স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার! এই গ্রামে নেই বিদ্যুত ইন্টারনেট!

অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্মা গ্রাম। শ্রীকাকুলাম শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেই গ্রামের বাসিন্দারা জীবনযাপন করেন প্রাচীন পদ্ধতিতে। ভারতেই এমন একটি গ্রাম। যেখানে ইন্টারনেট দূর অস্ত্, বিদ্যুৎই ব্যবহার করা হয় না। গ্যাস, আলো, পাখা, মোটর ব্যবহারের চল নেই সেই গ্রামে। মানুষ যে একবিংশ শতাব্দীতে বাস করছে, তা ওই গ্রামের বাসিন্দাদের দেখে বোঝার জো নেই।

সেই গ্রামের বাসিন্দারা সাফ জানিয়েছেন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন তাঁদের নেই। পুরনো ঐতিহ্য নিয়েই বেঁচে থাকতে স্বচ্ছন্দ্য। কুর্মা গ্রামের সব ঘরই ‘পেনকুটিল্লু’, যার অর্থ এমন বাড়ি যা চুন এবং কাদা দিয়ে তৈরি। প্রতিটি বাড়িতে প্রবেশ করার পরেই চোখে পড়বে একট হলঘর এবং হলঘর সংলগ্ন একটি ‘নাইয়া’ বা কুয়ো।‘নাইয়া’, জল সংরক্ষণের একটি ঐতিহ্যগত কৌশল, যা গৃহস্থালীর জল সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হয়।

প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ঢুকলেই হলঘরের ডান দিকে একটি পুজোর ঘর এবং তার পাশেই রান্নাঘরের দেখা মিলবে। রান্নাঘরগুলিতে খাবার রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জামের পাশাপাশি কাঠের উনুন। হলের বাঁ দিকে দু’টি শোওয়ার ঘর। শয়নকক্ষগুলিতে মাটির তৈরি ছোট ছোট কুটুরি রয়েছে। ওই কুটুরিগুলি জামাকাপড় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়।

কুর্মা গ্রামের বাসিন্দারা ঘরের মেঝে মাটি এবং গোবরের মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করেন। গ্রামবাসীদের দাবি, গোবর দিয়ে নিকনোর কারণে তাঁদের বাড়ির মেঝেয় ব্যাকটেরিয়ার বাসা বাঁধার আশঙ্কা কম।গোবর ও মাটির একই রকম প্রলেপ প্রতি সপ্তাহে বাড়ির দেওয়ালেও ব্যবহার করা হয়। কুর্মা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শৌচকর্ম এবং স্নানের জন্য পৃথক ঘর রয়েছে। পচনশীল বর্জ্য থেকে কুর্মার বাসিন্দারা বিশেষ ধরনের ছাই তৈরি করেন, যা পরে সার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।কুর্মা গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করার ঘোর বিরোধী। ওই দুই জিনিস গ্রামে ব্যবহার শুরু হলে ঐতিহ্য নষ্ট হবে। সে কারণেই বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট গ্রামে ঢুকতে দেননি।