কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আল-বশির! সিরিয়া থেকে সুরক্ষিতভাবে বের করা হল ৭৫ ভারতীয়কে
নরেন্দ্র মোদী, এস জয়শংকরদের তৎপরতা সিরিয়ায়। বিদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষাকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয় মোদি সরকার। ৭৫ জন ভারতীয়কে সিরিয়া থেকে বের করে লেবাননে আনা হয়েছে। ৪৪ জনই জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। তাঁদের আনতে যান খোদ ভারতের রাষ্ট্রদূত নুর রহমান শেখ।
সিরিয়ার কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মহম্মদ আল-বশিরের নাম ঘোষণা। দামাস্কাস কবজা করেছে বিদ্রোহীরা। আকাশপথে হামলা ইজরায়েলি ফৌজেরও। অগ্নিগর্ভ সিরিয়া। ভারতীয়দের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু। ৭৫ জন ভারতীয়কে লেবাননে নিয়ে আসা হয়েছে। বাণিজ্যিক উড়ানে সকলকেই ভারতে নিয়ে আসা হবে। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি, ‘ভারত সরকার ৭৫ জন ভারতীয়কে সিরিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে আজ। সেদেশের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে চোখ রেখেই এই সিদ্ধান্ত। এঁদের মধ্যে রয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৪ জন জাইরিন। তাঁরা সাইদা জাইনাবে আটকে ছিলেন।’ সিরিয়ায় থাকা বাকি ভারতীয়দের উদ্দেশে কেন্দ্রের তরফে আর্জি দামাস্কাসের ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করতে। +৯৬৩৯৯৩৩৮৫৯৭৩ নম্বরে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ অথবা hoc.damascus@mea.gov.in ইমেল আইডিতে মেল করার কথা জানানো হয়। সরকার পুরো পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে সিরিয়ায়। আকাশ বাতাস কেঁপে ওঠে একনায়ক হঠাও, গণতন্ত্র ফেরাও স্লোগানে। শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ। এই লড়াই তীব্র আকার ধারণ করে চলতি বছরের নভেম্বরে। ২৭ তারিখ আসাদ বাহিনীর হয়ে লড়তে অস্বীকার করে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লা। সিরিয়ার অন্যতম প্রধান শহর আলেপ্পোর একটা বড় অংশ দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। যাদের মাথায় রয়েছে আল কায়দার শাখা সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। ১৩ দিনের হামলা পালটার পর আসাদ বাহিনীকে পর্যদুস্ত করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী। একের এক পর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সিরিয়ার রাজধানী। আকাশপথে হামলা চালায় ইজরায়েলি ফৌজ। নিশানায় মূলত সেনাঘাঁটিগুলো। দামাস্কাসের পাশাপাশি হোমস শহর ও একাধিক বিমানবন্দরেও ইজরায়েল হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
দামাস্কাসে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৯০ জন ভারতীয় থাকতেন সিরিয়ায়। এখন ৭৫ জনকে উদ্ধারের পরে যে ভারতীয়রা সিরিয়ায় রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। আল-জাজিরার সাক্ষাৎকারে বশির বলেছেন, ‘এখন (সিরিয়ায়) স্থায়িত্ব এবং শান্তি উদযাপনের করার সময়।’ অন্যদিকে বিদ্রোহীদের নেতা আবু মহম্মদ আল-জোলানি ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, নতুন করে সিরিয়াকে গড়ে তোলা হবে। যুদ্ধের কারণে মানুষ তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা আর যুদ্ধ চান না। তাই আর যুদ্ধও হবে না। জেলানির ঘনিষ্ঠতম ব্যক্তিদের তালিকায় বশিরের নাম থাকা ব্যক্তিকেই কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে।