মহাকাশে ‘হাত মেলানো’ হল না! ‘হ্যান্ডশেক’এর তিন মিটার পর্যন্ত গিয়ে পিছোল দুই উপগ্রহ

‘স্পেস ডকিং’ চলছে ইসরোর। ইসরোর স্পেস ডকিং পরীক্ষার জন্য দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহকে পাঠানো হয়েছে মহাকাশে। একসঙ্গে একই বিন্দুতে মিলিত হবে। রবিবার সকালে তিন মিটার দূরত্ব পর্যন্ত এগিয়েছিল দুই স্যাটেলাইট। মহাকাশে দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহকে ‘হ্যান্ডশেক’ করাতে চায় ইসরো। ‘স্পেস ডকিং’ পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রবি ভোরে সেই পরীক্ষার পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। দুই উপগ্রহকে তিন মিটার পর্যন্ত কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হলেও আবার তাদের পিছিয়ে আনা হয়। সমাজমাধ্যমের পোস্টে ইসরো বলছে, স্পেস ডকিংয়ের পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা ১৫ মিটার এবং তিন মিটার পর্যন্ত সফল হয়েছে। তার পর আবার সেগুলিকে নিরাপদ দূরত্বে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আরও তথ্য বিশ্লেষণের পর স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। শনি রাত ১২টার পর থেকেই ডকিং প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ইসরো। প্রথমে দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহকে নিয়ে যাওয়া হয় ১৫ মিটার ব্যবধান পর্যন্ত। তার পর আরও কাছাকাছি এগোয় তারা। দু’টি উপগ্রহের মধ্যে দূরত্ব তিন মিটারে তাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, দুই স্যাটেলাইটেরই অবস্থা বেশ ভালো। তিনি বলেন, ‘যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হবে।’ সোমনাথ বলেন, ‘আমরা স্পেস ডকিংয়ের জন্যে প্রথমবারের মতো চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রতিটি প্রথম প্রচেষ্টার নিজেস্ব অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। আমরা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে শিখছি। আমরা সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং শুধরেছি। দুই স্যাটেলাইট ফের কাছাকাছি জায়গায় আসছে। আমরা এখন কিছু ট্রিমিং ম্যানুভার এবং প্রোগ্রামিং চড়ান্ত করছি। এর ফলে নিরাপদে ডকিং সম্পন্ন করা যাবে বলে আশা করছি। সব কিছু পরিল্পনামাফিক যাতে যায়, তার জন্যে অনেক কিছু বদলাতে হয়েছে।’
https://x.com/isro/status/1878242788351115462?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1878242788351115462%7Ctwgr%5Ef1204ec443da5a9cb4da6eb7919d8df4ccd81cd6%7Ctwcon%5Es1_c10&ref_url=https%3A%2F%2Fbangla.hindustantimes.com%2Fnation-and-world%2Fisro-spadex-mission-latest-update-chaser-and-target-satellite-just-15-meters-apart-pictures-shared-in-social-media-31736645866182.html
স্পেস ডকিং সম্পর্কে ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহ— স্পেডেক্স ১ চেজার এবং ২ টার্গেট একই গতিবেগে একই দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার পর মহাকাশে প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় একই বিন্দুতে একসঙ্গে পৌঁছবে এবং একত্রিত হওয়ার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার নাম স্পেস ডকিং। ৩০ ডিসেম্বর এই পরীক্ষার জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেট উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ওই রকেটের প্রধান পেলোড হিসাবেই পাঠানো হয়েছিল স্পেডেক্স ১ এবং ২-কে। এ ছাড়া, ২৪টি সেকেন্ডারি পেলোডও পাঠানো হয়েছিল। পিএসএলভি-সি৬০ মিশনের প্রধান জয়কুমার জানান, ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সেই লক্ষ্যপূরণের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ স্পেস ডকিং। এই পরীক্ষা সফল হলে মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে ইসরো। ৭ এবং ৯ জানুয়ারি ইসরোর তরফ থেকে দু’বার ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সেই প্রক্রিয়া পরিত্যাগ করা হয়। এই আবহে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, এই অভিযানে হয়ত লক্ষ্য পূরণের আগেই ইসরো হাল ছেড়ে দেবে এবং ডকিংয়ের চেষ্টা করা হবে না। তবে ইসরো জানিয়ে দিল, তারা শীঘ্রই ডকিং প্রক্রিয়ার চেষ্টা চালাবে।