যুব বাস্কেটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল হাওড়ায়, জাতীয় চ্যাম্পিয়ন রাজস্থানের ছেলেরা ও কর্ণাটকের মেয়েরা
উদ্বোধনের মতোই জমজমাট সমাপ্তি অনুষ্ঠান। হিন্দি, বাংলা, ভাটিয়ালি, পাঞ্জাবী গানের তালে উদ্দাম নাচ চ্যাম্পিয়ানদের। একদিকে নৃত্যে রত কর্ণাটকের মেয়েরা। অপর প্রান্তে রাজস্থানী ছেলেরা। ঠিক যেমন ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতে মাঠেই নেচেছিলেন বিরাট কোহলিরা। বাস্কেটবলের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই পেশাদার নৃত্যশিল্পীদের নৃত্যকে হার মানালেন সোনার পদকজয়ী ছেলেমেয়েরা। সবুজ সাথী নামাঙ্কিত হাওড়া ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হল ৩৯তম জাতীয় যুব বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। পুরুষ বিভাগে কর্ণাটককে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান। মহিলা বিভাগে তামিলনাড়ুকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় কর্ণাটক। জয়ের পর উচ্ছাসে মেতে ওঠেন বিজয়ী টিমের খেলোয়াড়রা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাস্কেটবল সংস্থাকে।
বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট চন্দন রায়চৌধুরী-সহ বিশিষ্টজনেরা। উপস্থিত ছিলেন বাস্কেটবল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া ও ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। ফাইনাল প্রতিযোগিতার পর জয়ী এবং রানার্স দলের খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা। এই দুই সংস্থার উদ্যেগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। গত ২৯ নভেম্বর জাঁকজমকভাবে শুরু হয়েছিল যুব জাতীয় বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। কিংবদন্তি টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ ও বাংলা চলচিত্র তারকা আবীর চট্টোপাধ্যায়ের মতো তারকারা। শণি-বিকেলে রেডরোডের লাগোয়া বাস্কেটবল টেন্টে ভিড় জমিয়েছিলেন দেশের প্রায় সবকটি রাজ্য থেকে আসা অংশগ্রহনকারীরা। একইভাবে ফাইনালের দিনও হাওড়ার ইন্ডোর স্টেডিয়াম মুখরিত শব্দব্রম্ভে।
এ বছর যুব বাস্কেটবলে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ান রাজস্থান দলকে দেওয়া হয় তিন লক্ষ টাকা পুরস্কার। রানার্স কর্ণাটক ২ লক্ষ টাকা এবং তৃতীয় স্থানাধিকারী তামিলনাড়ু ১ লক্ষ টাকা। মেয়েদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ান কর্ণাটক, রানার্স তামিলনাড়ু এবং তৃতীয় স্থানাধিকারী হরিয়ানা। সেরা খেলোয়াড়রা পান প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা। মেয়েদের ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার কর্ণাটকের অধিনায়ক শ্যুটিং গার্ড নিধি উমেশ। ছেলেদের বিভাগে ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার রাজস্থান দলের পাওয়ার ফরোয়ার্ড ভূপেন্দ্র সিং রাঠোর। সর্বোচ্চ স্কোরার রাজস্থান দলেরই স্মল ফরোয়ার্ড পিয়ুস চৌধুরী।
কলকাতায় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল যুব জাতীয় বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০১২-১৩ সালে শেষবার ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যুব জাতীয় বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করেছিল। ২০২৪-২৫ এ আয়োজিত হল কলকাতাতেই। সরকারী অনুষ্ঠান থাকার কারণে কলকাতা ও হাওড়ায় প্রতিযোগিতার খেলাগুলো পরিচালনা করতে হয়। ওয়েস্টবেঙ্গল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন ও বাস্কেটবল ফেডরেশন অব ইন্ডিয়া যৌথভাবে আয়েজিত ৩৯ তম যুব জাতীয় বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দখলের প্রতিদ্বন্দিতা ২৯ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম অর্থাৎ সবুজ সাথী স্টেডিয়ামে এবং রেড রোড লাগোয়া বাস্কেটবল টেন্টে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বলা হয় চ্যাম্পিয়নশিপে মোট ১,২০০ খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করবেন। মণিপুর, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, চন্ডীগড়, মধ্যপ্রদেশ, কেরালা, দিল্লি, আসাম, গোয়া, মহারাষ্ট্র,মিজোরাম, পুডুচেরি, ঝাড়খন্ড, উত্তরাখন্ড, ওড়িশা, জম্মু কাশ্মীর, অরুণাচলপ্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাব, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, বিহার, হিমাচলপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ এমনকী আন্দামান ও নিকেবরের বাস্কেটবল দল অংশগ্রহন করেছে। অনূর্দ্ধ ১৭ বালক বালিকারাই কেবল অংশগ্রহন করেছিলেন এই প্রতিযোগিতায়। শেষবার এই টুর্নামেন্টের পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রাজস্থান এবং রানার্স আপ হয়েছিল পাঞ্জাব। অন্যদিকে, মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা উঠেছিল তামিলনাড়ুর মাথায়। রানার্স আপ হয়েছিল কর্নাটক।