মোদির ডোনাল্ড ‘ট্রাম্প’ কার্ডের দখলে সাদা বাড়ি! ফের হোয়াইট হাউসের পথে আমেরিকার ইতিহাসে দ্বিতীয় ‘বাজিগর’’
‘জাদুসংখ্যা’ পার, ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে ডোনাল্ড, আমেরিকায় ‘ফির এক বার ট্রাম্প সরকার’ ,‘ইলেক্টোরাল কলেজ’-এর ভোটে জয়ী হওয়ার অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রদেশটি সেই প্রার্থীর দখলে যাবে। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। জাদুসংখ্যা ২৭০।১৩২ বছর পর ফের এমন ঘটনা। ২০২০ সালে হেরেও হার মানতে অস্বীকার করেছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে ফের একবার হোয়াইট হাউজ দখল করতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে এভাবে শুধুমাত্র এক একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ৪ বছর পরে ফের হোয়াইট হাউজের বাসিন্দা হয়েছিলেন। গত নির্বাচনে হারার পরও ফের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছেন। সাম্প্রতিক ইতিহাসে আমেরিকায় এমনটা দেখা যায়নি। শেষবারের মতো রিচার্ড নিক্সন এমনটা করেছিলেন। লাগাতার তিনটি নির্বাচনে লড়াই করে প্রথম এবং তৃতীয় দফায় জেতা দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৮৯২ সালের মার্কিন নির্বাচনে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড জয়ী হয়েছিলেন। এই ডেমোক্র্যাট ১৮৮৫ থেকে ১১৮৯ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরপর ১৮৮৮ সালে অনুষ্ঠিত ভোটে তিনি হেরে গিয়েছিলেন। তবে ১৮৯২ সালে ফের তিনি নির্বাচনে জিতে আমেরিকার ২৪তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।
২০১৬ সালে সারা দেশের প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে হিলারি ক্লিনটনের থেকে ৩০ লাখে পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। জয়ী হয়েছিলেন ইলেক্টোরাল কলেজে। হোয়াইট হাউজে ঢোকার টিকিট পেয়েছিলেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারার পর ২০২৪ সালে ফের ঘুরে দাঁড়ালেন ট্রাম্প। রাজনীতিতে পা রাখার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন এক ব্যবসায়ী। তবে এরই সঙ্গে টিভির পর্দাতেও তাঁকে দেখা যেত নানান অনুষ্ঠানে। এছাড়াও নানান বিতর্কও তাঁর সঙ্গী হয়েছে বিগত দিনে। ২০১৬ সালে পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় মোট ৩৪টি অভিযোগের সবকটিতেই দোষী সাব্যস্ত হন ট্রাম্প। এই আবহে ট্রাম্পই প্রথম ‘প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট’, যিনি কি না ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। প্রথম মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়েছিলেন ট্রাম্প। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েও ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন এই রিপাবলিকান।একটি নির্বাচনে হারের পর ফের ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৩২ বছর পুরনো ইতিহাস ছুঁলেন ট্রাম্প।
জাদুসংখ্যা স্পর্শ ট্রাম্পের। জয়ের সম্ভাবনা স্পষ্ট হতেই ফ্লোরিডাতে তাঁর জন্য মঞ্চ সাজল। সেখানেই তাঁর দলের সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। জয়ের পথ প্রশস্ত হতেই ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমাজমাধ্যমে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কিছু পুরনো ছবি পোস্ট করে মোদী লেখেন, ‘‘চলুন একসঙ্গে কাজ করি!’’ ভারত এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার আহ্বান জানালেন তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্ব শান্তি, স্থিতি বজায়ে মিলিত ভাবে কাজ করার কথাও বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।এই নির্বাচনের আগে মোদী বন্দনা শোনা গিয়েছিল ট্রাম্পের গলায়। তিনি বলেছিলেন, ‘মোদী বিরাট নেতা। মহান মানুষ। সত্যিই বড় মাপের লোক। উনি দারুণ কাজ করেছেন। কিন্তু, ওনার দেশ খুব চড়া হারে শুল্ক আদায় করে। ওনাকে আপাতভাবে দেখলে মনে হবে খুবই ভালো মানুষ। উনি আমার খুব ভালো বন্ধু। দারুণ লোক। বাইরে দেখে মনে হবে, উনি যেন আপনার অভিভাবক। তবে তিনি কিলার। ওটাও তাঁর অসামান্য এক ক্ষমতা।’ এদিকে কয়েক মাস আগে মোদীর মার্কিন সফরের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে সেই সফরকালে সময় করে উঠতে পারেননি মোদী।