নির্যাতিতার বাবা-মায়ের আবেদনে সুবিধা পাবে দোষী!নির্যাতিতার পরিবারকে নতুন করে আবেদন করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আর জি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা নির্যাতিতার পরিবারের। তদন্তকারীদের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে নির্যাতিতার পরিবার যে মামলা দায়ের করেছিল সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নতুন করে আবেদন করার নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআইয়ের মন্তব্যও পরিবারের জন্য ধাক্কা। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বুধবার আর জি কর ইস্যুতে নির্যাতিতার পরিবারের আবেদন শোনার পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেহেতু ইতিমধ্যেই এই মামলায় একটি রায় হয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, “আপনাদের আবেদনে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা বিতর্কিত। আদালতে আজ যা-ই বলা হোক, সেটার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে।” নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন, “আমরা সেটা জানি। কিন্তু সময়ের ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে। রায় ঘোষণার আগেই এই আবেদন করা হয়েছিল।” আদালত জানায়, সেটা উল্লেখ করেই নতুন করে মামলা করতে হবে নির্যাতিতার পরিবারকে। সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ফের আবেদন করেছে নির্যাতিতার পরিবার।
আদালতে সিবিআই আইনজীবী তুষার মেহেতার রীতিমতো বিস্ফোরক সওয়াল, এভাবে তদন্তের মাঝপথে তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্যাতিতার বাবা-মা যে আবেদন করেছেন, তাতে আসলে সুবিধা পাবে দোষীই। তুষার মেহেতা জানান, তাঁর কাছে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সব প্রশ্নের জবাব আছে। চাইলেই সেই জবাব তিনি দিতে পারেন। যদিও আদালত জানিয়ে দেয়, সেটার কোনও প্রয়োজন নেই। নতুন করে আবেদন দাখিল করবে নির্যাতিতার পরিবার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই পুরনো আবেদন প্রত্যাহার করে নতুন করে আবেদন করেছে নির্যাতিতার পরিবার।
সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছে রাজ্য সরকার। আবার সঞ্জয় পালটা শাস্তি মকুবের দাবিতে হাই কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্যাতিতার বাবা-মা হাই কোর্টে জানিয়েছেন, তাঁরা সঞ্জয়ের ফাঁসি চান না। সব মিলিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের অবস্থানে খানিকটা ধন্দ তৈরি হচ্ছে। আইনজীবী মহলের ধারণা, তদন্তের মাঝপথে নির্যাতিতার পরিবার তদন্তকারী সংস্থাকে প্রশ্নের মুখে তোলায় অসন্তুষ্ট আদালত। সেকারণেই নতুন করে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
বুধবারের শুনানিতে এমন প্রশ্নই তুললেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। তাঁর বক্তব্য, একই আবেদনের প্রেক্ষিতে দু’টি আদালতে শুনানি চলতে পারে না। হয় উচ্চ আদালত শুনবে, নয় তো শীর্ষ আদালত। নির্যাতিতার মা-বাবা কোথায় শুনানি চাইছেন, তা তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। সেই মতো পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নির্যাতিতার পরিবারের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি নিয়ে আসুন, এখানে মামলা রাখতে চাইছেন না কি কলকাতা হাই কোর্টে!’’ এক সপ্তাহ পর ফের শুনানি।