January 14, 2025

মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশে মায়ানমারের সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ?‌ বাংলাদেশের পর এ বার ভারত সীমান্ত মায়ানমারে আরাকান আর্মির দখলে

0
Mayanmer

কয়েকদিন আগেই রাখাইনের অধিকাংশ এলাকার দখল নেওয়ার দাবি করেছিল মায়নমারের বিদ্রোহীরা। আর এবার ভারতের মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে জুন্তা বাহিনীকে সরিয়ে ফেলার দাবি করল বিদ্রোহীরা। মায়ানমারের বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে রাখাইন প্রদেশের অধিকাংশ এলাকা। ভারতের মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখল নিল বিদ্রোহীরা। মায়ানমারের এই চিন প্রদেশেই থাকে সেই দেশের কুকি সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। বর্তমানে চিন প্রদেশের ৮৫ শতাংশ এলাকাই বিদ্রোহীদের দখলে। মায়ানমারের চিন প্রদেশে জুন্তা বিরোধী এই লড়াই চালাচ্ছে ‘চিন ব্রাদারহুড’ নামক গোষ্ঠী। আরাকান আর্মি তাদের সমর্থন করছে। ইরাবতীকে এই ব্রাদারহুডের মুখপাত্র ইয়াও ম্যাং বলেন, দক্ষিন চিন প্রদেশ জুন্তার কবল থেকে মুক্ত করেছে তারা। এখন শুধুমাত্র প্ররদেশের উত্তর দিকে অবস্থিত ফালাম এলাকায় কিছু জুন্তা বাহিনী আছে। ব্রাদারহুড হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ব্রাদারহুডের অধীনে আছে ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স, ইয়াও আর্মি, মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স নামক তিনটি সশস্ত্র সংগঠন।এছাড়া দক্ষিণ চিন প্রদেশের রাজধানী হাকহা, ফালাম, টেদিম এবং থান্টলাঙের শহুরে অঞ্চলে কিছু জুন্তা বাহিনী রয়েছে। তবে পালেটওয়া, মাটুপি, কানাপেলেট, মিন্দাত এবং টোনজাং শহরগুলিতে জুন্তা বাহিনীর পুরোপুরি পতন ঘটেছে। এই আবহে মিন্দাত থেকে ১৩ জন রাজনৈতিক বন্দিকেও মুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চিন ব্রাদারহুড। এর আগে সম্প্রতি মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের আন শহরও পুরোপুরি দখল করে নেয় বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। বিদ্রোহীরা এক বিবৃতি প্রকাশ করে এমনই দাবি করে। তার আগে বাংলাদেশের টেকনাফ লাগোয়া মংডু শহরটি দখল করেছিল আরাকান আর্মি। এবার মধ্য রাখাইনের এই আন শহরটি দখল করল বিদ্রোহীরা। জানা গিয়েছে, এই আন শহরেই মায়ানমারের জুন্তার আঞ্চলিক সেনা সদর দফতর ছিল। দ্বিতীয় কোনও আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ হারাল ক্ষমতাসীন জুন্তা। এর আগে গত অগস্টে চিন সীমান্তবর্তী শান প্রদেশের রাজধানী লাশিওতে অবস্থিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জুন্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। এই আবহে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। তার আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। ভোটপর্বের ভিডিয়ো কেন দেখতে চাওয়া যাবে না? নির্বাচনী বিধি বদল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেস। পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানো শুরু করে দিয়েছে। তাইল্যান্ডে নির্বাসিত মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’ খোলাখুলি বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। আর নতুনজোট চিন ব্রাদারহুড’ গঠিত হয়েছে চলতি বছরের গোড়ায়। ক্ষমতা দখলের চতুর্থ বর্ষপূর্তির দু’মাস আগে এ বার বিদ্রোহী বাহিনীর ‘ঘেরাটোপে’ জুন্টা ফৌজ।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed