একসঙ্গে অসুখ করে আমাদের, যমজ ভাইবোনের মতো!ঝগড়াঝাঁটিও হয়, আবার টানও হয় তেমনই, সবচেয়ে বেশি থাকে পরস্পরের প্রতি দায়িত্ববোধ
জয়ের জন্মদিনে কী উপহার লোপামুদ্রার? ‘যাও পাখি যত দূর বুক গেছে, যত দূর চোখ ভেসে যায়, যত দূর শোক আছে, যত দূর কেউ কাকে চায়।’ আজকের দিনে জয়কে একটা গানই উৎসর্গ লোপামুদ্রার। বললেন, আর উপহার দিই না। কাল রাত ১২টায় জয়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি মাত্র। এর বেশি আজ আর কিছু করিনি। কাল রাত ১২টায় জয়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি মাত্র। এর বেশি আজ আর কিছু করিনি। আসলে আমি তো মানুষ হিসাবে খুবই কাঠখোট্টা। জন্মদিন নিয়ে বিশেষ আবেগ আমার মধ্যে নেই। এমনিতেই আমার মধ্যে আবেগ কম। যদিও জয় খুব ভালবাসে জন্মদিন পালন করতে। ওর মধ্যে আবেগ রয়েছে। কাল সামান্য উদ্যাপন হয়েছে। তার কারণ আজ কৃষ্ণনগরে আমার অনুষ্ঠান। কাল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন হয়েছিল। জয় খেতে খুব ভালবাসে। পরিমাণে বেশি খায় না। তবে চিংড়ি মাছ ও আরও অন্য কিছু মাছের ভক্ত জয়। আলাদা করে উপহার আর কিছু দেওয়া হয়নি। জন্মদিনের উপহার বলতে আমার বুকভরা ভালবাসা। আসলে আমার কাছে ভালবাসার সংজ্ঞাটা খুবই বিদ্ঘুটে। আমি ঠিক বুঝি না, ভালবাসা কাকে বলে।
আজ জয়ের জন্মদিন। দিনটা তো অবশ্যই বিশেষ। জন্মদিনটা এসেছিল বলেই তো আজ আমরা পৃথিবীতে। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হল, জয় আর আমার ২৮ বছরের সম্পর্ক। আজও পর্যন্ত জন্মদিনের মতো করে জন্মদিন উদ্যাপন করা আমাদের হয়ে ওঠে না। আমাদের বেশির ভাগ জন্মদিনই পালন হয়েছে চাকার উপর। আলাদা করে এ বারও কোনও উদ্যাপন হচ্ছে না। নচিদার (নচিকেতা চক্রবর্তী) গানের একটা পঙ্ক্তি আছে, ‘ভালবাসা আসলেতে পিটুইটারির খেলা’— হয়তো ঠিকই। এত বছর একসঙ্গে থাকাটা কেমন যেন অন্য রকম। সঙ্গী বন্ধুর মতো হয়ে যায়। বন্ধুত্ব ছাড়া একসঙ্গে থাকা যায় না। আরও ভাল ভাবে বলতে গেলে, এত বছর একসঙ্গে থাকলে সম্পর্কটা ভাইবোনের মতোই হয়ে যায়। এটা বলতে অনেকে দ্বিধাবোধ করেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন একসঙ্গে থাকলে এমনই হয়ে যায়। একসঙ্গে অসুখ করে, একসঙ্গে ঠান্ডা লাগে। যমজ ভাইবোনের যেমন হয়ে থাকে, ঠিক তেমনই। ভাইবোনের মতো ঝগড়াঝাঁটিও হয়। আবার টানও হয় তেমনই। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যেটা থাকে, সেটা পরস্পরের প্রতি দায়িত্ববোধ।
তাই আলাদা করে জন্মদিন নিয়ে খুব মাতামাতি নেই। আমার জন্মদিনেও আমার অনুষ্ঠান থাকে। বাইরেই থাকি সাধারণত। ফোনে জয়ের তরফ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা আসে। আসলে আমাদের দু’জনের জন্মদিনই শীতকালে। এই সময়ে তো পর পর অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। তাই জন্মদিন উদ্যাপন হয় না আর। আমাদের মধ্যে উপহারের আদানপ্রদানও সেই ভাবে হয় না। দু’-একবার হয়তো জয় কিছু দিয়েছিল আমাকে। এক বার আমার জন্মদিনে ও নিজের গাড়ি কিনেছে। তেমন পরিকল্পনা করে উপহার দেওয়া-নেওয়া পর্ব নেই আমাদের। আর যে হেতু অনুষ্ঠান থাকে, এই দিন একসঙ্গে গানবাজনাও করা হয় না। সময়ের অভাবে, একসঙ্গে গানবাজনা হয় না বললেই চলে।