অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা! অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরির আগে তলব এক পুলিশ অফিসারকে
আরজি কর কাণ্ডে নয়া সূত্রের খোঁজে সিবিআই। তলব এক পুলিশ অফিসারকে। ঘুরবে তদন্তের মোড়? টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরির আগে ডাকা হল এক পুলিশ অফিসারকে। সংশ্লিষ্ট এই পুলিশ আধিকারিককে আগেও ডেকে জেরা করেছিল সিবিআই। আরজি কর খুন এবং ধর্ষণ মামলায় শীঘ্রই চার্জশিট পেশ করা হতে পারে অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। সোদপুরের ঘোলা থানার প্রাক্তন আইসি কৌশিক সরকারকে তলব আরজি কর মামলার তদন্তের স্বার্থে। আরজি কর কাণ্ডের সময় ঘোলা থানার দায়িত্বে থাকা অফিসারকে বদলি করে হুগলিতে পাঠানো হয়েছে। ৯ আগস্টের সেই রাতে নির্যাতিতার দেহ বাড়িতে পৌঁছনোর পর কী কী ঘটেছিল, সেই সব ঘটনাক্রম জানতে তলব করা হয়েছে কৌশিক সরকারকে।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী ট্রেনি চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে নয়া প্রমাণের খোঁজ শুরু করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের তদন্তকারী আধিকারিকরা। এহেন পরিস্থিতিতে ফের আরজি কর হাসপাতালের পাঁচটি ডিভিআর ও পাঁচটি হার্ডডিস্ক পরীক্ষার জন্য সিএফএসএলে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর আগেও আরজি কর হাসপাতালের একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষার জন্য সিএফএসএল-এ পাঠিয়েছিল সিবিআই। ডিভাইসগুলি পাঠিয়ে সিবিআই জানতে ইচ্ছুক, চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর হাসপাতালের সার্ভার থেকে কোনও তথ্য মুছে ফেলা হয়েছিল কি না। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পর তথ্য লোপাটের অভিযোগ উঠেছে টালা থানার তৎকালীন ওসি এবং আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। দু’জনেই আপাতত জেলে। তাঁদের বিরুদ্ধে এবার চার্জশিট দিতে পারে সিবিআই।
আরজি কর হাসপাতাল এবং টালা থানায় ৮ এবং ৯ অগস্টের সিসি ক্যামেরা ফুটেজের একাংশ মুছে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রযুক্তির সাহায্যে সেই মুছে যাওয়া ফুটেজের প্রায় ৭০ শতাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ফুটেজের ফরেন্সিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে। ফুটেজ মুছে ফেলা হলেও ফরেন্সিক পরীক্ষায় ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার থেকে তার অনেকটা অংশ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। সেই পদ্ধতিতেই আরজি কর কাণ্ডে অনেকটা মুছে ফেলা ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। এই আবহে সেই সিবিআই আধিকারিকের কথায়, ‘তরুণী চিকিৎসক খুনে যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ছিল এবং সেই পরিকল্পিত অপরাধকে যে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটা অনেকটাই পরিষ্কার।’
সন্দীপ ও অভিজিতের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে পারে সিবিআই। দাবি, সেই চার্জশিটে খুন, ধর্ষণের বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং প্রমাণ লোপাটের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি তথ্য উল্লেখ। আর তার আগে এবার ফের সিএফএসএলে পাঠানো হল ডিভিআর এবং হার্ডডিস্ক। গত ৮ আগস্ট গভীর রাতে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গার ফুটেজ এবং অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধির ফুটেজের আরও কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করছে সিবিআই। সন্দীপ এবং অভিজিতের ফোনের কল লিস্টের ফরেন্সিক রিপোর্ট মিলিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা। বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার সূত্রের খোঁজে সিবিআই।