বন্যার্তদের পাশে বাংলার মহারাজ, সৌরভ ফাউন্ডেশনের তরফে ত্রান প্রদান ঝাড়গ্রামের দুর্গতদের
বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট। এই উদ্যোগ নতুন নয়। এর আগেও কোভিড পিরিয়েডে বাংলার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলীর উদ্যোগে প্রচুর মানুষ উপকৃত হয়েছিলেন। বাংলার বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও প্লাবন পরিস্থিতি। পুজোর মুখে সহায়, সম্বলহীন বহু মানুষ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আগে হুগলি, হাওড়া জেলার বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার তিনি প্রতিনিধি পাঠালেন ঝাড়গ্রামে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানতে পেরেছিলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়়গ্রাম জেলার সীমানাবর্তী এলাকায় বহু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে বন্যায়। অনেক বাড়ির অবস্থা বিপজ্জনক। এই পরিস্থিতিতে বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেই বাড়িগুলির ছবি, বন্যা পরিস্থিতির ছবি দেখে বিচলিত প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক।
সৌরভ গাঙ্গুলী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঝাড়গ্রামে বন্যা দুর্গতদের জন্য পৌঁছে দেওয়া হল বিপুল খাদ্যসামগ্রী। এছাড়াও ছিল ওষুধ, ত্রিপল, শুখনো খাদ্যদ্রব্য থেকে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা ত্রাণ, খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিলেন মেদিনীপুরের অদূরে ঝাড়গ্রামের বন্যা কবলিত এলাকায়। সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশনের টিম ঝাড়গ্রামে গিয়ে দুর্গতদের কাছে মহারাজের পাশে থাকার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার নেতৃত্বে ছিলেন শান্তনু ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, এই এলাকার মানুষজনের কাছে ত্রাণ পৌঁছয়নি। সে কথা আমরা দাদার অফিসে তাঁর আপ্ত সহায়ক তানিয়া ভট্টাচার্যকে জানিয়েছিলাম। সৌরভ জানতে পেরেই ওই এলাকার বন্যাকবলিতদের জন্য ত্রিপল, শুকনো খাবার-সহ রেশন সামগ্রী, ওষুধপত্র পাঠান। প্রথমে ঠিক ছিল ওই এলাকায় গিয়েই সৌরভের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হবে। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে কারণে দুর্গত মানুষজনকে নিয়ে আসা হয় খালশিউলির একটি প্রাইমারি স্কুলে।
শান্তনু জানান, আমাদের কাছে যা খবর ছিল তাতে শতাধিক বাড়ি বন্যায় ভেঙে পড়েছে। আরও বেশ কিছু বাড়ির অবস্থা খারাপ। তাঁদের জন্য দাদা ত্রিপলও পাঠিয়েছেন। সেই সঙ্গে বন্যাদুর্গতদের জন্য ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী। আপাতত এতে কিছুদিন চালিয়ে নিতে পারবেন ওই মানুষজন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া আপ্লুত বন্যাদুর্গতরা। ঝাড়গ্রামের খালশিউলি বিদ্যালয়ে ডেকে বন্যার্ত গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাদ্যসামগ্রী। এস জি ফাউন্ডেশন অর্থাৎ সৌরভ গাঙ্গুলী ফাউন্ডেশন বরাবরই মানুষের পাশে থাকতে সচেষ্ট। আবারও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মানবিক মুখ। নিজের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার বন্যাদুর্গতদের পাশে মহারাজ।
বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের তরফে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুটি দল হাজির হয়েছে রাজ্যের দুই প্রান্তে। একটি দল হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এলাকায়। আর একটি দল ঝাড়গ্রাম এবং দুই মেদিনীপুরে। দুই দলের সঙ্গেই রয়েছে শুকনো খাদ্যসামগ্রী, রান্না করা খাবার, পানীয় জল, প্রয়োজনীয় ওষুধ, ত্রিপল, স্যানিটারি ন্যাপকিন, নতুন ও পুরনো পোশাক ইত্যাদি জরুরি দ্রব্য। বিপর্যস্ত মানুষের তালিকা বানিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ত্রিপুরার বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দিলেন সৌরভ।
দক্ষিণ গোবিন্দপুরের যুগীপাড়া রোডে রয়েছে আনন্দঘর। সেখানেই অনাথ শিশুরা আপনজন পুজো কমিটি নামে দুর্গাপুজোর আয়োজন করে। এবার ৮ অক্টোবর সেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর কন্যা সানা যাবেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা কাটাবেন সেই পুজোয় তাঁদের সঙ্গে। কন্যা সানাকে নিয়ে হাসি ফোটাবেন অনাথ শিশু ও বৃদ্ধাবাসের আবাসিকদের মুখে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবার দুর্গাপুজোয় কলকাতাতেই থাকলেও, স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের অষ্টমী পর্যন্ত লন্ডনে রয়েছে টানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।