উদ্ধার লটারি দুর্নীতির নগদ ১২ কোটি, অভিযুক্ত সংস্থার মালিক ৫৪০ কোটি দিয়েছিলেন তৃণমূলকে
পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার ইডির। নোটের পাহাড়। কত টাকা ইডি উদ্ধার করেছে, সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হল কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফ থেকে। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, মেঘালয় এবং পঞ্জাবের মোট ২২টি জায়গায় সম্প্রতি হানা দিয়েছিল ইডি। ‘লটারি কিং’ নামে খ্যাত সান্তিয়াগো মার্টিনের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করেছেন ইডি আধিকারিকরা। ফিক্স ডিপোজিট সংক্রান্ত নথিও ইডির হাতে। ইডি সূত্র, ২২ জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট ১২.৪১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। ৬.৪২ কোটির ফিক্সড ডিপোজিট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। সান্তিয়াগোর ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিও এই অভিযানে বাজেয়াপ্ত করে ইডি।
১৪ নভেম্বর লেক মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে ইডি বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধার করে টাকা গোনার জন্য মেশিনও নিয়ে যাওয়া হয়। ৩ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেটের কাছে একটি লটারির অফিসে হানা দেয় ইডি। দেশ জুড়ে এই অভিযানে মোট ১২ কোটি ৪১ লাখ টাকা উদ্ধার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এসবিআই-এর নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল গত মার্চ মাসে। তালিকাতে, ২০১৯ সাল থেকে রাজনৈতিক দলগুলিকে সবথেকে বেশি অনুদান দিয়েছে ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। পরিমাণটা ছিল ১৩৬৮ কোটি টাকা। তৃণমূল পেয়েছিল ৫৪০ কোটি এবং ডিএমকে পেয়েছিল ৫০৯ কোটি টাকা। সান্তিয়াগোর সংস্থার বিরুদ্ধেই জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি।
সান্তিয়াগো মার্টিনের চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ, মায়ানমারের রেঙ্গুনে একজন দিনজুর শ্রমিক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং তামিলনাড়ুতে একটি লটারি ব্যবসা শুরু করেন। পরে তিনি সেই ব্যসবা কর্ণাটক এবং কেরলে ছড়িয়ে দেন। পরে উত্তর-পূর্ব ভারতেও নিজের ব্যবসার প্রসার ঘটানের পরে ভুটান এবং নেপালেও নিজের লটারি ব্যবসা চালু করেন। লটারি ব্যবসায় সাফল্য পাওয়ার পরে তিনি নির্মাণ, রিয়েল এস্টেট, টেক্সটাইল এবং হোটল সহ অন্যান্য ব্যবসায় হাত পাকিয়েছিলেন সান্তিয়াগো। এদিকে ২০১৯ সাল থেকে অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে সান্তিয়াগোর সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কেরল ও সিকিম সরকারের লটারির টিকিট বিক্রিতে কারচুপির অভিযোগে সংস্থাটির বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল সিবিআইএর।