ঋদ্ধিকে গার্ড অফ অনার পাঞ্জাবের, তারকা উইকেটকিপারের বিদায়ী ম্যাচে উজ্জ্বল সুরজ সিন্ধু

ক্রিকেটজীবনের শেষ ম্যাচের অভিজ্ঞতা খুব একটা মধুর হল না ঋদ্ধিমান সাহার। ব্যাট করতে নেমে সাত বল খেলে কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হল। এবারের মতো রনজি অভিযান শেষ অনুষ্টুপ মজুমদারদের। পাঞ্জাব ম্যাচের আগে বাড়তি মোটিভেশন বাংলার ড্রেসিংরুমে। কারণ এই ম্যাচ জিতে ঋদ্ধিকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে প্রস্তুত বঙ্গ ব্রিগেড। খেলা শুরুর আগে ‘পাপালি’র হাতে বিশেষ উপহারও তুলে দেন ক্রিকেটাররা। বিদায়ী ম্যাচের প্রথম দিন ব্যাটিং পাননি ঋদ্ধি। উইকেটের পিছনে দুটি ক্যাচ নিয়েছেন।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই আউট হয়ে যান সুমন্ত গুপ্ত। হাফসেঞ্চুরি করার পরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৭ নম্বরে নামা অভিষেক পোড়েলও ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে যান। তার পরে ঋদ্ধি মাঠে নামতেই পাঞ্জাবের প্রত্যেক ক্রিকেটার একজোট হয়ে গার্ড অফ অনার দেন। শেষ ম্যাচে ঋদ্ধিকে তাড়া করল ব্যর্থতা। গুর্নুর ব্রারের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হল। বিদায়ী ম্যাচে উইকেটকিপারের দস্তানায় আটকে গেলেন ঋদ্ধি। ঋদ্ধির বিদায়ী ম্যাচে উজ্জ্বল সুরজ সিন্ধু জয়সওয়াল। বল হাতে চার উইকেট পেয়েছিলেন তরুণ পেসার। প্রথম দিনের শেষে নাইট ওয়্যাচম্যান হিসাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনেও উলটো দিকে পরপর উইকেট পড়লেও ইনিংস গড়ছেন সুরজ। হাফ সেঞ্চুরি করে বাংলার হয়ে এই ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার। রনজির শেষ ম্যাচে জিতেই হয়তো ঋদ্ধিমানের কেরিয়ারে যবনিকা পতন হতে চলেছে।

দুরন্ত বোলিংয়ের পর বিধ্বংসী সেঞ্চুরি। সুরজের ভরসায় রনজিতে পাঞ্জাবকে হারানোর পথে বাংলা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে লিড নিয়েছে বাংলা। রনজি ট্রফিতে ব্যাটে-বলে দুরন্ত বাংলা ক্রমে জয়ের দিকে। অনুষ্টুপ মজুমদাররা পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বড় রানের লিড পাওয়ার পর দিনের শেষে আঘাত করলেন বোলাররা। ইডেনে পাঞ্জাবের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৯১ রানে। সুরজ সিন্ধু ও সুমিত মোহন্ত ৪টি করে উইকেট নেন। বাংলার ব্যাটার অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ও সুদীপ কুমার ঘরামি দ্রুত ফিরে যান। অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার করেন ৩২ রান। দ্বিতীয় দিনে অনবদ্য সুরজ সিন্ধু ১৮৫ বলে ১১১ রানে মারেন ১৪টি চার ও ৪টি ছয়।

সুমন্ত গুপ্ত ৫৫ রান। অভিষেক পোড়েল ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে যান। তার পরে মাঠে নামেন ঋদ্ধি। তিনি নামতেই পাঞ্জাবের প্রত্যেক ক্রিকেটার একজোট হয়ে গার্ড অফ অনার দেন। শেষ পর্যন্ত বাংলার ইনিংস থামে ৩৪৩ রানে। অনুষ্টুপদের কাছে ১৫২ রানের লিড। বল হাতেও সুমিত একটি উইকেট ও পাঞ্জাবের আরও একটি উইকেট নেন মহম্মদ কাইফ। দ্বিতীয় দিনের শেষে পাঞ্জাবের রান ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৪। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর এই ইনিংসে অনমোলপ্রীত সিং অপরাজিত আছেন ২৮ রানে। পাঞ্জাব এখনও পিছিয়ে ৮৮ রানে।

রনজির নকআউটে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব? ইডেনে অন্তত জয় দিয়ে শেষ করতে পারবে বাংলা। খাতায়-কলমে এখনও পরের পর্বে যাওয়ার স্বপ্ন বেঁচে রয়েছে বাংলার। তারকাহীন পাঞ্জাব নামবে নিতান্ত নিয়মরক্ষার ম্যাচে। ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বাংলা। পরের পর্বে যেতে হলে শুধু পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে জিতলেই চলবে না। প্রার্থনা করতে হবে যেন বিহার অঘটন ঘটিয়ে কেরলকে হারিয়ে দেয়। কর্নাটকও যেন হরিয়ানার বিরুদ্ধে হেরে যায় বা সেই ম্যাচ ড্র হয়। কঠিন অঙ্ক!