‘হাততালি দেবেন না’,গান গেয়েই চুপচাপ কলকাতার মঞ্চ ছাড়লেন শ্রেয়া! আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদী শিল্পী, কলকাতায় এসে গাইলেন, ‘রক্তের সোঁদা গন্ধে…’!

আরজি কর কাণ্ঢের প্রতিবাদে গান গাইলেন শ্রেয়া। ১৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় শ্রেয়া ঘোষালের কনসার্ট করার কথা ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, তা স্থগিত রাখা হচ্ছে। এরপর শনিবার পারফর্ম করে ভুললেন না প্রতিবাদে স্বর চড়াতে। আরজি কর আবহে সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতার কনসার্ট পিছিয়ে দিয়েছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল। প্রায় দু মাস পর, কলকাতায় পা রাখলেন বাংলার এই গায়িকা। স্টেজে উঠেও তাঁর গলায় প্রতিবাদের সুর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান, ‘কলকাতার বুকে যে বর্বর এবং পাশবিক ঘটনা ঘটেছে সেটার জন্য আমি ভীষণ ভাবে দুঃখিত। আমি একজন মহিলা হয়ে মেয়েটার সঙ্গে আচরণ করা হয়েছে, যে বর্বরতার শিকার হয়েছে সে সেটা ভাবলেই যেন শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বয়ে যাচ্ছে। তাই ব্যথিত হৃদয় এবং অত্যন্ত মনোকষ্ট নিয়ে জানাচ্ছি যে আমি এবং ইশক এফএম আমাদের কনসার্ট শ্রেয়া ঘোষাল লাইভ, অল হার্টস ট্যুর ইশক এফএম গ্র্যান্ড কনসার্ট পিছিয়ে দিচ্ছি। এটা আগে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এবার এটা অক্টোবর মাসে হবে।’
১৯ অক্টোবর স্টেজে উঠে প্রতিবাদে সরব শ্রেয়া গেয়ে উঠলেন, ‘যত ইচ্ছের ভাঙা ডানা, যত গল্প নজরবন্দি / যত সন্ধের যাওয়া মানা, যত রাত্রির অভিসন্ধি / সব মিথ্যের আর ধন্দের, তাই রক্তের সোঁদা গন্ধে / শুধু পৌঁছে যাবে, ঘুচে যাবে, বেঁধে রাখা গণ্ডি / এ যে শরীরের চিৎকার, জাগে ভাঙনের শব্দে / তাই ভাঙে পাড়, ভাসে ঘর, ভাঙে চেনা সূপ্তি’ / এ যে শরীরের চিৎকার, জাগে ভাঙনের শব্দে / তুমি বন্ধু আজ শুনবে…’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল গায়িকার এই পারফরমেন্স।
এমন প্রতিবাদের নজির আগে কখনও দেখেনি শহর কলকাতা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তখন দর্শকে ছয়লাপ। এতবছর ধরে প্রতিটা কনসার্টেই সর্বশেষ গান হিসেবে ‘মেরে ঢোলনা’ গেয়ে এসেছেন। এবার গেয়েছেন আরজি করের নির্যাতিতাকে উদ্দেশ্য করে একটি গান। গাওয়া শেষ করে শ্রেয়া বললেন, ‘এর পরের গানে কেউ হাততালি দেবেন না। শুধু শুনুন।’ গান শেষ হতেই একটা কথাও না বলে সোজা মঞ্চ ছাড়লেন শ্রেয়া। তিলোত্তমার বুকে প্রতিবাদের স্বর তীব্রতর। বেঁচে থাক শ্রেয়া আর ওঁর সঙ্গীত সাধনা। গায়িকা পারফর্ম করার পর এক মুহূর্ত আর স্টেজে দাঁড়াননি। বলেননি কোনও কথা। চুপচাপ স্টেজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁর এই প্রতিবাদ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন সকলে। অরিজিৎ সিং এর পর শ্রেয়ার প্রতিবাদে মুগ্ধ হয়েছেন সকলে। আপামর জনসাধারন লেখেন, ‘অরিজিত সিং থেকে শ্রেয়া ঘোষাল প্রতিবাদী কন্ঠ সুরে স্বরে গানে মিলেমিশে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে! কিন্তু রাজ্য সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হচ্ছে না! এটা রাজ্যবাসীর লজ্জা।’ আরেকজন লেখেন, ‘দুর্দান্ত। চোখে জল চলে এল।’