February 11, 2025

বিশ্ব দাবায় জিন্স-বিতর্ক! প্রতিযোগিতায় ফিরলেন বিশ্বের এক নম্বর দাবাড়ু, মনে হচ্ছিল খেলা ড্রয়ের দিকে যাচ্ছিল- ইতিহাস তৈরি করে হাম্পি নিজেই অবাক

0
World championship Chess

থামছেই না ম্যাগনাস কার্লসেন বাতর্ক। জিন্স পরে বিশ্ব ব্লিৎজ প্রতিযোগিতায় নেমে জরিমানার মুখে। বিতর্কে প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুলে নিয়েছিলেন। সুর নরম করে বিশ্ব দাবার নিয়ামক সংস্থা ‘ফিডে’। ফলে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরেছেন। ঘটনার দায় ফিডের সহ-সভাপতি বিশ্বনাথন আনন্দের উপর চাপিয়েছেন কার্লসেন। প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নিশানা করেছেন আর এক প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে। গত বার বিশ্ব র‍্যাপিড এবং ব্লিৎজ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা নরওয়ের দাবাড়ু কার্লসেন এই বছর র‍্যাপিডের নবম রাউন্ডে খেলতে গিয়েছিলেন জিন্স পরে। ফিডের নিয়ম অনুযায়ী জিন্স পরে কোনও প্রতিযোগী খেলতে পারবেন না। কার্লসেনের ২০০ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৭,১০০ টাকা জরিমানা। প্রতিযোগিতার আরবিটার দাবায় যিনি আম্পায়ার অ্যালেক্স হোলোকজ্যাক জানান, কার্লসেন বার বার এই ভুল করেছেন। শাস্তি পাওয়ার পর কার্লসেন ব্লিৎজ বিভাগে অংশ নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। ফিডের সভাপতি আরকাডি ভরকোভিচ জানান, নিয়মে কিছু বদল করে বলেন “আমরা চাই না এমন কোনও নিয়মের জন্য দাবার অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে নাম তুলে নিতে হয়। তাই নিয়ম সামান্য বদলেছি আমরা। কার্লসেনকে জরিমানাও দিতে হবে না।” বিতর্ক আরও বাড়িয়েছেন কার্লসেন। তিনি নিশানা করেছেন আনন্দকে। কার্লসেন বলেন, “আমি জানতাম না যে কোনও নিয়ম ভেঙেছি। আনন্দও জানত না, অতীতে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না। ওর সঙ্গে আমার অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আরবিটারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ও কোনও কথা বলতে পারেনি। তার মানে, আনন্দ এই কাজের যোগ্য নয়। সেটাই আমার মনে হয়েছে। ওরা বলছিল, জিন্স পরে খেলা যাবে না। যদি জিন্স পরে না খেলা যায়, তা হলে নিশ্চয় তার কোনও বিকল্প থাকবে। আজ পর্যন্ত কোনও দিন কোথাও পোশাক নিয়ে আমাকে সমস্যায় পড়তে হয়নি। এই নিয়ম কে করেছে? আমি তো বিমানের টিকিটও কেটে ফেলেছিলাম। তার পরে বাবা বলল, ভরকোভিচের সঙ্গে কথা বলতে। ওর সঙ্গে কথা বলার পরেই সমস্যা মিটে গেল। আমার মনে হয়েছে, ভরকোভিচ এই বিষয়ে কিছু জানত না। নইলে এতটা সমস্যা হত না।”

এদিকে, নিউইয়র্কে বিশ্ব দ্রুত চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ভারতীয় দাবাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেলেন কোনেরু হাম্পি। ২০১৯ সালের পর এটি ছিল হাম্পির দ্বিতীয় বিশ্ব খেতাব। ২০২৩ সালে রানার-আপ হয়েছিলেন। হাম্পি ১১তম এবং শেষ রাউন্ডের খেলায় জয়লাভ করে শিরোপা নিজের নামে করেন। ইন্দোনেশিয়ার আইরিন খারিশ্মা সুকান্দারকে পরাজিত করেন তিনি। এর ফলে তিনি ৮.৫ পয়েন্ট নিয়ে একমাত্র খেলোয়াড় হয়েছেন। হাম্পি বলেন, ‘আমি তখনই জানতে পারি যখন সালিস আমাকে বলেছিল যে আমি জিতে গিয়েছি। এটা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। মনে হচ্ছিল আমার খেলা ড্রয়ের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ আমার রাজাকে বের হতে দিয়েছিল যা আমাকে একটা ভালো প্যান স্ট্রাকচার দিয়েছে।’ হাম্পির দীর্ঘ দিন ভারতে মহিলাদের দাবার পতাকাবাহী এবং দেশ থেকে প্রথম মহিলা যিনি গ্র্যান্ডমাস্টার ছিলেন। ৩৭ বছর বয়সি বুদাপেস্টের অলিম্পিয়াডে অংশ নেননি, যেখানে ভারতের পুরুষ এবং মহিলারা সোনা জিতেছিলেন। এই দ্রুত শিরোনাম জয় তার জন্য একটি বড় কৃতিত্ব। হাম্পি জানান, ‘আমি খুব উত্তেজিত। আমি টাই-ব্রেকার বা অন্য কিছুর মতো একটি খুব কঠিন দিন হবে বলে আশা করছিলাম। আমি তখনই জানতে পারি যখন সালিস আমাকে বলেছিল যে আমি জিতে গিয়েছি। এটা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। মনে হচ্ছিল আমার খেলা ড্রয়ের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ আমার রাজাকে বের হতে দিয়েছিল যা আমাকে একটা ভালো প্যান স্ট্রাকচার দিয়েছে। বোর্ডের বাইরে, সময়ের পার্থক্যের কারণে এটি আমার জন্য কঠিন ছিল। এখানে আসার পর আমি আক্ষরিকভাবে ঘুমাইনি। অনেক বিশ্রাম ছাড়া খেলা সহজ ছিল না, কিন্তু আমি খুশি যে আমি এটা করতে পেরেছি। এটি ২০১৯ এর সঙ্গে তুলনা করা কঠিন। এটি ছিল আমার প্রথম শিরোপা এবং এটি খুব বিশেষ ছিল। এই জয়টা আসলে অবাক হয়ে এসেছিল কারণ আমার একটা ভালো বছর কাটেনি।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed