ছবি বিক্রি অতীত, ‘আঁচল পেতে টাকা নেব’ : মমতা ‘রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধতা আছে, তারা জনগণের টাকা খাওয়ার আগে ভাবে, পুলিশ ভাবে না’
রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে রাজ্যের ফসল ভিনরাজ্যে যাওয়ার পথ খুলে দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতারা জনগণের টাকা খাওয়ার আগে ১০ বার ভাবে, পুলিশের নিচুতলার কিছু অফিসার কর্মী তা ভাবে না।’ আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৈঠকে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজীব কুমারকে বলছি, কিছু জিনিসের প্রতি যত্ন নেও। হয়তো তুমি চেষ্টা করো, কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সাহায্য করছে না। সবাইকে বলছি না, একাংশ। পলিটিক্যাল নেতাদের নামে সবাই বদনাম করে বেশি। পাঁচ টাকা খেলে ৫০০ টাকা বলে দেয় চোর। পলিটিক্যাল নেতারা টাকা খাওয়ার আগে ১০ বার ভাবে। জনগণের টাকা খাওয়া কি উচিত? তাদের নিজস্ব একটা দায়বদ্ধতাও থাকে। কিন্তু নিচুতলার কিছু অফিসার, কিছু কর্মী, যারা এই গরমেন্টকে ভালোবাসে না এবং তোমার পুলিশেরও কিছু লোক, তারা টাকা খেয়ে আজকে বালি চুরি বলো, কয়লা চুরি বলো, সিমেন্ট চুরি বলো…।’
কোনও চুরির ক্ষেত্রে পুলিশকে কড়া হওয়ার নির্দেশ দিয়ে মমতা বলেন, ‘চুরি হলে তখন বলবে কয়লা চুরি করছে তৃণমূল কংগ্রেস আর চুরি করবে CISF টাকা খেয়ে বা পুলিশের একাংশ টাকা খেয়ে আমি এটাকে টলারেট করব না। যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকও খায় তার কলার চেপে ধরো। তাকে আইনের প্যাঁচে ধরো। আইনত জেলে পাঠাও। এখানে কোনও অজুহাত আমি শুনতে চাই না।’মমতার দাবি, ‘আমার দরকার নেই এক পয়সাও। বার বার আমি বলি। প্রয়োজনে আমি দলের নির্বাচন করানোর জন্য লোকের কাছে আঁচল পেতে টাকা নেব। আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না কোনও সরকারের কাছ থেকে বা কারও কাছ থেকে আমি এক পয়সা নিয়েছি। কোনও কারণে। অন্য কেউ যদি নিয়ে থাকে তুমি ছাড়বে কেন? প্রত্যেকের জন্য আইন সমান ভাবে কার্যকর হওয়া উচিত। সেখানে কোনও বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কেউ কেউ ভাবে, একে ম্যানেজ করি, ওকে ম্যানেজ করি। করে তোলাবাজি করি। তারা বাঁচাবে। কেউ বাঁচাবে না। আমি তো বাঁচাব না। আমার কাছে কোথাও না কোথাও থেকে তো খবর আসবেই।’
২০১১ সালের ভোটে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে দরকারে ছবি বিক্রি করে দল চালাবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা। এর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কয়েকটি ছবি চড়া দামে বিক্রিও হয়। কিন্তু ২০১৩ সালে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে আর ছবি বিক্রির কথা মুখে তোলেননি। উলটে প্রথম থেকেই লাল সালু পেতে ও কৌটো নাচিয়ে সিপিএম পয়সা তোলে বলে লাগাতার কটাক্ষ করেছেন তিনি ও তাঁর দলের নেতারা। এবার সেই মমতার মুখে শোনা গেল আঁচল পেতে টাকা চাওয়ার কথা।