February 11, 2025

অশ্বিনের আচমকা সিদ্ধান্ত ঘোষণায় অবাক ক্রিকেট মহল!‌এত রেকর্ডের পরও টিকে থাকতে অনেক কিছু করতে হত অশ্বিনকে, বার্তা স্ত্রী’র?

0
10

অশ্বিনের জন্ম ১৯৮৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে। সেখানেই শুরু ক্রিকেট কেরিয়ার। অফ স্পিনার হিসাবে পরিচিতি পাওয়ার আগে ব্যাটার হিসাবেও তিনি নাম কুড়িয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ব্রিসবেনে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের তৃতীয় টেস্ট শেষ হতেই আচমকা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ব্রিসবেনে খেলা শেষে অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে যান অশ্বিন। তিনি বলেন, “আমার এখানে আসার কথা ছিল না। কিন্তু একটা কথা সকলকে জানানোর জন্য এসেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটাই আমার শেষ দিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আমি অবসর নিচ্ছি।”

অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দেশে ফিরেছেন অশ্বিন। চেন্নাইয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে পরিবার। অশ্বিন জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও তাঁর মধ্যে এখনও ক্রিকেট বেঁচে আছে। তবে এর পরে শুধুমাত্র ক্লাব স্তরে খেলবেন। ১৯৮৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে অশ্বিনের জন্ম। সেখানেই শুরু তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার। অফ স্পিনার হিসাবে পরিচিতি পাওয়ার আগে ব্যাটার হিসাবেও তিনি নাম কুড়িয়েছিলেন। আইপিএল-এ ‘চেন্নাই সুপার কিংস’-এর হয়ে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলার জেরে ভারতীয় দলে পাকাপাকি ভাবে জায়গা হয়ে যায় অশ্বিনের। দ্রুত দলের অন্যতম প্রধান স্পিনার হয়ে ওঠেন। বছরের পর বছর ধরে স্পিনের জাদুতে ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করেছেন অশ্বিন। কিন্তু জানা আছে কি মোট কত টাকার সম্পত্তি রয়েছে ভারতীয় এই অফ স্পিনারের?

২০২৪ সালের হিসাবে অশ্বিনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক ১৩০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের হিসাবে যা ছিল ১১৭ কোটি। অশ্বিনের আয়ের বড় অংশ আসে মূলত ক্রিকেট চুক্তি থেকে। যার মধ্যে বিসিসিআই থেকে বেতন এবং ম্যাচ ফি মিলিয়ে বার্ষিক ১০ কোটি টাকারও বেশি আয় করেন তিনি। আইপিএলে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেছেন অশ্বিন। প্রতি সিজ়নে পেয়েছেন ৫ কোটি টাকা করে। আসন্ন আইপিএলে আবার পুরনো দল চেন্নাই সুপার কিংসে ফিরছেন অশ্বিন। তাঁকে আবার হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে। এ বারের নিলামে অশ্বিনকে ৯.৭৫ কোটি টাকায় কিনেছে চেন্নাই।

‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হিসাবে মিন্ত্রা, ওপো এবং কোকা কোলার মতো বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অশ্বিন। সেখান থেকেও তাঁর আয় কোটিতে। রিয়্যাল এস্টেটে ২৬ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে অশ্বিনের। চেন্নাইয়ে যে বিলাসবহুল বাড়িতে তিনি এবং পরিজনেরা থাকেন, তার মূল্য ৯ কোটি টাকা। অশ্বিনের বিলাসবহুল গাড়ির শখ না থাকলেও সংগ্রহে রোলস রয়েস, অডি কিউ ৭-এর মতো বহুমূল্য গাড়ি রয়েছে। নিজস্ব ব্যবসাও রয়েছে অশ্বিনের। ‘ক্যারম বল’ নামে একটি মিডিয়া স‌ংস্থার মালিক। অশ্বিন ‘কিং অফ ক্যারম বল’ নামে পরিচিত। সেই নামেই সংস্থারও নাম দিয়েছেন। সংস্থাটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচার সংক্রান্ত কাজকর্ম করে।

