Thursday, June 5, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

আঠারোয় স্বপ্নপূরণ কোহলির!‌ প্রথম বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু, দুই দলের হয়ে ট্রফি জেতার রেকর্ড অধরা শ্রেয়সের! আইপিএল ফাইনালের দিনে বৃষ্টি কলকাতায়! ইডেন নিয়ে রাজনীতিতে ধর্মের কল নাড়া দিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী

১৮ তে ১৮। আইপিএলের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বছরই খরা কাটল বিরাট কোহলির। ১৮ বছর অপেক্ষার পর চ্যাম্পিয়ন হলেন ১৮ নম্বর জার্সিধারী। অবশেষে আইপিএল জিতল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।‌ চতুর্থ প্রচেষ্টায়। ২০১৬ সালে কোহলির নেতৃত্বে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। কিন্তু তরুণ অধিনায়ক রজত পতিদারের অধিনায়কত্বে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু। অবশেষে কোহলির ক্যাবিনেটে জায়গা পেল আইপিএল ট্রফি। এদিন সর্বোচ্চ রান বিরাটেরই ৪৩। ব্যাক টু ব্যাক কোটিপতি লিগ জেতার রেকর্ড অধরা কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্রাত্য অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তোলে আরসিবি। জবাবে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৮৪ রানে থামে পাঞ্জাব কিংস। ৬ রানে জেতে আরসিবি।

আইপিএল ফাইনাল। কলকাতায় বৃষ্টি হয়নি। আইপিএল ফাইনালের দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার কথা ছিল কলকাতার। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার এবং ফাইনাল কলকাতা থেকে সরিয়ে আহমদাবাদে নিয়ে গিয়েছে বিসিসিআই। গত রবিবারও কলকাতায় বৃষ্টি হয়নি। ১৫ আগেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অর্থাৎ বিসিসিআই কর্তারা। এই আশঙ্কায় আইপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার এবং ফাইনাল ইডেন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আহমদাবাদে। প্রথম কোয়ালিফায়ারের দিন কলকাতায় বৃষ্টি হয়নি। মঙ্গলবার ফাইনালের দিনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, শুষ্ক পশ্চিমি বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। গরম এবং আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি ও সকাল থেকেই কলকাতায় কাঠফাটা রোদ। দিল্লির মৌসম ভবন বলছে, মঙ্গলবার আহমদাবাদে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দিনই সেখানকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। অর্থাৎ, ফাইনাল বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। এ দিন দুপুরেও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে আহমদাবাদে। বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেছিলেন, “আইপিএলের মাঠ বদলানোর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। আইপিএল এক সপ্তাহ বন্ধ না থাকলে প্রথম সূচি অনুযায়ীই ম্যাচ হত। তখন ফাইনাল কলকাতায় এবং বাকি দুটো প্লে-অফ হায়দরাবাদে হত। সূচি বদলে যাওয়ার পর আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলও চাইছিল মাঠ বদলাতে।” বিসিসিআই কলকাতা থেকে ম্যাচ সরিয়ে দেওয়ার পরই রাজনীতির অভিযোগ তুলে আবার সরব রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে। শুধু তাই নয়, সেই বঞ্চনার পাশাপাশি আইপিএলের বড় ম্যাচ নিয়েও রাজনীতি করে বাংলা তথা কলকাতাকে বঞ্চিত করল। কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। বিসিসিআই আমেরিকার আবহবিদদের কথা বিশ্বাস করে ভারতীয় আবহাওয়াবিদ ও বিজ্ঞানীদের অপমান করেছে।”

দেশাত্মবোধক গানে মুখরিত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। জমজমাট টুর্নামেন্টে প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি দুই দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাব কিংস আগে কখনও ট্রফি হাতে তোলেনি। ফাইনালের আগে জমকালো সমাপ্তি অনুষ্ঠান। সেনাকে অনন্য সম্মান জানানো হল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। দেশাত্মবোধক গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠ। জায়ান্ট স্ক্রিনে সেনা সংক্রান্ত একটি ভিডিও-ও দেখানো হয়। শংকর মহাদেবন দুই ছেলে সিদ্ধার্থ এবং শিবমকে নিয়ে একের পর এক দেশভক্তিমূলক গান শোনা যায় গায়কের গলায়। অপারেশন সিঁদুরের পর দেশাত্মবোধের ছোঁয়া আইপিএল ফাইনালেই। আহমেদাবাদের আকাশে হল সেনা শক্তি প্রদর্শন। জাতীয় পতাকা ওড়ালেন দর্শকরা।

অপারেশন সিঁদুরের পর দেশাত্মবোধের ছোঁয়া আইপিএল ফাইনালেই। আহমেদাবাদের আকাশে হল সেনা শক্তি প্রদর্শন। জাতীয় পতাকা ওড়ালেন দর্শকরা। ‘বন্দেমাতরম’ থেকে ‘হাম হ্যায় হিন্দুস্তানি’, প্রায় ১০টি গান গেয়েছেন দুই ছেলেকে নিয়ে শঙ্কর মহাদেবন। আহমদাবাদে সকাল থেকে আকাশ পরিষ্কার ছিল। মাঝে দুপুরের দিকে একটু বৃষ্টি হয়। তার পর আবার রোদ ওঠে। দুপুর থেকেই দলে দলে সমর্থকেরা স্টেডিয়ামের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। সংখ্যায় টেক্কা দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর সমর্থকেরা। আকাশ পরিষ্কার থাকার কারণে সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও কোনও সমস্যা হয়নি। নির্বিঘ্নেই হয়েছে।

আইপিএল ফাইনালের প্রথম বল গড়ানোর আগেই উত্তেজনায় ফুটন্ত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। টসে জিতে বেঙ্গালুরুকে ব্যাট করতে পাঠান শ্রেয়স।‌ প্রশংসা করতেই হবে পাঞ্জাবের অধিনায়কের। বুদ্ধিদীপ্ত দল পরিচালনা। পার্টনারশিপ গড়তে দেননি। প্রতিনিয়ত উইকেট তুলে নেয় পাঞ্জাব। পাওয়ার প্লের ফায়দা তুলতে পারেনি ফিল সল্ট, বিরাট কোহলি জুটি। ৬ ওভারের শেষে ১ উইকেট হারিয়ে আরসিবির রান ছিল ৫১। প্রথম ওভারেই ছয়, চার হাঁকিয়ে শুরু করেন সল্ট। কিন্তু দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে তাঁকে ফেরান শ্রেয়স। ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। এক উইকেট হারানো সত্ত্বেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় কোহলি এবং মায়াঙ্ক আগরওয়াল। কিন্তু বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেনি। ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায় আউট হন মায়াঙ্ক।‌ উইকেটে টিকে থাকলেও চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি বিরাটকে। মন্থর ক্রিকেট খেলেন। একটা দিক ধরে রাখার চেষ্টা করেন। অন্য প্রান্তে শুরুটা ভাল করেও অল্প রানের মধ্যে ফিরে যান রজত পতিদার। ১৬ বলে ২৬ রান করে আউট হন। বিরাট কোহলি মাঠে পা রাখা মাত্র উন্মত্ত হয়ে যায় স্টেডিয়াম।

ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপ সারতে তারকা ক্রিকেটার মাঠে প্রবেশ করা মাত্র চিৎকারে ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম। তখনও মাঠ ভরেনি। কিন্তু পরিবেশ তেতে ছিল। কোহলি, কোহলি ধ্বনিতে ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম। কোহলি অর্ধশতরানের আগেই আউট হন। ৩৫ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন কোহলি। মাত্র ৩টে চার মারেন। ১৫ ওভার পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর রানের গতি অত্যন্ত মন্থর ছিল। জীতেশ নামার পর রানের গতি বাড়ে। ১৭তম ওভারে জেমিসনের বলে ২৩ রান নেয় বেঙ্গালুরু। তবে এদিন বড় পার্টনারশিপ গড়তে পারেনি আরসিবি। প্রতিনিয়ত উইকেট হারায়। শুরুটা ভাল করেও বড় রান পায়নি মায়াঙ্ক আগরওয়াল ২৪, রজত পতিদার ২৬, লিয়াম লিভিংস্টোন ২৫ এবং জীতেশ শর্মা ২৪। সর্বোচ্চ রান কোহলির ৪৩। ১৫তম ওভারে ফিরলেও টেনশনে ইনিংস শেষ পর্যন্ত প্যাড পরে ডাগআউটে বসে থাকতে দেখা যায় বিরাটকে। গ্যালারিতে চিন্তামগ্ন মুখে ছিলেন অনুষ্কা শর্মা। প্রথম আইপিএল জেতার জন্য ১৯১ রান প্রয়োজন পাঞ্জাব কিংসের। প্রথমে বল করে দুশো রানের মধ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু‌‌কে আটকে রাখে শ্রেয়স আইয়াররা।

প্রথম আইপিএল জেতার জন্য ১৯১ রান তাড়া করতে নেমে জিততে পারল না শ্রেয়সের পাঞ্জাব। প্রথম আইপিএল জেতার জন্য ১৯১ রান তাড়া করতে নেমে জিততে পারল না শ্রেয়সের পাঞ্জাব। আইপিএলের ১৮তম সংস্করণ। দলে শুরু থেকে খেলেন বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটার। অথচ সেই বেঙ্গালুরুর ট্রফি জিততে গেল ১৮টি বছর! খরা কাটল মঙ্গলবার। পঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে প্রথম বারের আইপিএল জিতল বেঙ্গালুরু। আইপিএল জয়ী দলগুলির তালিকায় যোগ হল আরও একটি নাম। এত বছর ধরে বেঙ্গালুরু আইপিএলের অন্যতম জনপ্রিয় দল হলেও ট্রফিটাই শুধু ছিল না। মঙ্গলবারের পর থেকে সেই আক্ষেপও আর থাকবে না। ভরসা ছিল শ্রেয়সের উপর। কিন্তু এই ম্যাচে ব্যর্থ তিনি। অধিনায়ক ব্যর্থ হতেই ব্যর্থ হল দলও। একটার পর একটা উইকেট পড়ল। শশাঙ্ক সিংহ একাই লড়লেন। ৩০ বলে ৬১ রান করলেন। কিন্তু পাশে কাউকে পেলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৮৪ রানে শেষ হল পঞ্জাবের ইনিংস। ৬ রানে চ্যাম্পিয়ন হল বেঙ্গালুরু। বিগ ফাইনালে দুশোর কাছাকাছি রান তাড়া করে জেতা সহজ নয়। স্নায়ুর চাপে পড়ে যায় পরে ব্যাট করা দল। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রেও তাই হল। শুরুটা মন্দ করেনি প্রিয়নশ আর্য ২৪ এবং প্রভসিমরন সিং ২৬। ৯ রানে একবার জীবন ফিরে পান প্রভসিমরন। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। শ্রেয়স আইয়ারের উইকেট পাঞ্জাবকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দলকে জেতালেও এদিন ডাহা ব্যর্থ পাঞ্জাবের অধিনায়ক। মাত্র ২ বল ক্রিজে ছিলেন। ১ রানে ফেরেন। এখানেই দেওয়াল লিখন হয়ে যায়। তবে যতক্ষণ ইংলিস ছিল, আশা ছিল। ৩৯ রানে আউট হওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ে যায়। পাওয়ার প্লের শেষে বেঙ্গালুরুর রান ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫। সেখানে পাঞ্জাবের ১ উইকেট হারিয়ে ৫২। প্রথম ৬ ওভারের শেষে দুই দলের মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না। কিন্তু ক্রুনালের চার ওভার পার্থক্য গড়ে দেয়। মিডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ। অনেকেই মেগা ফাইনালে টসে জিতে বিপক্ষের ঘাড়ে বড় রান চাপিয়ে দিতে পছন্দ করে। কিন্তু এদিন সেই সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেন শ্রেয়স।‌ শেষ পর্যন্ত হাসিমুখে মাঠ ছাড়েন কোহলি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles