মাটিতে শুয়ে জাতীয় গেমসে গেল বাংলা খো-খো দল! ৩৬ জনের দলের ছ’জনের টিকিট নিশ্চিত, বাকিরা আরএসিতে

জাতীয় গেমসে অংশগ্রহণে ট্রেনের ‘টিকিট চাপানউতোর। মাটিতে শুয়ে জাতীয় গেমসে গেল বাংলা খো-খো দল। উত্তরাখণ্ডে বসেছে জাতীয় গেমসের আসর। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে টিকিট বিভ্রাট বাংলা দলে। ধাপে ধাপে বাংলা দল উত্তরাখণ্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে। বাঘ এক্সপ্রেস করে উত্তরাখণ্ডের উদ্দেশে যাত্রা বাংলা দলের। উত্তরাখণ্ডের ট্রেন যাত্রা প্রায় টানা ৩৬ ঘণ্টার। অভিযোগ দীর্ঘ এই পথ ট্রেনের অসংরক্ষিত কামরাতেই যেতে হল বাংলার খেলোয়াড়দের। বিশেষ করে মহিলা খো-খো দলকে।
খো-খো দলই ছাড়াও প্রায় গোটা বাংলা দলকেই বাঘ এক্সপ্রেসের অসংরিক্ষত কামরার মেঝেতে শুয়েই জাতীয় গেমসে অংশগ্রহণের জন্য উত্তরাখণ্ড পৌঁছতে হল। অধিকাংশ খেলোয়াড়ের টিকিট সংরক্ষিত না-হওয়াতেই এমন বিপত্তির মুখে পড়তে হয় বাংলা দলের খেলোয়াড়দের। রাজ্য খো খো অ্যাসোসিয়েশনের সচিব কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় জানান, “আমাদের ৩৬ জনের দলের ছ’জনের টিকিট নিশ্চিত হয়েছে। বাকিরা আরএসিতে গিয়েছে। দলটা বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের। টিকিট কেটে দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেয়নি। আমরা কম সময়ের নোটিশে যে ক’টা টিকিট পেয়েছি, তা নিয়েই দল রওনা হয়েছে।’’
‘‘শুধু জার্সি এবং ট্র্যাক স্যুট দিলেই হয় না। জুতো নিয়ে তো আরও বড় কেলেঙ্কারি। ৬ এবং ৮ নম্বর জুতো দরকার ছিল। অথচ দেওয়া হল ১০, ১১, ১২ নম্বর জুতো। বলা হয়েছে নিয়ে যা, বাবা-কাকাদের দিয়ে দিবি। এই কেলেঙ্কারির দায় তো অ্যাসোসিয়েশনের। সচিবকে নির্বাচন করা হয়েছে। দায় তো তাঁর। শুধু সংস্থা আলো করে বসে থাকলেই হবে না। দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু আমাদের নয়, আইএফএ’র মহিলা দলও একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই গিয়েছে, খবর নিন। এভাবেই চলছে বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।”
দেশের মাটিতে সদ্য শেষ হওয়া খো-খো বিশ্বকাপের দু’টি বিভাগেই ভারত বিশ্বসেরার সম্মান পেয়েছে। অথচ জাতীয় গেমসে অংশ নেওয়ার জন্য খো-খো খেলোয়াড়দের এভাবে যেতে হবে! যা দেখে হতাশ সকলে। উল্লেখ্য, সদ্য সন্তোষ ট্রফিজয়ী বাংলা দলের সদস্যদের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এবার জাতীয় গেমসের আগে বাংলার খেলোয়াড়দের উদ্দেশে ঘোষণা করা হয়েছিল,জাতীয় গেমসের আসরে পদক জিতলেই মিলবে সরকারি চাকরি। অথচ সেই জাতীয় গেমসে অংশগ্রহণের জন্য বাংলা দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়কেই বাঘ এক্সপ্রেসের অসংরক্ষিত কামরার মাটিতে শুয়েই যেতে হল। কোনওভাবে দায় এড়াতে পারেন বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান কর্তারা?
বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সচিব জহর দাস বলেন, ‘‘মহাকুম্ভ মেলা চলছে। আমরা রেলের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ওনারা যথেষ্ট চাপে রয়েছেন। তবুও আমাদের তরফ থেকে রেলের কাছে যাদের পাঠাচ্ছি, তাঁদের প্রত্যেকের ব্যবস্থা ওনারা করে দিয়েছেন। চলতি বছর প্রত্যেক দলকে এসি-থ্রি টায়ারে যাওয়ার টিকিট করে দেওয়া হয়েছে। ফুটবল, সাঁতার, তিরন্দাজি দল ঠিকভাবেই পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু খো-খো অ্যাসিসিয়েশনের কর্তারা আমাদের কাছে কোনও অনুরোধ করেনি। সুতরাং আমাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে এখন লাভ নেই। আরএসি পদ্ধতিতেই রেল কর্তারা খেলোয়াড়দের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিয়েছেন।’’ সব মিলিয়ে জাতীয় গেমসে অংশগ্রহণে ট্রেনের ‘টিকিট চাপানউতোর’ শুরু।