বঙ্গ ক্রিকেটে ‘তিনটি’ ভিন্ন চিত্র! সৌরাশিস লাহিড়ির তত্বাবধানে বিনু মাঁকড় ট্রফির ফাইনালে বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দল,বাংলার মেয়েরা হারাল মণিপুরকে, অভিষেক হৃষিতার
২০১৩ সালে শেষবার এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছিল বাংলা দল। সৌরাশিস লাহিড়ির তত্বাবধানে এই বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দল এবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে গুজরাতের বিরুদ্ধে আগামী ২৬ অক্টোবর। ১১ বছর পরে বিনু মাঁকড় ট্রফির ফাইনালে বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দল। রঞ্জিতে বাংলার সিনিয়র দল খুব একটা সুবিধেজনক জায়গায় নেই। অথচ বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দল বিনু মাঁকড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিল। ১১ বছর পর টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল বাংলার যুব দল। রাজকোটে সেমিফাইনালে ছত্তিশগড়ের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দল। ১৩১ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়।
ছেলেদের পারফরম্যান্স দেখে বেজায় খুশি সৌরাশিস। তিনি বলন, ”এটা সম্পূর্ণ দলগত সাফল্য। দলের প্রত্যেকটি ছেলে নিজেদের কাজ দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছে। এই জয়ে আমি বেজায় খুশি। বিশাল দারুণ খেলেছে। অঙ্কিত ও আশুতোষও দারুণ পারফর্ম করল। সেমিফাইনালের মত ম্য়াচে যেভাবে চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রেখেছে ছেলেরা, তা সত্যিই দারুণ।” বাংলার বিশাল ভাটি ম্যাচের সেরা হন ১১৭ বলে ১১১ রানের ইনিংস খেলে। বল হাতেও ২২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন। ওপেনার অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায় ১০২ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলেন। অগ্নিশ্বর দাস ৪২ রান করেন। আশুতোষ কুমার ৩০ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নেন বাংলার হয়ে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান বোর্ডে তুলে নেয় বাংলা অনূর্ধ্ব ১৯ দল। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ৪১.২ ওভারে ১৫৪ রানে অল আউট হয়ে যায় ছত্তিশগড় অনূর্ধ্ব ১৯ দল।
এদিকে, ‘দানা’র প্রভাবের কথা মাথায় রেখে আর সেই আবহেই ২৫-২৮ অক্টোবর সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বাংলা বনাম কেরল রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ রয়েছে। যে ম্যাচ আগে ছিল কল্যাণীতে। কিন্তু ভিজে মাঠের জন্য কল্যাণীতে বাংলা বনাম বিহার ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পর বিতর্কের মুখ বাংলার পরের ম্যাচ সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে সল্ট লেকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই সল্ট লেকের মাঠ ঢেকে রাখা হয়েছে। যাতে বৃষ্টিতে মাঠের ক্ষতি না হয়। দানার ঝাপ্টায় ম্যাচের সময়ে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা। আর তাতে ভেস্তে যেতে পারে ম্যাচ। সেই কারণেই ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে বোর্ডের দ্বারস্থ হয়েছে সিএবি। বোর্ডের সচিব জয় শাহ, যিনি শীঘ্রই আইসিসি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিতে চলেছেন, তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছে সিএবি।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা সহ সমস্ত জেলায় শুরু বৃষ্টি। কলকাতার আকাশের মুখ ভার। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আকাশ কালো হয়ে রয়েছে। দিনের বেলাতেও সন্ধ্যার মতো অন্ধকার নেমে যাচ্ছে মাঝে মধ্যেই। আর সেই পরিস্থিতিতে কলকাতায় ও কল্যাণীতে রয়েছে বাংলার জোড়া বোর্ড ম্যাচ। সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বাংলার রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ রয়েছে কেরলের বিরুদ্ধে। কল্যাণীতে রয়েছে বাংলা বনাম রেলওয়েজ অনূর্ধ্ব ২৩ ম্যাচ। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে যে দুই ম্যাচ হওয়া নিয়েই রয়েছে অনিশ্চয়তা। সিএবি-র তরফে দুই ম্যাচই পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল বুধবার। সিএবি কর্তারা আশায় ছিলেন, বোর্ড রাজি হলে ম্যাচ সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা যাবে।
কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের জবাবে বিষণ্ণতা বঙ্গ ক্রিকেটে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বাংলা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা সিএবি-কে জানিয়ে দিয়েছে, ম্যাচের সূচি পাল্টানো যাবে না। সেক্ষেত্রে পরের সব ম্যাচের সূচিতেই তার প্রভাব পড়বে। রঞ্জি ট্রফি এত বড় প্রতিযোগিতা যে, একটি ম্যাচের সূচি পাল্টাতে হলে গোটা টুর্নামেন্ট নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে। যা কার্যত অসম্ভব বলেই জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বোর্ডের জবাব। ম্যাচের সূচি পাল্টানো সম্ভব নয়। হতাশা বঙ্গ ক্রিকেট মহলে। বিশেষ করে রঞ্জি ট্রফি নিয়ে। আগের ম্যাচই পরিত্যক্ত হওয়ায় গ্রুপের দুর্বলতম দল বিহারের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগ করে নিতে হয়েছিল বাংলাকে। শুক্রবার থেকে কেরলের বিরুদ্ধে ম্যাচ। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে দুর্যোগের কারণে অন্তত ২ দিনের খেলা নষ্ট হতে পারে। যার অর্থ, সরাসরি ফলের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। লক্ষ্মীরতন শুক্লা, অনুষ্টুপ মজুমদারদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
এদিকে,সিনিয়র উইমেন্স টি২০ ক্রিকেটে মনিপুরকে হারাল বাংলার মেয়েরা। বাংলা সিনিয়ার দলে অভিষেক হৃষিতা বাসুর। ক্যাপ পরিয়ে দিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী।