February 11, 2025

বাংলাদেশে হিংসার আগুন জ্বলছেই! ঘরের ভিতর পুড়ে মারার অভিযোগ আওয়ামি লিগ নেতার দুই আত্মীয়াকে, ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হাসিনা?

0
Seikh Hasina

লেলিহান হিংসার আগুন বাংলাদেশে। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কোণঠাসা আওয়ামি লিগ। দলের নেতাদের উপর লাগাতার চলছে অত্যাচার। রবি রাতে মৌলভীবাজারে আওয়ামি লিগ নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটাল দুষ্কৃতীরা। ঘরের ভিতর থেকে বেরতে না পেরে পুড়েই মৃত্যু হল ওই নেতার মা ও কাকিমার। রবিবার লন্ডনে আওয়ামি লিগের বিশাল সমাবেশে ভারচুয়াল ভাষণে ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন। তার পরই আওয়ামি লিগ নেতার বাড়িতে আগুনের ঘটনায় ফের অভিযোগের আঙুল উঠল বিরোধী ইউনুস সরকারের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের দিকে। পরিকল্পিত খুন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে আওয়ামি লিগের তরফে। মৌলভী বাজার সদর উপজেলার ১১ নম্বর মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ রুমেল আহমেদের বাড়িতে হামলা। জেলা যুব লিগের সহ-সভাপতিও। অভিযোগ, রবি রাতে তাঁরই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় চরমপন্থীরা। রুমেলের মা ও কাকিমার আগুনের লেলিহান শিখায় ঘরের ভিতরেই পুড়ে মৃত্যু হয়। জেলা ছাত্র লিগ নেতা হেলালের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে। রবিবার লন্ডনে হাসিনা সমর্থকদের সমাবেশে ছাত্র লিগের প্রচুর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তার জেরেই এই পালটা হামলা ইউনুসের নেতৃত্বে, বলে অভিযোগ।

আমেরিকার পরে রবিবার ব্রিটেনের এক সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটেনে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা সেই সভার আয়োজন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেই সভাতেই ভাষণ দেন হাসিনা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে তিনি আঙুল তুললেন বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে। হাসিনা এ-ও দাবি করেছেন, তিনি কাউকে খুন করেননি। যাঁরা এখন খুন করছেন, তাঁদের বিচার এক দিন হবেই বলেই মন্তব‍্য করেন মুজিবুর-কন‍্যা।। আওয়ামী লীগের সভায় হাসিনা দাবি করেন, বাংলাদেশে এখন ‘অরাজকতা’ চলছে। নাগরিকদের কোনও শান্তি নেই সেখানে। ঘরে শান্তিতে ঘুমোনোর উপায় নেই। চুরি, ডাকাতি হচ্ছে। যে কোনও সময় তদন্ত হতে পারে। এই তদন্তের নির্দেশ কে দিচ্ছেন? বাংলাদেশের মানুষের এখন ‘ন্যায়বিচার’ চাওয়ার অধিকার নেই। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। অথচ এখন বন্যা, ঝড় গেল, কিন্তু তার পরে কেউ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। আজ জনপ্রতিনিধিরা থাকলে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। গত অগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর হেনস্থা, নির্যাতনের অভিযোগ। সরকারি কর্মীদের এই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে। ‘মিথ্যা মামলা’ থেকে রেহাই দিতে হবে। কাজে ফেরাতে হবে। মাস্টারমাইন্ড’ ইউনূস এটাই প্রমাণ করেছেন যে, এঁরা অপরাধী। যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, আগুন ধরানো হয়েছে, তদন্ত করে তাঁদের বিচার করতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দোষ থেকে মুক্ত করার অধিকার ইউনূস সরকারের নেই। জনবিক্ষোভের সময় ‘শক্তি প্রয়োগ’ করিনি। যদি তা করতাম, তা হলে বহু মানুষের প্রাণ যেত। আমি শক্তি প্রয়োগ করলে লাশ পড়ত। আমি চাইনি মানুষের প্রাণ যাক। পুলিশ রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। ইউনূস মাস্টারমাইন্ড, খুনি, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী। আবু সাঈদের হত্যার জন্য এই মাস্টারমাইন্ডরাই দায়ী। তাঁরা চেয়েছিলেন, লাশ ফেল, তা হলে সরকার পড়ে যাবে। ওঁরা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলছে হাসিনার বিচার করবে। কী বিচার করবে? আমি কী অন্যায় করেছি? আমার হাত দিয়ে কোনও খুন হয়নি। আমি মানুষের জীবন নিতে আসিনি। জনপ্রতিনিধি হিসাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সুযোগও পাইনি। এক জন জনপ্রতিনিধি অপর এক জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে। আমি তো সেই সুযোগ পাইনি। বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর লুট হয়েছে। মন্দির, গির্জা ধ্বংস করা হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইউনূস সরকার শেয়ার মার্কেটে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। কোথায় গিয়েছে? ব্যাঙ্ক বসে যাচ্ছে। কেন অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে?‌ এই অন্ধকার শীঘ্রই কেটে যাবে। নতুন সূর্য উদিত হবে।’ প্রশ্ন, ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়ে তবে কি ধীরে ধীরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন হাসিনা?

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed