Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

সকলের প্রিয় ‘‌ধীমান দা’‌ আর নেই!‌ বহুলপ্রচারিত সংবাদমাধ্যমের সফলতম প্রাক্তন ক্রীড়া সম্পাদক ধীমান দত্ত প্রয়াত

তিনি নেই। বিশ্বাস না হওয়ারই কথা। দাপুটে-‌সৎ-‌নিষ্ঠাবান-‌কর্মপরায়ন বিশেষনগুলোও অতীব ছোট মনে হয় তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্টের কাছে। কারণ, তিনি ছিলেন বড় মনের মানুষ। সংবাদমাধ্যমের অফিসের কাচ ঘেরা ঘর গমগম, নেকো কন্ঠস্বরের ধমকে। পাশাপাশি ভালোবাসা ও স্নেহ শব্দটাও সমান প্রযোজ্য। মনে পড়ে সেই স্কেলের ঠকঠকানি। কমপিউটার ছুঁয়েও দেখতেন না। শুধু টেবিলের উপর স্কেলের শব্দেই বদলে যেত ডেক্সটপের স্ক্রিন। একের পর এক ছবি বাছাই করে খেলার পাতায় চমক। ক্রীড়া বিভাগের কাচের ঘরে তিনিই ছিলেন মহারাজ। সর্বজনপ্রিয় ধীমান দা। বহুলপ্রচারিত সংবাদমাধ্যমের সফলতম প্রাক্তন ক্রীড়া সম্পাদক ধীমান দত্ত।

খুব মনে পড়ে, ময়দানের তাবড় তাবড় ক্রীড়া সাংবাদিকের সঙ্গে ক্ষুদ্র এক চিত্র সাংবাদিককেও (‌‌যিনি লেখা ও ছবি দুটোই করতেন)‌‌ অ্যাসাইনমেন্টে ঠেলে দিয়ে বলতেন, ‘‌তুমিও একটু চোখ কান খোলা রাখবে’‌। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমানের শো। ঠিক তার পর দিনই বিধ্বস্ত যুবভারতীয়। হেডলাইন ‘‌রহমানিয়ায় বিধ্বস্ত যুবভারতী’‌। কাগজের প্রথম পাতায় হেডলাইন হল ক্ষুদ্র ক্রীড়াসাংবাদিকের দেওয়া হেডলাইনেই। এক বর্ণও এডিট করা হয়নি। ছবিও ছিল ওডাফা ব্যারেটোরা কাদা ধসা মাঠে পেরেক খুঁজে বেড়াচ্ছেন। রাত পর্যন্ত কাজ করার পরও নিজে উঠে পড়তেন সবার আগে। প্রথম ফোন পরদিনই, এরকম প্রত্যেক অ্যাসাইনমেন্টে গিয়ে চোখ কান খোলা রাখবে। একবারের জন্য কোনওদিন মুখে বলেননি লেখার ভালো মন্দের বিষয়ে। তবে পরের দিন অ্যাসাইনমেন্ট দেখে বুঝে নেওয়া যেত, ‘‌তিনি’‌ খুশি।

শুক্রবার ১৬ মে প্রয়াত হন। বহলপ্রচারিত পত্রিকার প্রাক্তন ক্রীড়া সম্পাদক ধীমান দত্ত শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন। বাড়ি এবং হাসপাতাল করেই কাটছিল দিন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার দুপুরে সল্টলেকের বাড়িতেই প্রয়াত হলেন। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের বেশি একই পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। একসময় ক্রীড়া সাংবাদিক তৈরির কারখানার প্রধান কর্মী তিনিই। নিজের হাতে একাধিক সাংবাদিক তৈরি করেছেন। তাঁর হাতে গড়া প্রত্যেক ক্রীড়াসাংবাদিকই আজ স্বনামধন্য। প্রায় তিন দশক বাংলার একটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্রের ক্রীড়া সম্পাদক থাকা সত্ত্বেও বিদেশে ফুটবল এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপ, অলিম্পিক সহ অন্যান্য বড় টুর্নামেন্ট কভার করতে নিজের থেকে জুনিয়র সাংবাদিকদের পাঠাতেন। যার ফলে সবার প্রিয় ছিলেন ‘ধীমান দা।’ নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন। ময়দানের কর্মকর্তাদেরও খুব পছন্দের মানুষ।

ধীমান দত্তের নেতৃত্বে খেলার পাতা ও খেলা ম্যাগাজিন অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল। খেলার কাগজ, খেলার কথা-র মত জনপ্রিয় কাগজও সমৃদ্ধ হয়েছিল তাঁর আপোষহীন কলমে। ধীমান দত্ত ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। কয়েক মাস আগে অসুস্থ শরীর নিয়েও গিয়েছিলেন ক্লাবে। তাঁর বাবার নামাঙ্কিত মুকুল দত্ত কর্মশালায় যোগ দেন। ধীমান দত্তর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কলকাতার ক্রীড়া সাংবাদিক মহল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles