ক্রিকেটকে আলবিদা? অসিভূমে ব্যর্থতা! অবসরের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেললেন ক্যাপ্টেন রোহিত!

৩, ৬, ১০, ৩, ৯। চলতি বর্ডার গাভাসকর সিরিজের তিনটি টেস্ট মিলিয়ে এই হল রোহিত শর্মার ব্যাটিংয়ের ছবি। চলতি বর্ডার গাভাসকর সিরিজের তিনটি টেস্ট মিলিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে ১৫টি ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ১৬৪ রান। ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ। অধিনায়ক হিসেবেও তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড়। অবসর নেওয়া উচিত বলেও রব উঠেছে। টেস্ট থেকে সত্যিই নাকি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন রোহিত। ঠিক করে ফেলেছেন দিনক্ষণও। গোটা সিরিজেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রোহিত শর্মা। সন্তান জন্মানোর জন্য পারথ টেস্ট থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। সেই ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জেতান জশপ্রীত বুমরাহ। দ্বিতীয় টেস্টে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ছনম্বরে ব্যাটিং করেন। পিঙ্ক বল টেস্টে হারে ভারত। তৃতীয় টেস্টেও ব্রিসবেনেও ব্যাটিং ও নেতৃত্বে বিপর্যস্ত রোহিত। বৃষ্টির কৃপায় সেই টেস্ট ড্র হলেও মেলবোর্নে কামিন্সদের কাছে পরাস্ত টিম ইন্ডিয়া। এই ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমেও নিজের চেনা ছন্দে ফিরতে পারেননি হিটম্যান। বারবার সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়। রোহিত নাকি নিজের টেস্ট অবসর নিয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচক মণ্ডলীর সঙ্গে কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, সিডনিতে পঞ্চম তথা শেষ টেস্টের পরই নাকি বিদায় নেবেন তিনি। নির্বাচকদের কাছে অবসরের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন রোহিত। সিডনি টেস্ট খেলেই পাঁচদিনের ক্রিকেটকে আলবিদা জানাতে পারেন। ভারতীয় দল যদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছতে পারে, তাহলে আলোচনার ভিত্তিতে সেই সিদ্ধান্ত বদল করতেও পারেন। সেক্ষেত্রে ওই ফাইনাল ম্যাচই হবে তাঁর অন্তিম টেস্ট ম্যাচ। তাই সবমিলিয়ে এখন সিডনি টেস্টের গুরুত্ব শুধু দলের কাছেই নয়, রোহিত শর্মার কাছেও অতি গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে তাঁর ব্যাট জ্বলে ওঠে কি না, সেদিকেই নজর থাকবে ক্রিকেটমহলের।

তিন টেস্ট মিলিয়ে সংগ্রহ মাত্র ৩১ রান। নেতৃত্বও যেন দিশাহীন দেখাচ্ছে। বক্সিং ডে টেস্টে হেরে যে ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’, তা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলেন রোহিত। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে রোহিত বলেন, “গোটা বিষয়টাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। যা করতে চাইছি, তার কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না। আমি হতাশ। দল হিসেবে অনেক কিছুই আমাদের শুধরে নিতে হবে। তবে এখনও তো ম্যাচ বাকি আছে। আমরা যদি সিডনিতে ভালো খেলি, তাহলে সিরিজ ড্র করতে পারব। সেটাও খারাপ হবে না। কতটা লক্ষ্য রয়েছে, সেটা ভেবে আমরা খেলিনি। আগেও যেমন করেছি, এবারও ভিত মজবুত করেই এগোতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঋষভের আউটের পরই সেই কাজটা কঠিন হয়ে যায়। উইকেট বড্ড ধীরগতির হয়ে যাচ্ছিল। যখন আমাদের হাতে সাত উইকেট ছিল, তখনও আমরা বেশি কিছু ভাবিনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া খুব ভালো বল করেছে।” ঋষভের আউট হওয়ার ভঙ্গি নিয়ে রোহিত বলেন, “ফলাফল নিয়ে আমরা সবাই হতাশ। আমি আর কী বলব? পন্থের নিজের বোঝা উচিত ওর কী করা উচিত। বাকিদের আর বলার দরকার নেই। অতীতে ও আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে আমার মধ্যে মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। যখন সাফল্য আসে, আমরা তো তখন সমর্থন করি। কিন্তু সেটা না এলে বিরক্ত লাগে। কোথাও একটা ভারসাম্য থাকা দরকার। কতটা ঝুঁকি নেওয়া দরকার? এই নিয়ে পন্থের সঙ্গে আগেও কথা হয়েছে। কিন্তু কতটা বলব, আর কতটা বলব না, তারও তো একটা সূক্ষ্ম সীমারেখা দরকার।” প্রথম টেস্টে বুমরাহর নেতৃত্বে পারথে জয় পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। জশপ্রীত বুমরাহর ‘ওয়ার্কলোড’ নিয়েও ভাবছেন রোহিত। প্রশংসা করছেন শুভমান গিলের। সিডনিতে ব্যাটে ও নেতৃত্বে সফল না হলে, চাপ আরও অনেক বাড়বে।