‘সেদিন রাতে মেয়ের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের উপরে প্রবল সন্দেহ’, সঞ্জয় রায় একা নয়, মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত? বলির পাঁঠা সঞ্জয়? প্রশ্ন আন্দোলনকারীদের

সঞ্জয় রায় একা নয়, মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত, মনে করছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মা। সঞ্জয় রায় একা নয়, মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত, মনে করছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মা। তাঁরা দাবি করেছেন, সেদিন রাতে মেয়ের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের উপরে প্রবল সন্দেহ আছে। আরজি কর মামলার রায়দানের যে দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে, মেয়েকে ‘বিচার’ পাইয়ে দেওয়ার প্রথম ধাপ। মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় হাসপাতালের কেউ যুক্ত আছেন। সকলেই যখন সাজা পাবেন, তখন তাঁর মেয়ে প্রকৃত ‘বিচার’ পাবেন। এমনই মন্তব্য করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মা।

সেই ‘হাসপাতালের কেউ’ হিসেবে তাঁদের সন্দেহের তালিকায় চারজন জুনিয়র ডাক্তার আছেন বলেও জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘ওইদিন রাতের বেলা (৮ অগস্ট রাতে) যারা আমার মেয়ের সঙ্গে ছিল, তাদের আমরা প্রচণ্ড-প্রচণ্ডভাবে সাসপেক্ট (সন্দেহ) করছি। ডিএনএ রিপোর্ট তো পাওয়া গিয়েছে। তথ্যপ্রমাণ দেখেছেন। কোনও মহিলারও উপস্থিতি আছে।’ মন্তব্য করেছেন আরজি কর মামলার রায়দানের দিনক্ষণ সামনে আসার ঠিক পরেই। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা আদালত জানিয়েছে যে আগামী ১৮ জানুয়ারি আরজি কর কাণ্ডের রায়দান। আপাতত ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় একমাত্র এবং মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের সাজাও চাওয়া হয়েছে।

নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়নি। সবে শুরু হল। প্রথম যে অভিযুক্ত ছিল, তার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হবে ১৮ জানুয়ারি। আদালতের কাছে সিবিআই জানিয়েছে, পরবর্তীতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করা হবে। সামনে আনা হবে আরও অপরাধীদের। মায়ের কথায়, ‘আমরা মনে করি যে সঞ্জয় দোষী। কিন্তু একা ওর পক্ষে আমার মেয়েকে মেরে ফেলা সম্ভব নয়। ওই হাসপাতালের কেউ জড়িত আছে।’ তিনি বলেন, ‘সব অপরাধীরা যখন শাস্তি পাবে, তখন আমার মেয়ে ও আমার আত্মা শান্তি পাবে।’ সেইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশ পাঁচদিনে যা করেছিল, সিবিআই সেটা পাঁচ মাসে করেছে। একমাত্র সঞ্জয়কে সামনে আনতে পেরেছে। সিবিআইয়ের উপরে একেবারেই প্রসন্ন হন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। বাবা বলেছেন, ‘এখন আমরা সিবিআইয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছি না। আমরা কোর্টের সামনে প্রশ্নগুলি রেখেছি।’ আর মা তো স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, ‘আমরা সিবিআই চাইনি। হাইকোর্টে ভালো তদন্তকারী এজেন্সি চেয়েছিলাম।’ কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের উপরে যাবতীয় ভরসা রাখছেন বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের বক্তব্য, আদালতের উপরে আস্থা আছে। যা বলার, তাঁরা আদালতকে জানিয়েছেন।

১৮ জানুয়ারি দুপুরে আরজি কর কাণ্ডে রায় ঘোষণা করবে শিয়ালদা আদালত। এসবের মধ্য়ে ফের শহরে মিছিল বের করলেন চিকিৎসকরা। আরজি কর আন্দোলনের একাধিক পরিচিত মুখ জুনিয়র ডাক্তারদের বৃহস্পতিবারের মিছিলে দেখা যায়। কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত এই মিছিল হয়। এক না একাধিক জড়িত, এই প্রশ্নের একটা নির্দিষ্ট উত্তর চাই। যদি সঞ্জয় রায় একলা হয় তবে সঞ্জয় রায়ের মোটিভ কী ছিল? প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ লোপাটের যে চেষ্টার কথা সিবিআই বলেছে, তদন্তে অন্যদিকে চালিত করার যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, আমরাও বলছি, সেটা কি তাহলে সঞ্জয় রায়কে আড়াল করার জন্য় এগুলো করা হচ্ছিল? প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হচ্ছিল? একাধিক ডিএনএর প্রশ্ন এসেছে। সেটা কীভাবে হল? এক না একাধিক সেটা পরিষ্কার হল না। এক না একাধিক, মোটিভ কী ছিল আর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার কারণটা কী ছিল। এই প্রশ্নের উত্তর আমরা চাই। কাকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছিল। এই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা পাই তাহলে বুঝতে পারব যে ন্যায় বিচারের দিকে যাচ্ছে। বলির পাঁঠা সঞ্জয়? প্রশ্ন আন্দোলনকারীদের