‘নয়া ভারতে সংবিধানকে শেষ করা হবে’, রাহুল-প্রিয়াঙ্কার সম্ভল যাত্রা আটকাল পুলিশ
সম্ভলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। সম্ভলের পথে বাধা। ফেটে পড়লেন রাহুল। রাহুলের অভিযোগ, হিংসা কবলিত মানুষের সঙ্গে দেখা করতে না দিয়ে পুলিশ তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছে। রাহুলের দাবি, তিনি বিনা কনভয়তেই সম্ভলে যেতে প্রস্তুত। পুলিশ তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তাঁকে কয়েকদিন পরে সেখানে যেতে বলেছে পুলিশ। গাজিপুর সীমান্তে কনভয় আটকান হল লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং তাঁর বোন তথা কংগ্রেসের সদ্য নির্বাচিত সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার। দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে যেতে চাইলেও যেতে দেওয়া হয়নি।
রাহুল বলেন, ‘আমরা সম্ভলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। তবে পুলিশ আমাদের অনুমতি দিচ্ছে না। সংসদের বিরোধী দলনেতা হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। কিন্তু তাঁরা আমাকে বারণ করছে। সেখানে একা যেতেও রাজি। পুলিশ আমার সঙ্গে যাক সেখানে। পুলিশ সেই কথাও শুনছে না। পুলিশ বলছে, আমরা কয়েকদিন পরে এলে সেখানে যেতে দেবেন। তবে বিরোধী দলনেতা হিসেবে আমার অধিকার এতে খর্ব হচ্ছে। আমার সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। আমরা শুধু সম্ভলে গিয়ে দেখতে চাই সেখানে কী হচ্ছে। কিন্তু এটাই নয়া ভারত। এই ভারতে সংবিধানকে শেষ করে দেওয়া হবে। আমরা লড়াই জারি রাখব।’
https://x.com/ANI/status/1864184531412242579?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1864184531412242579%7Ctwgr%5E1189697d11dd9f2c91c1ee21a1202829daa3155b%7Ctwcon%5Es1_c10&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.sangbadpratidin.in%2Findia%2Frahul-priyanka-on-the-way-to-sambhal-stopped-at-the-ghazipur-border%2F
উত্তেজনা উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে। পরিস্থিতির নেপথ্যে আছে এক মসজিদ। এই আবহে সম্ভলে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই আজ সম্ভলে যাওয়ার চেষ্টা করেন রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। সম্ভলের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেন্দ্র পেনসিয়া বুলন্দশহর, আমরোহা, গাজিয়াবাদ এবং গৌতম বুদ্ধ নগর সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছেন যাতে রাহুল গান্ধীকে তাঁদের জেলা সীমান্তেই থামিয়ে দেওয়া হয়। গৌতম বুদ্ধ নগর ও গাজিয়াবাদের পুলিশ কমিশনারদের পাশাপাশি আমরোহা ও বুলন্দশহরের পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়েছেন সম্ভলের জেলাশাসক। পুলিশ গাজিপুরে আটকে দেয় রাহুলকে।
২৪ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের সম্ভল এলাকায় নতুন করে শাহি জামা মসজিদের সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়। আদালতের নির্দেশেই মুঘল জমানার এই মসজিদে সমীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এই আবহে রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ এলাকায় পৌঁছে যান সমীক্ষক দলের সদস্যরা। সেই দলে ছিলেন জেলাশাসক রাজেন্দ্র পানসিয়া, পুলিশ সুপার কৃষ্ণ বিষ্ণোই, মহকুমাশাসক বন্দনা মিশ্রা, সার্কেল অফিসার অনুজ চৌধুরী এবং তহসিলদার রবি সোনকর। সমীক্ষা চলাকালীন যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিরাট বাহিনী এবং ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছিল সেখানে। পুলিশ নিয়ে সমীক্ষকরা সেই এলাকায় পৌঁছতেই উত্তেজনাছড়িয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় সংঘর্ষ। আর মুহূর্তে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয়রা। একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। হামলাকারীদের কেউ কেউ গুলিও চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন বন্দুকে ব্যবহৃত আলাদা আলাদা বুলেটের শেল উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। এদিকে সংঘর্ষে মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আদালতের নির্দেশ অনুসারে সম্ভলের ওই মসজিদে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর কেলা দেবী মন্দির কমিটির তরফ থেকে চনদৌসির একটি আদালতে মামলা রুজু করা হয়। মামলাকারীদের দাবি, সম্ভলের শাহি জামা মসদিজ আসলে শ্রী হরিনাথ মন্দির। সম্রাট বাবরের শাসনকালে, ১৫২৯ সালে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিচারক আদিত্য সিং ওই দিনই মসজিদের ভিডিয়োগ্রাফি সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো সমীক্ষা হয় সেই মসজিদে। নিম্ন আদালতের সমীক্ষার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় জামা মসজিদ কর্তৃপক্ষ। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ দাবি জানায়, সমীক্ষার নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিতে হবে। সরাসরি স্থগিতাদেশ না দিলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, মসজিদে সমীক্ষা নিয়ে নিম্ন আদালত এখন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।