প্রতি বছর ১ কোটি ১০ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জল বাস্তুতন্ত্রকে দূষিত করে। শপথ নিতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার বন্ধ। কাগজ বা কাপড়ের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার। প্রতি বছর কমপক্ষে একটি গাছ লাগাতে হবে। পুকুর, নদী, পুকুর দূষিত করা যাবে না। জলের অপব্যবহার না। অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার না। ব্যবহারের পর বাল্ব, পাখা বা অন্যান্য সরঞ্জাম বন্ধ রাখতে হবে।কাছাকাছি কাজের জন্য সাইকেলের ব্যবহার।