‘আমি আজ রাতে নবান্নে থাকব’ ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দুর্যোগের নিশিতে অতন্দ্র প্রহরী মমতা! ‘বাংলাটা ওদের জল হজম করার জায়গা হয়ে গিয়েছে’, ডিভিসিকে ফের তোপ মমতার
ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রাতে নবান্নে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের নিজের দফতর থেকে সমগ্র পরিস্থিতির দিকে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে নজর রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে দামি মানুষের জীবন। তাই জীবন বাঁচানোটা অত্যন্ত জরুরি। সেখানে যেন কারও সমস্যা না হয়। রাতভর নবান্নে থেকেই সেটা পর্যবেক্ষণ করব।’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্যোগের আশঙ্কা আছে এমন জায়গাগুলি থেকে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯৪১ মানুষকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৮৫১টি ক্যাম্প খোলা হয়েছে। নানা ত্রাণ শিবিরগুলিতে ৮৩ হাজার ৫৮৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। নবান্নে সর্বক্ষণের হেল্পলাইন নম্বর চালু থাকবে। নবান্নের হেল্পলাইন নম্বর (০৩৩) ২২১৪৩৫২৬/১০৭০। জেলাগুলিতেও চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন।
বিদ্যুতের বিপর্যয় এবং লোডশেডিং, ফল্ট হলে ডব্লিউবিএসইডিসিএল হেল্পলাইন নম্বর—৮৯০০৭ ৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭ ৯৩৫০৪, আর সিইএসসি’র হেল্পলাইন নম্বর—০৩৩ ৩৫০১ ১৯১২, ০৩৩ ৪৪০৩ ১৯১২, ১৮৬০৫০০১৯১২ এবং ১৯১২ ফোন করতে হবে। নবান্নের হেল্পলাইন নম্বর (০৩৩) ২২১৪৩৫২৬/১০৭০।
আরও এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা উপকূলে। ল্যান্ডফল হতে পারে ধামরা ও ভিতরকণিকার মাঝামাঝি কোনও স্থানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলার উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কলকাতাতেও। এবার আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় নিশানা করেন ডিভিসিকে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দাপটে এখন রাজ্যের ৯টি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দুর্যোগ ঠেকাতে প্রত্যেক জেলায় প্রশাসনিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগের আশঙ্কায় আগাম সতর্কতা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে খোলা আছে কন্ট্রোল রুম। নবান্নেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে যোগাযোগ রাখা হবে জেলাগুলিতে। বিপদ যাতে না ঘটে তার জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র মধ্যেই ডিভিসি জল ছেড়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আবার ডিভিসি গতকাল জল ছেড়েছিল। বাংলা তো জল হজম করার জায়গা হয়ে গিয়েছে। কলকাতায় জল জমলেও নেমে যায়। পাম্পিং সিস্টেমের উন্নতি হয়েছে। ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নতি হয়েছে। পলি সরানোর কাজটাও আমরা করেছি। বাড়ি তৈরির সময় রাস্তায় ইট, বালি ফেলে রাখা হয়। নর্দমা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের এটা বোঝা উচিত। যাতে নর্দমা বন্ধ না হয়। সাধারণ মানুষের বিপদ না হয়।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘ডিভিসি বুধবার আবার ২৪ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আবারও ছাড়বে। বাংলাটা যেন ওদের জল হজম করার জায়গা হয়ে গিয়েছে। ডিভিসির জলধারণ ক্ষমতা আগের থেকে ৩৬ শতাংশ কমে গিয়েছে। ড্রেজিং না করার জন্যই এটা হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয় না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও লাভ হয়নি।’
বিদ্যুতের বিপর্যয় এবং লোডশেডিং, ফল্ট হলে ডব্লিউবিএসইডিসিএল হেল্পলাইন নম্বর—৮৯০০৭ ৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭ ৯৩৫০৪, আর সিইএসসি’র হেল্পলাইন নম্বর—০৩৩ ৩৫০১ ১৯১২, ০৩৩ ৪৪০৩ ১৯১২, ১৮৬০৫০০১৯১২ এবং ১৯১২ ফোন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি খননটা ঠিকভাবে করে থাকত এবং পলি পরিষ্কার করত তাহলে অনেক বেশি জলধারণ করতে পারত। বাংলার মানুষকে বলব, একটা রাতের জন্য দয়া করে রাজ্য সরকারের ঘোষণা মতো ক্যাম্পে এসে থাকুন। জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে না।’