কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্তোষজয়ী ফুটবলারদের হাতে তুলে দিলেন সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র

মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন সন্তোষ কাপ জয়ী বঙ্গ ফুটবলারদের সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে যায়। শনিবার আইএফএ দপ্তরে সরকারি কাগজপত্রে সই করেন ফুটবলাররা। বুধবার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে মহা সমারোহে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সঞ্জয় সেনের কোচিংয়ে দীর্ঘদিন পর সন্তোষ ট্রফি জিতেছে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘রবি হাঁসদার দুরন্ত গোলে জয় নিশ্চিত হল, যিনি টুর্নামেন্টে সর্বাধিক ১৩টি গোল করে গোল্ডেন বুট পেয়েছেন। কোচ সঞ্জয় সেনকে আন্তরিক অভিনন্দন।’ পরে তাঁদের সঙ্গে নবান্নে দেখাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করেন।

ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সবার সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য। সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে কেরলকে হারিয়ে সঞ্জয় সেনের দল এই নিয়ে ৩৩বার ভারতসেরা হল বাংলা। ফাইনালে জয়সূচক গোলটি করেন রবি হাঁসদা। হায়দরাবাদ থেকে রাজ্যে ফেরার পর বিমানবন্দরে সন্তোষজয়ী দলকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

নিয়োগ প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বাংলার ফুটবলারদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন। দুপুরে ধনধান্য অডিটোরিয়ামে সন্তোষজয়ী ফুটবলারদের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হল। কোচ সঞ্জয় সেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রায় সব ফুটবলাররা। অধিনায়ক চাকু মান্ডি, সৌরভ সামন্ত, আদিত্য পাত্র। পাশে উপস্থিত ছিলেন দেব, জুন মালিয়ারা।

ফুটবলাররা পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সাব-ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবলের পদে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে এক অনুষ্ঠানে সকল খেলোয়াড়ের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।

এই অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সহ রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য, আই এফএ সভাপতি অজিত বন্দোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত,এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সুফল রঞ্জন গিরি, বিওএ সভাপতি চন্দন রায় চৌধুরী।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই কচিকাঁচাদের মাঝে থাকতে ভালোবাসেন। বুধবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে খুদেদের ছেলেবেলার গল্প শোনালেন মমতা। বললেন, “আমি এখনও জন্মাইনি, যেদিন মৃত্যু হবে সেদিন আমি জন্মাব।” বুধবার ধনধান্য স্টেডিয়ামের পড়ুয়াদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্যের তরফে। সেখানেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি এখনও জন্মাননি। তাঁর জন্মদিন ৫ জানুয়ারিও নয়। তা সত্ত্বেও উদযাপন, তাঁর পছন্দ নয়। কিন্তু কীভাবে এইদিনটি তাঁর জন্মদিন হল? মজার ছলে এদিন সেই গল্প বললেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, তাঁকে স্কুলে ভর্তি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষকরা তাঁর জন্মদিন জানতে চান। কিন্তু তাঁর বাবা বলতে পারেননি। তিনিই নাকি শিক্ষককে বলেছিলেন, একটি দিন লিখে নিতে। সেই থেকেই সমস্ত সার্টিফিকেটে তাঁর জন্মদিন ৫ জানুয়ারি।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, তাঁর জন্মের সময় বাড়িতেই প্রসব হতো। ফলত কারও পক্ষেই সঠিক দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জন্মদিন, নাম, কোনওটাই তাঁর পছন্দ নয়। একাধিকবার পালটে ফেলবেনও ভেবেছেন কিন্তু ঘটনাচক্রে তা হয়নি। এদিন ফের বাম আমলে তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের কথাও বলেছেন তিনি। বললেন, “আমি এক জীবন্ত লাশ।”