হীরক জয়ন্তী বর্ষে ব্যাঁটরা পি এল শিক্ষানিকেতন, স্কুলের ৬০ বছরের বর্ষপূর্তিতে বর্ণাঢ্য ‘প্রভাত ফেরী’ অনুষ্ঠান

বিবিধের মাঝে দেখো মিলনও মহান। সুদীর্ঘ রাজপথ পেরিয়ে শহরতলির অলিগলি জুড়ে সারিবদ্ধভাবে হাঁটছেন প্রাক্তন শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্রদল। পাশের সারিতেই বর্তমান শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীরা। সাড়ে চার কিলোমিটারের হাঁটাপথে সুদৃশ্য মেলবন্ধন। সুসজ্জিত ব্যান্ডের তালে তালে বেজে চলেছে কবি নজরুলের পরিচিত সুর, ‘চল চল চল, উর্দ্ধ গগনে বাজে মাদল’।

ব্যাগপাইপারের সুরেলা শব্দব্রম্ভে ‘আমরা করবো জয়, নিশ্চয়’ কিংবা ‘হও করো মেতে বীর’। ছয় শতাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র ছাত্রীদের সম্মিলিত উপস্থিতি। শ্বেতশুভ্র টুপিতে আবৃত মাথাগুলো নিজের অজান্তেই দুলে উঠছে হরেক সঙ্গীতের তালে। প্রকাণ্ড ট্যাবলোতে জনজীবনের সচেতনতার বার্তা। শিক্ষার প্রসার, পবিবেশ সুরক্ষা থেকে শুরু করে জাতীয় সংহতি। কোনওকিছুই অপূর্ণ রইল না।

এতো আনন্দ আর আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা গৌরব উজ্জ্বল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, ব্যাঁটরা পাবলিক লাইব্রেরী শিক্ষা নিকেতন বয়েজ হাই স্কুল। নামটা বেশ বড়। স্কুলের কর্মকাণ্ডের তালিকা আরও বড়। বলতে শুরু করলে হয়তো সব শব্দই ফুরিয়ে আসবে। হীরক জয়ন্তী বর্ষে পদার্পণ করা উচ্চতর বিদ্যালয়।

১৯৬৫ সালের ২ রা জানুয়ারী শিক্ষানিকেতনের প্রতিষ্ঠা দিবস। ৬০ বর্ষ পূর্তি উদযাপন ও গৌরব উজ্জ্বল পুনর্মিলন উৎসব। ২০২৫ এর ৫ই জানুয়ারী ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০ টা বেজে পাঁচ। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর শিক্ষক ছাত্র নির্বিশেষে সমস্বরে জাতীয় সঙ্গীত। বর্ষীয়ান প্রাক্তন শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্রের বাজানো ঘন্টা ধ্বনিতে শুরু ‘প্রভাত ফেরী’র বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। স্নিগ্ধ-শান্ত-কর্মহীন রবি সকাল হয়ে উঠল আনন্দ মুখরিত।

তিলে তিলে তিলোত্তমা হয়ে ৬০ বছর পেরিয়ে ৬১ বছরের পদার্পণ করল ব্যাঁটরা পিএল শিক্ষানিকেতন বয়েজ হাই স্কুল। গৌরবময় হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে সারা বছর ধরেই চলবে বিভিন্ন কর্মসূচি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীবৃন্দের সম্মিলিত উদ্যোগ। ৬০ বছর আগে লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সফল প্রচেষ্টা আজও অব্যাহত।

৫ই জানুয়ারী রঙীন উদ্বোধনের পর ১৮ থেকে ১৯ জানুয়ারি নানান সাংস্কৃতীক অনুষ্ঠান হতে চলছে। অতিথি বরন, গুণীজন সংবর্ধনার পর শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীদের গান নাচ নাট্য পরিবেশনে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। ৬০ বর্ষ পূর্তি উৎসব উদযাপনকে কেন্দ্র করে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আনন্দ ও বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস সত্যিই চোখে পড়ার মতোই।

রবিবাসরীয় প্রভাত ফেরী অনুষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র ছাত্রীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সমাজের সর্ব স্তরের মানুষজনও।