অশ্বিনের নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১৬ লক্ষেরও বেশি। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অফ স্পিন বোলার হিসাবে বিবেচিত হন অশ্বিন। ভারতের হয়ে ১০৫টি টেস্টে ৫৩৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এক ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন ৩৭ বার। পাশাপাশি ৩৪৭৪ রানও করেছেন তিনি। রয়েছে ৬টি শতরান ও ১৪টি অর্ধশতরান। শচিনের সঙ্গে দু’বছর ভারতীয় দলে খেলেছেন অশ্বিন। ২০১১ সালে এক দিনের বিশ্বকাপজয়ী দলেও ছিলেন দু’জনই। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও সর্বাধিক উইকেট অশ্বিনের দখলে। গত নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই ম্লান অশ্বিন। অস্ট্রেলিয়াতেও একমাত্র অ্যাডিলেড টেস্ট ছাড়া বাকি দুই টেস্টে প্রথম একাদশে জায়গা পাননি। একটি উইকেট পান। অবশেষে অবসরের সিদ্ধান্ত টেস্টে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট শিকারির।‌

স্কুলে একসঙ্গে পড়তেন। সেইসময় নেহাতই ‘ক্লাসমেট’ ছিলেন। তাঁদের মধ্যেই যে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে, সেটা সম্ভবত কখনও ভাবতে পারেননি। আর এখন দু’জনে একে অপরের ‘সাপোর্ট সিস্টেম’ হয়ে উঠেছেন। আর সেই ‘সাপোর্ট সিস্টেম’-র একজন যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন, তখন আবেগ মাখা বার্তা দিলেন অপরজন। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর ঘোষণার পরে স্ত্রী প্রীতি বললেন, ‘ডিয়ার অশ্বিন, কীভাবে একটা কিটব্যাগকে একসঙ্গে রাখতে হয়, সেটা না জানা থেকে সারা বিশ্বের স্টেডিয়ামে তোমার সঙ্গে যাওয়া, তোমায় সমর্থন করা, তোমায় দেখা, তোমার থেকে শেখা- পুরো বিষয়টা অত্যন্ত আনন্দের হয়ে থেকেছে। তুমি যে দুনিয়ার সঙ্গে আমার পরিচিতি করে দিয়েছো, যা আমায় একেবারে কাছ থেকে এমন একটা খেলা দেখা এবং উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে, যে খেলাটাকে আমি ভালোবাসি। আর সেইসঙ্গে আমায় দেখিয়েছে যে বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকতে কতটা আবেগ, কঠোর পরিশ্রম এবং শৃঙ্খলার প্রয়োজন হয়। কখনও কখনও সেটাও যথেষ্ট হয় না।আমার মনে আছে যে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য কেন তোমায় এসব করতে হত এবং আরও বেশি কিছু করতে হত। তুমি যদি লাগাতার নিজের দক্ষতাকে আরও ক্ষুরধার না করে তোলো এবং সেটাকে কাজে করে দেখাও, তাহলে পুরস্কার, সেরা পরিসংখ্যান, ম্যাচের সেরার পুরস্কার, প্রশংসা এবং রেকর্ডের কোনও দাম থাকবে না। কখনও কখনও কোনও কিছুই যথেষ্ট হয় না। আর তুমি যখন নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ইতি টানলে তখন আমি তোমায় শুধু বলতে চাই যে সব ঠিক আছে। সবকিছু ঠিক হবে না। তুমি হওয়ার জন্য তোমার জন্য যে চাপ ছিল, সেটা কমিয়ে ফেলার সময় এবার।’ প্রীতির সেই আবেগমাখা বার্তার অংশ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে যে অশ্বিনের স্ত্রী কি কোনও ঘুরিয়ে বার্তা দিলেন? কারণ প্রীতি জানিয়েছেন যে এত রেকর্ডের পরও টিকে থাকতে অনেক কিছু করতে হত অশ্বিনকে। অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, তাহলে কি দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেকের থেকে অশ্বিনকে বেশি কিছু করতে হত, সেটা বোঝাতে চেয়েছেন প্রীতি?

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed