‘চাদর লাগবে? ঠান্ডা লাগছে না?’ মমতাময়ী দিদি, স্বজনহারাকে দিলেন নিজের চাদর! বিধান মার্কেটে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন অরূপের
লাগাতার বৃষ্টি। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বিপর্যস্ত জনজীবন। বন্যা পরিস্থিতির ভয়াল রূপ। নৌকাডুবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। সদ্য নৌকাডুবি ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারকে সাহায্য তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে মৃতদের পরিবারকে সেই সাহায্যের অর্থ তুলে দেন মমতা। নৌকাডুবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে দিচ্ছিলেন সরকারি সাহায্যের অর্থ। মুখ্যমন্ত্রী যখন এই অর্থ স্বজনহারাদের তুলে দিচ্ছিলেন, তখনই এক পরিবারের সদস্য কেঁদে ফেলেন। কাঁধে হাত রাখেন দিদি। আবেগঘন সেই মহিলার পিছনেই দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর এক আপনজন। সেই ব্যক্তির গায়ের উর্ধ্বাঙ্গে জড়ানো ছিল গামছা। সেটি দেখা মাত্রই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিজ্ঞাসা করেন, ‘ চাদর লাগবে? ঠান্ডা লাগছে না?’ ব্যক্তি ঘাড় নেড়ে জবাব দেন, যে ঠান্ডা লাগছে না। মমতা খানিকক্ষণ চুপ থাকার পর পরেই প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একজনকে ডেকে নিয়ে, বলেন, ‘গাড়িতে চাদরটা আছে না?’ সেই চাদর পরিয়ে দেন স্বজনহারাকে। একটি পরিবারের সদস্যের হাতে ৫ লাখ টাকা এবং অপর পরিবারের সদস্যের হাতে ৩ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ তুলে দেন তিনি। এ ছাড়া ভুতনিতে নৌকাডুবিতে মৃত দু’জনের পরিবারকেও ২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। গজলডোবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত চার জনের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন।
এদিকে, শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলিকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ছ’টি দোকানের মালিককে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের ৫০ হাজার টাকা। বিধান মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রবি সন্ধ্যায় বিধান মার্কেটে পৌঁছে যান অরূপ। সঙ্গে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। বিধান মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে মন্ত্রী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝার চেষ্টা করেন। অরূপ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন। পুজোর মুখে এই ধরনের দুর্ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” মুখ্যমন্ত্রী যে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন, বিধান মার্কেটে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ীদের আবারও সে কথা জানান অরূপ। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলিও শিলিগুড়ি পুরসভা থেকে তৈরি করে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন। অরূপ ব্যবসায়ীদের জানান, যদি কারও কোনও সমস্যা থাকে সেই বিষয়টি নিয়ে তাঁকে চিঠি পাঠানোর জন্য। মন্ত্রীর আশ্বাস, চিঠি পেলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই সমস্যার কথা পৌঁছে দেবেন এবং সমাধানের চেষ্টা করবেন।