February 11, 2025

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রয়াত, ‘‌বন্ধু’‌ জিমির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ বাইডেনের

0
Jimy curter

১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন জিমি। অক্টোবর মাসেই নিজের শততম জন্মদিন পালন করেছিলেন জিমি কার্টার। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে জর্জিয়া প্রদেশের গভর্নর ছিলেন।প্রয়াত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন জিমি। জর্জিয়া স্টেট সেনেটের সদস্যও ছিলেন। মার্কিন নৌবাহিনীতে ১৯৪৩ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সক্রিয় সার্ভিসে ছিলেন। ১৯৪৬ সালে রোজালিন স্মিথের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কার্টারের। ২০২৩ সালের নভেম্বরেই তাঁর স্ত্রী প্রয়াত হয়েছিলেন। তার ১১ মাসের মধ্যেই প্রয়াত হলেন জিমি। জিমি কার্টারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান কার্টার সেন্টার। এক বিবৃতিতে জিমি কার্টারের ছেলে চিপ কার্টার বলেন, ‘আমার বাবা একজন নায়ক ছিলেন। শুধু আমার কাছেই নন, যাঁরা শান্তি, মানবাধিকার এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় বিশ্বাস করেন, এমন সবার কাছেই তিনি নায়ক ছিলেন।’

জিমি কার্টারের প্রয়াণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ব্যারাক ওবামা সহ বহু নেতা শোক জ্ঞাপন করেছেন। জিমি কার্টারের স্বাক্ষরিত তাঁদের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে বাইডেন লেখেন, ‘‌৬ দশক ধরে জিমি কার্টারকে বন্ধু বলে ডাকার সৌভাগ্য পেয়েছি জিল এবং আমি। তবে জিমির সবথেকে বড় কৃতিত্ব ছিল, আমেরিকা এবং গোটা বিশ্বে এমন কয়েক লাখ লোক হবে, যাঁরা কখনও জিমির সঙ্গে দেখা করেননি, তাও তাঁরা মনে করতেন জিমি তাঁদের বন্ধু।’‌ রাজনীতিক ভাবে ডেমোক্র্যাট জিমি এক মেয়াদেই প্রেসিডেন্ট থাকতে পেরেছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদ খোয়ানোর পরও বিশ্ব রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। জিমি কার্টার প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মার্কিন মুলুকে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় কংগ্রেসের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না কার্টারের। কংগ্রেস সদস্যদের ফোন ধরতেন না। নিজের প্রেসিডেন্সিতে ইজরায়েল এবং মিশরের মধ্যকার যুদ্ধ থামিয়েছিলেন কার্টার। এদিকে তাঁর সময়কালেই প্রথমবারের মতো চিনের সঙ্গে আমেরিকার পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার পূর্বতন প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেন। আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন আফগানিস্তান দখল করে, তখন চিনকে মিলিটারি সরঞ্জাম সরবরাহে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন এই কার্টার। ১৯৭৯ সালে ইরান বিদ্রোহের সময় তিনি ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তেহরানে আটকে পড়া মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধার করতে পারেনি আমেরিকা। রোনাল্ড রিগান হোয়াইট হাইজে আসার পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছিল এক রোমহর্ষক গোপন অভিযানে। ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে হার হজম করতে হয়েছিল কার্টারকে। প্রতিপক্ষ রোনাল্ড রিগান ৪৮৯ ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করেছিলেন সেই নির্বাচনে। কার্টার কার্যত উড়ে গিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হেরে যাওয়ার পর তিনি প্রকৃত পক্ষেই একজন কূটনীতিবিদ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে কিম সুংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি তাইওয়ান গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লি টেং-হুইয়ের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় সাড়ে চার দশকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে ২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed