‘দালালরাই সমাজটাকে শেষ করছে’ আলুর দাম বৃদ্ধি, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বাজারে গিয়ে আলুর দামে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। মারাত্মক সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ। আলুর দামে রাশ টানতে মাঠে নামলেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার আলু বাইরে চলে যাচ্ছে। বাংলার আলু বর্ডার দিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। দালালরা সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে। বাংলার আলুর দাম বাড়িয়ে মুনাফা বৃদ্ধি করা চলবে না। অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরোকে শক্তিশালী হতে হবে। টাস্ক ফোর্সকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন মমতা। নতুন আলু বাজারে আসার আগে পর্যন্ত ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের উপর দৃশ্যত ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। কেন তাঁকে না জানিয়ে আলু রফতানি করা হয়েছে? নজরদারি কোথায় ছিল? তা নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করে বলেন, “সব আলু বেরিয়ে গিয়েছে। মাথায় রেখো। আজ আলুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
অন্য রাজ্যে আলুর দামের সঙ্গে বাংলায় আলুর দামের তুলনাও টানতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অন্য রাজ্যে আলু সরবরাহ করে নিজের রাজ্যে দাম বৃদ্ধি হবে, এই যুক্তির মানে হয় না।” রাজ্যের চাহিদা পূরণ হওয়ার পরই ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোর পক্ষপাতী মুখ্যমন্ত্রী। আন্তঃরাজ্য সীমানা দিয়ে আলু ভিন্রাজ্যে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশ দেন। পেঁয়াজ রফতানি নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলা এখনও পেঁয়াজে ‘স্বনির্ভর’ নয়। ভিন্রাজ্য থেকে এখনও পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যে পেঁয়াজ চাষ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও কেন অর্ধেক ভিন্রাজ্যে রফতানি হয়ে যাবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। টাস্ক ফোর্সকে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেন।
মিটিংয়ে উপস্থিত এক ব্যক্তিকে রীতিমতো ধমক দিয় মমতা বলেন, দাঁড়ান মশাই, কথা কম বলুন না। আমি তো জানি, এত কথা বলছেন কেন? অন্যদিকে দুর্নীতি, টাকা তোলা নিয়েও সরব মমতা বলেন, আমার এক পয়সাও চাই না। আমি বার বার বলছি। আমার নির্বাচনের জন্য দরকার হলে আঁচল পেতে টাকা নেব। আজ পর্যন্ত বলতে পারবে না সরকারের কাজে এক পয়সা নিয়েছি। একই আইন সকলের উপর সমানভাবে প্রয়োগ করা দরকার। সংবাদমাধ্যমে বলছি পজিটিভভাবে দেখুন। নেগেটিভ বলে দেখার চেষ্টা করবেন না। তাহলে তো স্বচ্ছতা মেনটেন করে কোনও কাজ করতে পারব না। আমাদের ৫০ শতাংশ যদি বাইরে বিক্রি হয়ে যায়! আমরাই টাকা দেব, জমি উর্বর করার জন্য টাকা দেব, সংরক্ষণের জন্য টাকা দেব…যারা চাষি তারা করে না। যারা মিডলম্যান আছে তারা এসব করে। যারা দালালি করে সমাজটাকে শেষ করে দিল। দালালির টাকা একে ওকে তাকে ভাগ দেয়। এটা যাতে না হয়, সকলকে এনিয়ে টেক কেয়ার করতে হবে। অ্যান্টি করাপশনকে শক্তিশালী করো। সিআইডিকে ফের ঢেলে সাজাব। কমপ্লেন এলে ক্রশ চেক করো। অনেক সময় ভুল অভিযোগও আসে। ’
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়েও বড় ঘোষণা করে মমতা বলেন,’ ২৪ হাজারের মতো লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুরোধ পেয়েছিলাম। ডিসেম্বর মাসে ৫ লাখ ৭ হাজার মহিলাকে যুক্ত করা হচ্ছে। টাকা তারা ডিসেম্বর মাসে পেয়ে যাবে। ৬৫০ কোটি ২০ লক্ষ টাকার বেশি অতিরিক্ত খরচ হবে। যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তারা এটা পেয়ে যাবে। অন্যান্য জায়গায় অনেক শর্ত আছে। আমাদের এসব নেই। সকলের জন্য এটা।