বাংলাদেশ মৌলবাদীদের মুক্তাঞ্চল? ‘বন্ধুত্বের পরিপন্থী’!চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের জবাব বাংলাদেশের
হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনে সংখ্যালঘু নির্যাতন লাগামছাড়া আকার নিয়েছে বাংলাদেশে। এই ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘের প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইউনুস সরকার। পরিস্থিতি শোধরাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বাংলাদেশের ইউনুস সরকার। বরং নয়া আইন এনে এবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মুখ সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিবৃতিতে ইউনুস সরকার দাবি করেছে, বাংলাদেশ সরকার দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। এমনকী সে দেশের বিচারব্যবস্থাও নাকি নিরপেক্ষ।
হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারিতে জ্বলছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম-সহ দেশের একাধিক প্রান্তে পথে নেমেছে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। স্বাভাবিক ভাবেই পড়শি দেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ভারত। নয়াদিল্লির সেই বিবৃতির জবাব দিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি, “ভারত সরকার চিন্ময় প্রভুকে নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটা তথ্যগতভাবে ভুল, ভিত্তিহীন এবং বন্ধুত্বের পরিপন্থী।”
চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি এবং জামিন না পাওয়া নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, “চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি এবং জামিন না পাওয়ার ঘটনা আমরা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি। ইনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান মুখ। এর আগে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন, অত্যাচার, খুন এবং ঘরবাড়ি লুঠ করার ঘটনা ঘটেছে। এর পর এই গ্রেপ্তারি ও জামিন না পাওয়া এটাই স্পষ্ট করে, বাংলাদেশ মৌলবাদীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে এবং লাগাতার সেখানে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চলছে। আমরা বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু ও অন্যান্য সকল বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। শুধু তাই নয়, তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার সুনিশ্চিত করুক বাংলাদেশ প্রশাসন।”
‘ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাই’, প্রিজন ভ্যান থেকে বার্তা চিন্ময় প্রভুর, ‘জয় শ্রীরামে’ কাঁপল চট্টগ্রাম। প্রিজন ভ্যান থেকেই চিন্ময় প্রভু বার্তা দিলেন, ‘আমরা কোনও দল বা সরকারের বিরুদ্ধে নই, আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ।’ সেখানেই জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন হিন্দুরা। সোমবার বিকেলে চিন্ময় প্রভু ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয় এই হিন্দু সন্ন্যাসীর। চিন্ময়কে আদালতে পেশের আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল আদালত চত্বরে। জামিন খারিজ হতেই গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। প্রিজন ভ্যান আটকে চলতে থাকে বিক্ষোভ। হিন্দুদের বিক্ষোভ থামাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। উত্তাল এই পরিস্থিতিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে নিপীড়িত হিন্দুদের মুখ চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ইউনুস সরকারকে কড়া প্রতিক্রিয়াও দিয়েছে ভারত সরকার।