February 11, 2025

সেমিনার হলে ধস্তাধস্তি কোথায়?‌ প্রতিরোধের চিহ্নই নেই!‌‌আরজিকর ধর্ষণ-খুন নিয়ে বিস্ফোরক সিএফএসএল রিপোর্ট

0
rgkar

কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে। সত্যি কি সেমিনার রুমে খুন, ধর্ষণ হয়েছিল নাকি অন্য কোথাও? অন্য কোথাও ধর্ষণ খুন করে সেমিনার রুমে নিয়ে আসা হয়েছিল দেহ? ক্রাইম সিন কি বদলানো হয়েছিল? সেমিনার রুমেই কি খুন হয়েছিলেন আরজি করের চিকিৎসক নাকি অন্য কোথাও খুন করে ওখানে ফেলে রাখা হয়েছিল? ফের নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আরজি কর মেডিক‍্যাল কলেজের সেই সেমিনার হলে নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার প্রতিরোধের কোনও চিহ্নই মেলেনি! এমনটাই বলছে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-র রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেমিনার হল তো নয়ই, এমনকি কাঠের পাটাতনে যে বিছানার উপর নির্যাতিতার দেহ শোয়ানো ছিল, সেখানেও প্রতিরোধের কোনও প্রমাণ মেলেনি।

সিএফএসএল ১২ পাতার রিপোর্ট। বলা হচ্ছে সকলের নজর এড়িয়ে প্রবেশ করা ও অপরাধ করে বেরিয়ে যাওয়া অত্যন্ত ক্ষীণ। এখানে ২৪ ঘণ্টা হাসপাতাল চালু থাকে। সেক্ষেত্রে সেই সেমিনার হলে কেউ ঢুকবে আর কেউ জানতে পারবেন না এটা কীভাবে সম্ভব? যে ম্যাট্রেসে পাওয়া গিয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ সেখানে ধর্ষণ খুনের সময় ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন মেলেনি। সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে সিএফএসএল রিপোর্টে। সেমিনার রুমে প্রতিরোধের বা ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। মহিলা চিকিৎসককে অন্য কোথাও ধর্ষণ-খুনের পর সেমিনার হলে ফেলে রেখে যাওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও দাবি করেছিল বিভিন্ন মহল। প্রশ্ন উঠছে, সিএফএসএল-এর রিপোর্ট সেই দাবিকেই ফের উস্কে দিল না তো? ৯ আগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই সময় কলকাতা পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। বেশ কিছু নথি, নির্যাতিতার আইডেন্টিটি কার্ড-সহ অন্তত ৪০টি জিনিস পাওয়া গিয়েছিল ঘটনাস্থল থেকে। তার মধ্যে অনেক কিছুই ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সিএফএসএলে। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তেভার হাতে পায় সিবিআই। সিএফএসএল রিপোর্টের শুরুতেই বলা হয়েছে, তদন্তভার পাওয়ার পর গত ১৩ অগস্ট সিএফএসএলের সাহায্য চায় সিবিআই। সেই মতো ১৪ অগস্ট (দেহ উদ্ধারের পাঁচ দিন পর) সিএফএসএলের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, কাঠের পাটাতনের উপর ওই বিছানা ছাড়া সেমিনার হলে আর কোথাও কোনও দাগ মেলেনি। বিছানা থেকে যে অবস্থায় নির্যাতিতার দেহ মিলেছিল ছিল, তাতে তাঁর মাথা এবং পেটের কাছের কাপড় ছেঁড়া ছিল। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের জানিয়েছিলেন, রক্তের দাগ ছিল বলে ওই অংশের কাপড় কেটে নেওয়া হয়েছিল। সেই নমুনা সিএফএসএলে পাঠানোও হয়েছে। কিন্তু আততায়ীর সঙ্গে নির্যাতিতার ধস্তাধস্তি বা তাঁর প্রতিরোধের কোনও প্রমাণ মেলেনি। অগোচরে আততায়ী সেমিনার হলে কী ভাবে প্রবেশ করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে রিপোর্টে। জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ৪ ও ৫ নম্বর পয়েন্ট দেখে আমাদের যা মনে হচ্ছে ওই জায়গায় ম্যাট্রেসে কোনও ধস্তিধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। আমারও এটা আগে বলেছি। এখন সিএফএসএল রিপোর্টেও সেটা বলছে। সেমিনার রুমেও ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। সেই সঙ্গেই ওই সেমিনার রুমে কেউ ঢুকবেন অথচ কেউ দেখতে পাবেন না এই সম্ভাবনা ক্ষীণ।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed