ভারত থেকে হাসিনাকে গ্রেফতার করা হবে? ইন্টারপোলের দ্বারস্থ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার!

বাংলাদেশ কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পড়েই গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বিশেষ সেনা বিমানে আসেন ভারতে। তারপর থেকে ভারতেই অজ্ঞাত ঠিকানায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ভারত থেকে হাসিনাকে গ্রেফতার করে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরাবে ইউনূস সরকার? বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চরমে থাকাকালীন গোপনে দেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার আগে ইস্তফা দিয়ে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে। আশ্রয় নেন ভারতে। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে তৈরি অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ সহ শতাধিক মামলা দায়ের করে। হাসিনাকে দেশে ফেরাতে বড় পদক্ষেপ করার ভাবনা ইউনূস সরকারের। শোনা যাচ্ছে, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হতে পারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যা চালিয়ে যারা পালিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ধরার জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে নেট কর্নার নোটিস জারি করব আমরা। দ্রুত এই নোটিস জারি করা হবে। তারপর তাঁরা যেখানেই থাকুন না কেন, গ্রেফতার করে বাংলাদেশে আনার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ করা হবে।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করলেও, এই হুঁশিয়ারি যে তাঁর উদ্দেশ্যেই ছিল। শেখ হাসিনা ছাড়াও তাঁর সঙ্গে আওয়ামি লীগ দলের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধেও রেড কর্নার নোটিস জারি করতে পারে ইউনূস সরকার। রেড কর্নার নোটিস জারি করে অন্য দেশ থেকে কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনার তোরজোড় চলছে। হাসিনার বিরুদ্ধে যদি রেড কর্নার নোটিস জারি হয়, তবে ভারত থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে ইউনূস সরকার। আপাতত ভারতেই অজ্ঞাত ঠিকানায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ইন্টারপোলে রেড কর্নার নোটিস জারির সম্ভাবনা। হাসিনাকে ফেরাতে প্রত্যর্পণ চুক্তির পথে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ‘মাথা’ থেকে শুরু করে সিনেমার পরিচালক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারে আরও তিন ‘মন্ত্রী’ অন্তর্ভুক্ত হলেন। রবি সন্ধ্যায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বাসভবনে শপথগ্রহণ করেন মাহফুজ আলম, মোস্তফা সরয়ার ফারুকি এবং শেখ বশিরউদ্দিন। শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। ফারুকিকে সংস্কৃতি মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বশিরউদ্দিনকে বাণিজ্য, পাট এবং বস্ত্র মন্ত্রকে বসিয়েছেন মহম্মদ ইউনুসরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মাহফুজের হাতে আপাতত কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ২০১৫-১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র ছিলেন মাহফুজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক পিছন থেকে পুরোটা সামলাতেন। তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’-ও বলা হয়। যে আন্দোলনের জেরে হাসিনা সরকারের পতন হয়। সেজন্য ‘পুরস্কার’-ও পান মাহফুজ। তাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনুসের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়। এবার তাঁকে ‘মন্ত্রী’ করা হল। ফারুকি আবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকা তিশার স্বামী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন পুলিশের প্রাক্তন আইজি খোদা বকশ চৌধুরী। শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সায়েদুর রহমান।