ভারতীয় ফুটবলকে সাহায্য করতে প্রস্তুত ক্যাম্পবেল, দৌড়ের আসরে ফিটনেস নিয়েই বার্তা দিতে চান ক্যাম্পবেল

ইংল্যান্ড তথা আর্সেনালের প্রাক্তন ফুটবলার সল ক্যাম্পবেল কলকাতায়। টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে-র আন্তর্জাতিক দূত হিসেবে। শহরে এসেছেন গতকাল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনাল বুকায়ো সাকার জোড়া গোল ও কাই হাভের্ৎজের গোলের সৌজন্যে ৩-০ গোলে হারিয়েছে এ এস মোনাকোকে। আর্সেনালে পাঁচ বছরে ১৯৫টি ম্যাচ খেলা সল ক্যাম্পবেল হাজির ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। পায়ে ফুটবল নিয়ে দেখালেন স্কিল আর ড্রিবলিংয়ের ঝলক দেখালেন। দু-বার প্রিমিয়ার লিগ, তিনবার এফএ কাপ জিতেছেন। ২০০৩-০৪ মরশুমে অপরাজেয় থেকে প্রিমিয়ার লিগ জেতে আর্সেনাল। সেই দ্য ইনভিন্সিবলসের অন্যতম সদস্য এই ক্যাম্পবেল। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ১-২ গোলে হারে আর্সেনাল। একমাত্র গোলটি ক্যাম্পবেলের। টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে আর্সেনালে যোগ দেওয়ার পর প্রবল কটাক্ষ ও সমালোচনার মুখে পড়লে সেই প্রথম মরশুমের অভিজ্ঞতাকেই অসাধারণ বলে অভিহিত করলেন ক্যাম্পবেল।

ক্যাম্পবেলের কথায়, ফিগো ছাড়াও আর কেউ এত নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ও চাপে ছিলেন বলে মনে হতো না। রাস্তায়, ট্রেনে, কোথাও খেতে গেলে সর্বত্র যা পরিস্থিতি ছিল তাতে মনে হতো প্রেসার কুকারের মধ্যে রয়েছি। সব সময় মানুষ নজর রাখতেন। সেই পরিস্থিতি সামলাতে হয়েছে। কলকাতায় এলেন এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। এর আগে ক্যাম্পবেল কলকাতায় এসেছিলেন অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের সময় ইংল্যান্ড বনাম স্পেন ফাইনাল দ্বৈরথের সময়। ক্যাম্পবেলের কথায়, ইংল্যান্ড জেতায় খুশি হয়েছিলাম। দারুণ খেলেছিল। ফিল ফোডেন, কনর গ্যালাঘাররা সেই দলে ছিলেন। কলকাতায় যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন তাতে আপ্লুত ক্যাম্পবেল। বিমানবন্দরে ছবি তুলেছেন। অটোগ্রাফ দিয়েছেন আর্সেনালের জার্সিতে। তাঁর কথায়, আর্সেনালের হয়ে যে খেলেছি সে কারণেই এত ভালোবাসা পাই বিশ্বের নানা জায়গায়। কলকাতাও ব্যতিক্রমী নয়।

কলকাতার ফুটবল আবেগ সম্পর্কেও ভালোই ওয়াকিবহাল ক্যাম্পবেল। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের সময়ই ক্যাম্পবেল বুঝে গিয়েছিলেন, কীভাবে এই শহরের ফুটবলপ্রেমীরা খেলা উপভোগ করেন। ফুটবলের ঐতিহ্যই যে উঠতি প্লেয়ারদের উৎসাহিত করে সেটাও জানিয়ে দিলেন এই তারকা। জামাইকার পরিবার থেকে উঠে এলেও ক্যাম্পবেল ক্রিকেটের খুঁটিনাটি বিশেষ বোঝেন না। তবে ফুটবল, ক্রিকেট বা ম্যারাথন- সব খেলাকেই উৎসাহিত করে থাকেন। ফিটনেসের ক্ষেত্রে খেলাধুলোর গুরুত্বের কথাই বারবার উঠে আসে তাঁর কথায়।

ভারতে ফুটবলে কোচিং করানোর প্রস্তাব পেলে তিনি রাজি বলেও জানান ক্যাম্পবেল। তিনি বলেন, কলকাতায় ফুটবলের উন্মাদনা টের পেয়েছি। ভারতেও ফুটবলের বিকাশ ঘটছে। ভারতীয় ফুটবল প্রতিভাদের সবরকম সহযোগিতার জন্য তিনি প্রস্তুত বলেও জানালেন ক্যাম্পবেল। এরই মধ্যে উঠে এলো ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের কথা। ক্যাম্পবেল বললেন, আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে আমার গোলটা বাতিল না হলে আমরা সেই ম্যাচ জিততে পারতাম। ব্রাজিল ম্যাচে রিভাল্ডো ও রোনাল্ডিনহোর মাঝে পড়ে গিয়েছিলাম। রিভাল্ডোর শট মিস করেছিলাম। সামান্য গতিপথ পরিবর্তন হলে ডেভিড সিম্যান সেটি বাঁচাতে পারতেন।

টিএসডব্লিউ ২৫কে প্রসঙ্গে বলেন, রবিবার এই ইভেন্ট দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। স্মরণীয় প্রতিযোগিতার সাক্ষী থাকতে চাই। আমার ধারণা এই ইভেন্ট ফিটনেস ও দৌড়ের বিষয়ে সকলকে উৎসাহিত করবে। কেন না, ফিটনেসের ক্ষেত্রে দৌড়ের গুরুত্ব অপরিসীম। দৌড় স্ট্যামিনা থেকে ফিজিক্যাল টেনাসিটি বাড়ায়। আমার ফুটবল কেরিয়ারেও ফিটনেসের বিষয়ে দৌড়ের বিকল্প ছিল না।

দৌড়ের আসরে ফিটনেস নিয়েই বার্তা দিতে চান ক্যাম্পবেল। তাঁর ফিটনেস রহস্যের বিষয়ে বললেন, যখন খেলি না বা ট্রেনিং করি না তখন হাঁটাচলা, মাংস কম খাওয়ার মতো বিষয়গুলি থাকে আমার ফিটনেস রুটিনে। অবসর জীবনে হাঁটা, টেনিস খেলার কথাও জানালেন ক্যাম্পবেল।