থেকে গেল ‘বিতর্ক’, স্মৃতি, ইতিহাস শেষকৃত্য সম্পন্ন! ‘সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন’ মনমোহনের প্রয়াণে শোক প্রকাশ জো বাইডেনের

সেনার ট্রাকে করে দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দেহ। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আজ তাঁর শেষকৃ্ত্য সম্পন্ন। কত ইতিহাসের সাক্ষী। শান্ত স্বভাবের হয়েও বিতর্কেরও সঙ্গী। তাঁর গায়ে কেউ কালি ছেঁটাতে পারেনি। ‘মৌন প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে কটাক্ষও সহ্য করতে হয়েছে। মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন দিল্লিতে। তাঁর স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিতর্কের আবহেই কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে নিগমবোধ ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয় মনমোহন সিংয়েহ দেহ। সেনার ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা। সেখানে ছিলেন মনমোহনের পরিবারের সদস্যরা।

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কংগ্রেসের দাবি ছিল, এমন এক স্থানে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক যেখানে তাঁর সম্মানে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে।

এই নিয়ে ‘রাজনীতি করার’ অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস এবং মনমোহন সিংয়ের দাবি মেনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে।
https://x.com/ANI/status/1872907643477737549?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1872907643477737549%7Ctwgr%5Ec48df4541ea43230fd250dae2791df81858b1075%7Ctwcon%5Es1_c10&ref_url=https%3A%2F%2Fbangla.hindustantimes.com%2Fnation-and-world%2Fmanmohan-singh-last-rites-dr-manmohan-singh-laid-to-rest-with-full-state-honours-at-nigam-bodh-ghat-in-delhi-31735371399302.html
পিআইবি-র প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জন্যে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে জমি বরাদ্দের আবেদন জানিয়ে ২৭ ডিসেম্বর সকালে একটি চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সকালে বিশেষ ক্যাবিনেট বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কংগ্রেস সভাপতি এবং পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে। এর মাঝে শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে পারে। কারণ জমি বরাদ্দ করতে এবং স্মৃতিসৌধ তৈরির ক্ষেত্রে একটি ট্রাস্ট গঠন করতে হবে।’

বৃহস্পতি সন্ধ্যা ৮টা ১০ মিনিটে মনমোহন সিংকে এইমসের ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়, ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালন করা হবে। দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এককালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও ছিলেন তিনি। শিক্ষাবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। ইউজিসি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে। পরবর্তীতে দেশের শীর্ষ নেতা হয়েছিলেন মনমোহন সিং।

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংর প্রয়াণে রাজনৈতিক জগতে শোকের ছায়া। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও শোক বার্তা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে একজন সত্যিকারের রাজনীতিবিদ বলেছেন। হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে যে ধরনের সম্পর্ক এবং সহযোগিতা আজ রয়েছে তা মনমোহন সিংয়ের দূরদর্শিতা ছাড়া সম্ভব হতো না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন শনিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, ‘জিল (স্ত্রী) এবং আমি ভারতের জনগণের সঙ্গে যোগ দিচ্ছি।

আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে অভূতপূর্ব সহযোগিতার স্তর প্রধানমন্ত্রীর কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজনৈতিক সাহস ছাড়া সম্ভব হত না। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে প্রথম কোয়াড চালু করতে সাহায্য করা থেকে শুরু করে মার্কিন-ভারত বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি জাল করার ক্ষেত্রে মনমোহন সিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মার্কিন রাষ্ট্রপতি মনমোহন সিংকে ‘একজন সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়ক এবং নিবেদিতপ্রাণ জনসেবক’ বলে উল্লেখ করেন। জো বাইডেন মনমোহনকে ‘একজন দয়ালু এবং নম্র ব্যক্তি’ বলেও প্রশংসা করেছেন।

স্মৃতিচারণ করে মনমোহনের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা মনে করিয়ে জো বাইডেন লেখেন, তিনি ২০০৮ সালে সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান এবং ২০০৯ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

মনমোহন সিং ২০১৩ সালে নয়া দিল্লিতে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। আমরা তখন আলোচনা করেছিলাম মার্কিন-ভারত সম্পর্ক বিশ্বের সবচেয়ে পরিণতিমূলক।’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জো বাইডেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সাত দিন সমস্ত ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে কংগ্রেস।

বৃহস্পতি সন্ধ্যা ৮টা ১০ মিনিটে মনমোহন সিংকে এইমসের ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়, ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালন করা হবে। দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এককালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও ছিলেন তিনি। শিক্ষাবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। ইউজিসি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে। পরবর্তীতে দেশের শীর্ষ নেতা হয়েছিলেন মনমোহন সিং।