ডাক্তারদের জন্য ধর্মতলায় সমস্যা হচ্ছে, সরানো হোক! আর্জি পাত্তা দিল না হাইকোর্ট,পঞ্চমীতে সব মেডিক্যাল কলেজে ১২ ঘণ্টা প্রতীকী অনশন, ধর্মতলা থেকে ঘোষণা জুনিয়র ডাক্তারদের
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মঞ্চের জন্য ধর্মতলায় সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেন কলকাতা হাইকোর্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক আইনজীবী। তিনি দাবি করেন যে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জন্য ধর্মতলায় সমস্যা হচ্ছে। ধর্মতলায় রাস্তার একাংশ জুড়ে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তার জেরে গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে গাড়ি চলাচল। আর্জি জানান আইনজীবী। আর্জিতে হস্তক্ষেপ করেনি হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জানিয়েছেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে। শীর্ষ আদালতে চলছে শুনানি। তাই সেই বিষয়টি নিয়ে আপাতত হাইকোর্ট কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। অর্থাৎ ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তাররা যেখানে আন্দোলন করছেন, সেখানে তাঁদের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পারবেন।
সাতজন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করছেন। প্রাথমিকভাবে শনিবার রাত থেকে অনশন শুরু করেন ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তবে তাঁদের মধ্যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের কেউ ছিলেন না। পরবর্তীতে রবিরার রার থেকে অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অনিকেত মাহাতোও। আর জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে সোমবার সকাল থেকে কয়েকজন সিনিয়র ডাক্তাররাও অনশন শুরু করেছেন। ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চেই আছেন। ওই সিনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন যে তাঁরা ২৪ ঘণ্টা অনশন করবেন।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চ থেকে একাধিক কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়। জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা অবধি প্রতীকী অনশন হবে। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা এই অনশনে যোগ দেবেন।’’ এ ছাড়াও একটি ‘মহামিছিল’-এরও ঘোযণা করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় কলেজ স্কোয়্যার থেকে অনশন মঞ্চ পর্যন্ত মিছিল হবে। সাধারণ নাগরিক থেকে সমাজের সমস্ত ক্ষেত্রের মানুষকে এই মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ধর্মতলার অনশনে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। কলকাতা পুলিশই ধর্মতলা চত্বরে নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬৩ ধারা জারি করেছে। তার পরেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি চলছে। অনশনের জন্য ডাক্তারেরা লালবাজারের অনুমতি চেয়ে ইমেল করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। লালবাজার থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ধর্মতলায় পুজোর মুখে ভিড় বেশি রয়েছে। প্রতি দিনই পুজোর কেনাকাটার জন্য বহু মানুষ ভিড় করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে যাওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তারেরা মেট্রো চ্যানেলের সামনে অবস্থানে বসলে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে, জানিয়েছিল পুলিশ। তবে অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও অনশন শুরু করেছেন ডাক্তারেরা। সোমবার সেই অনশনের তৃতীয় দিন।
১৬৩ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি চলছে। তা নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন বলে জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সোমবার পুজো উপলক্ষে কলকাতা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। সিপি বলেন, ‘‘পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’