October 3, 2024

রাজ‍্য জুড়ে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিল, মহালয়ায় শুরু অন‍্য ‘দেবীপক্ষ’ ! উৎসবের নয়, দ্রোহের!

0

জুনিয়র ডাক্তারেরা ধর্মতলার রাস্তায় মশাল হাতে। নিহত চিকিৎসক বিচার না পেলে তাঁরা উৎসবে ফিরবেন না। রাস্তায় থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কলকাতা থেকে জেলা— ঘরে বসে নয়, বরং পথে নেমে দেবীপক্ষের সূচনা। ‘রাত দখল’-এর ডাক দেওয়া সেই মেয়েরা দেবীপক্ষের ধারণা বদলে দিতে তৎপর। আন্দোলন চলুক সারা বছর। সারা বছর ধরে মেয়েরা যেন নিজেদের কথা বলতে পারেন। সেই সুযোগটাই করে দেওয়ার চেষ্টা। এ এক অন্য ‘দেবীপক্ষ’-এর সূচনা!

পূর্ণ কর্মবিরতি। রাজ্যের ২৩টি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চ। সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি। দাবি পূরণে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না করা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে চলবে কর্মবিরতি। ‘রাত দখল’-এর ডাক দেওয়া মেয়েদের সংগঠন ‘রিক্লেম দ্য নাইট, রিক্লেম দ্য রাইট’ থেকে সাধারণ মানুষ, যৌনকর্মী, রূপান্তরকামীরা। মিছিলে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডানের সমর্থকেরাও। ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচি রয়েছে সিঁথির মোড়, রুবির মোড় এবং যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডে।

পিতৃপক্ষ আর দেবীপক্ষ। ‘পিতৃতান্ত্রিক’ ভাবনা থেকে দেবী মেয়েরা সেই ‘পিতৃতান্ত্রিক’ ভাবনাই ভাঙতে চাইছেন। নিজেদের মতো করে অনুষ্ঠান করে তুলে ধরবেন নিজেদের কথা। যাঁরা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, লড়াইটা তাঁদের নিজেদেরই লড়তে হবে। এ বার মেয়েদের যদি নিজেদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া যায়! দেবীপক্ষ বলে এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আগে থেকেই স্থির। পুজোর মণ্ডপে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা মেয়েদের। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এ বছর অন্য রকম মহালয়া। রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারদের স্লোগান অব্যাহত, ‘তিলোত্তমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায়। কলকাতার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শূর নিজেও তাঁদের গায়ে হাত তুলেছেন। করুণাময়ী মোড়ে ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মধ্যরাতে হরিদেবপুর থানায় বিক্ষোভ দেখান। কাউন্সিলর অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ সেখানে অতর্কিত হামলা করেন কাউন্সিলর এবং তাঁর লোকজন। কাউন্সিলর নিজে হাত তুলছেন আন্দোলনকারীদের উপরে। আচমকা করুণাময়ী মোড় থেকে কয়েক জন মহিলা ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন। পাশের একটি বস্তি থেকেও কয়েক জন এসে হেনস্থা করেন তাঁদের। আন্দোলনকারীরা চ্যালেঞ্জের সুরে বলছেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

প্রতিবাদের কলকাতায় শ্রীভূমিতে উৎসবের উদ্বোধনে মমতা। শ্রীভূমির উৎসব উদ্বোধনে মমতা। গোটা শহর প্রতিবাদে মুখর। তার মধ্যেই উৎসবের উদ্বোধনে মমতা। দেশ জুড়ে আরজি কর প্রতিবাদের ঝড় এখনও বইছে। পিতৃপক্ষে পুজোর উদ্বোধন নয়। তিনি উৎসবের সূচনা করলেন। নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন সেকথা। শ্রীভূমির উৎসবের উদ্বোধন করলেন। শ্রীভূমির পুজো উপলক্ষে প্রতিবারই প্রচুর ভিড় হয়। সেটা নিয়েও সতর্ক করে দিলেন মমতা বলেন, কারও যেন ফ্লাইট মিস না হয় সেটা উদ্যোক্তাদের দেখতে হবে। মমতা বলেন, পিতৃপক্ষে মায়ের পুজোর উদ্বোধন হয় না। ধর্ম শাস্ত্র এসব আমিও কিছুটা জানি…আবার তো সবাই ন্যারেটিভ শুরু করবেন মহালয়ার আগে পিতৃপক্ষের উদ্বোধন করে দিয়ে জানান লাবণ্যে ভরা আপনাদের পুজো।…আগে মানুষের মতো মানুষ হোক। মানবিকতাকে প্রণাম। জয় মা দুর্গার জয়। জয় বাংলার জয়। তিরুপতির বালাজি মন্দিরের আদলে তৈরি শ্রীভূমির পুজো। বিরাট মণ্ডপ। দৃষ্টিনন্দন মণ্ডপ। শ্রীভূমিতে গিয়ে ঢাক বাজান মমতা। মন্ত্রী সুজিত বসু ও পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। শ্রীভূমির মণ্ডপের দরজা খুলে দেওয়া হল দর্শনার্থীদের জন্য।

মমতা বলেন, ‘‌এখানে অনেক অতিথি রয়েছেন। সবার আগে নচিকেতার নাম বলতে হয়। নচিকে আমি নাচি নাচি বলি। অনেক গান গেয়েছে। আমারও এবার পুজো সংখ্য়ার ক্যাসেটে গান গেয়েছে। শুনবেন নিশ্চয়। …ব্রাত্যর নামটা কি ভুলে গেলাম..বলেছি। আপনারা জানেন পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করি না। মহালয়ার পরে সেই কাজটা করি। বীরপাড়ায় ও দুবরাজপুরে ফায়ার ব্রিগেডের বাইকের উদ্বোধন রয়েছে। মানুষের মুখে হাসি না থাকলে কারোর মুখে হাসি থাকে না, দেবীর মুখেও হাসি থাকে না। আমি বিজ্ঞ নই আমি অজ্ঞ….’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed