সিবিআই তদন্তে ভরসা হারিয়ে অনাস্থা প্রকাশ! বিচার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা আরজি করে নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলা। সিবিআই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মায়ের। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি। হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি। বাবা-মায়ের দাবি, মেয়ের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় লোপাট হয়ে গিয়েছে সব তথ্যপ্রমাণ। তদন্তে ভরসা করতে পারছেন না। অবিলম্বে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের আর্জি বাবা-মায়ের। নিম্ন আদালতে আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেকর্ড করা হয়েছে সাক্ষ্যদের বয়ানও। সেই পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট যদি অবিলম্বে হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে মাঝপথেই থমকে যাবে তদন্ত প্রক্রিয়া।
প্রশ্নের মুখে পড়েছে সিবিআই। কলকাতায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযান করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। ‘অভয়া মঞ্চ’-র তরফে গণজমায়েত। কেন ৯০ দিনের মধ্যে আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ঘটনায় সিবিআই চার্জশিট দাখিল করতে পারল না। সিবিআইয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখাও করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, সিবিআইয়ের তদন্তে আস্থা দেওয়া হয়েছে। তবে তাতে এখন পুরোপুরি ভরসা করতে পারছেন না। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এমন একটা সময়, যখন নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করতে না পারায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা পুলিশের প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মামলায় জামিন পেলেও আর্থিক দুর্নীতির মামলার কারণেই সন্দীপ জেলে আছেন। অভিজিতের জেলমুক্তি হয়েছে।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ দেবাশিস হালদার দাবি করেন, তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে সিবিআইয়ের উপরে আগে থেকেই চাপ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মতো ভয়ংকর অভিযোগে সন্দীপ এবং অভিজিৎকে গ্রেফতার করেও ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারল না। গোপন আঁতাতের কারণে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করেনি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেবাশিস। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে তুমুল ক্ষোভপ্রকাশ করেন আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। যখন সন্দীপদের জামিনের কথাটা শোনেন, তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তারপর বলেছিলেন, আশা হারালে তো চলবে না। বিচার ছিনিয়ে আনতেই হবে। মেয়ে সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠছিলেন বলে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।