মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু! ঠিক যে অভিযোগে কেজরিওয়াল জেলে গিয়েছিলেন?
দুর্নীতির ঘনঘটার রাজ্য জুড়ে। এরি মাঝে আরও এক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ করে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্যের আবগারি নীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রকাশ্যে আনছেন না বলে অভিযোগ। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘আপনি বেভারেজ করপোরেশন অফ বেঙ্গলকে তুলে দিলেন। সেটা সরকারের করপোরেশন। আপনি দিল্লির এক্সাইজ পলিসির মতো এখানে চারটে ডিস্ট্রিবিউটরকে ডেকে আনলেন মদের জন্য। আমি ৩ বার আরটিআই করেছি। কিন্তু রাজ্য সরকার আমাকে এক্সাইজ পলিসি দিচ্ছে না। আপনি তো লুকাতে চাইছেন। আপনি নিজে দুর্নীতি করাচ্ছেন, করছেন, সুরক্ষা দিচ্ছেন এবং দুর্নীতির টাকায় আপনার দল চলছে।’
মুখ্যমন্ত্রী যখন কয়লা, বালি পাচারের জন্য রাজ্য পুলিশের নিচু তলার একাংশকে দায়ী করছেন তখন পালটা মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ শুভেন্দু বলেন, ‘জল জীবন মিশনে যে ঠিকাদার বরাত পেয়েছেন তিনি ২০২১ সালে IPACকে ১২ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। সাইকেলেও দুর্নীতি আছে। প্রতি বছর রাজ্য সরকার ২০ লক্ষ সাইকেল কেনে। তার মধ্যে কেন্দ্রের একটা বড় টাকা আছে। আপনি এক একটা সাইকেল কিনেছেন ৭,৯৪৮ টাকায়। ৫ বছর ধরে দাম বদলায়নি।’
শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, ‘শুধু বালি – কয়লার ঘাড়ে দোষ চাপালে হবে না, এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে আপনার প্রত্যক্ষ মদতে আপনার দল, আপনার ঘনিষ্ঠ লোকেরা, আপনার পরিবারের সদস্যরা তারা সিন্ডিকেট করে টাকা তুলছে না। আপনি বিরোধী দলনেতাকে আহ্বান করুন। আমি তথ্য সরবরাহ করার কাজ করব। তার আগে যে সমস্ত চিটিংবাজ সংস্থার কাছ থেকে ইলেক্টোরাল বন্ডে টাকা তুলেছেন সমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে সংস্কার করে দেখান।’
পুলিশের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে পালটা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ইলেক্টোরাল বন্ডে ওনার পুলিশের কিছু আইপিএস অফিসার, কিছু আমলারা যে টাকা তুলে দিয়েছেন সেটা প্রকাশ্যে আনুন মুখ্যমন্ত্রী। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘উনি ড্যামেজ রিপেয়ারিংয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে স্ববিরোধিতা আছে। সঠিক তথ্য উনি দিচ্ছেন না। আমি ওনাকে ধরিয়ে দিলাম। উনি যদি সত্যিই স্বচ্ছতা রেখে এগুলোর ইতি টানতে চান তাহলে ইলেক্টোরাল বন্ডে ওনার পুলিশের কিছু আইপিএস অফিসার, কিছু আমলারা যে টাকা তুলে দিয়েছেন সেটা প্রকাশ্যে আনুন।’
নবান্নে এক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজীব কুমারকে বলছি, কিছু জিনিসের প্রতি যত্ন নেও। হয়তো তুমি চেষ্টা করো, কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সাহায্য করছে না। সবাইকে বলছি না, একাংশ। পলিটিক্যাল নেতাদের নামে সবাই বদনাম করে বেশি। পাঁচ টাকা খেলে ৫০০ টাকা বলে দেয় চোর। পলিটিক্যাল নেতারা টাকা খাওয়ার আগে ১০ বার ভাবে। জনগণের টাকা খাওয়া কি উচিত? তাদের নিজস্ব একটা দায়বদ্ধতাও থাকে। কিন্তু নিচুতলার কিছু অফিসার, কিছু কর্মী, যারা এই গরমেন্টকে ভালোবাসে না এবং তোমার পুলিশেরও কিছু লোক, তারা টাকা খেয়ে আজকে বালি চুরি বলো, কয়লা চুরি বলো, সিমেন্ট চুরি বলো…। চুরি হলে তখন বলবে কয়লা চুরি করছে তৃণমূল কংগ্রেস আর চুরি করবে সিআইএসেফ টাকা খেয়ে বা পুলিশের একাংশ টাকা খেয়ে আমি এটাকে টলারেট করব না। যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকও খায় তার কলার চেপে ধরো। তাকে আইনের প্যাঁচে ধরো। আইনত জেলে পাঠাও। এখানে কোনও অজুহাত আমি শুনতে চাই না।’
মমতার দাবি, ‘আমার দরকার নেই এক পয়সাও। বার বার আমি বলি। প্রয়োজনে আমি দলের নির্বাচন করানোর জন্য লোকের কাছে আঁচল পেতে টাকা নেব। আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না কোনও সরকারের কাছ থেকে বা কারও কাছ থেকে আমি এক পয়সা নিয়েছি। কোনও কারণে। অন্য কেউ যদি নিয়ে থাকে তুমি ছাড়বে কেন? প্রত্যেকের জন্য আইন সমান ভাবে কার্যকর হওয়া উচিত। সেখানে কোনও বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কেউ কেউ ভাবে, একে ম্যানেজ করি, ওকে ম্যানেজ করি। করে তোলাবাজি করি। তারা বাঁচাবে। কেউ বাঁচাবে না। আমি তো বাঁচাব না। আমার কাছে কোথাও না কোথাও থেকে তো খবর আসবেই।’