বেঙ্গালুরুর কাছে বিধ্বস্ত মোহনবাগান, কান্তিরাভায় আইএসএলে প্রথম হার কামিন্সদের
বেঙ্গালুরু -৩ মোহনবাগান-০
(মেনডেজ, সুরেশ, সুনীল ছেত্রী পেনাল্টি)
বিধ্বস্ত মোহনবাগান। সুনীল ছেত্রীদের কাছে তিন গোলে হার। বেঙ্গালুরুর মাঠে হোসে মোলিনার দল পর্যুদস্ত। গতবারের আইএসএলে এই কান্তিরাভাতেই বেঙ্গালুরুকে ০-৪ গোলে হারায় মোহনবাগান। আন্তোনিও লোপেজ হাবাস ছিলেন কোচ। মোহনবাগান কোচের হটসিটে হাবাসের পরিবর্তে দলের রিমোট কন্ট্রোল মোলিনার হাতে। গত ম্যাচেই মোহনবাগান লড়াকু জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল নর্থ ইস্টের কাছ থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। রণক্ষেত্র কান্তিরাভা স্টেডিয়াম স্টেডিয়ামেই শনি সন্ধ্যায় বিষাদ সিন্ধুর হাহাকার।
প্রথম ২০ মিনিটেই ম্যাচের রাশ চলে যায় বেঙ্গালুরুর হাতে। বেঙ্গালুরু রং ছড়িয়ে গেল। চলতি আইএসএলে প্রথম হারের স্বাদও পেয়ে গেল মোহনবাগান। দু’ গোল হজম করে ম্যাচ আগেও বের করে নিয়েছে মোহনবাগান। স্মরণকালের মধ্যে ডুরান্ড কাপের কথা বলাই যায়। ঐতিহ্যবাহী সেই টুর্নামেন্টে দু’গোল খেয়েও মোহনবাগান টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল। ৯ মিনিটে কর্নার থেকে ভাসানো বলে হেড করেন নিখিল পুজারী। জেসন কামিন্স যখন বুঝতে পারেন তাঁদের রক্ষণে বিপদের গন্ধ, ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। নিখিল পুজারীর হেড থেকে মেনডেজ চকিতে শট নিয়ে এগিয়ে দেন বেঙ্গালুরুকে। মেনডেজকে পাহারা দিচ্ছিলেন দীপেন্দু। মোলিনাও প্রশংসা করেছিলেন তরুণ দীপেন্দুর। বেঙ্গালুরুর তারকা ফুটবলার যে চকিত শটে গোল করে দেবেন, তা বুঝতেও পারেননি দীপেন্দু। বাগান গোলকিপার বিশাল কাইথ হতাশ।
প্রথম গোলের রেশ যেতে না যেতেই বেঙ্গালুরুর দ্বিতীয় গোল। গোলের পিছনে সেই মেনডেজেরই অবদান। উইং থেকে তাঁর গড়ানে সেন্টারেই সুনীল ছেত্রী হয়ে বল যখন সুরেশের কাছে, তখন মরিয়া ঝাঁপ দিয়েছিলেন আশিস রাই। এগিয়ে এসেছিলেন বিশালও। সুরেশ ঠান্ডা মাথায় বল জড়িয়ে দেন বাগানের জালে। রোনাল্ডোর কায়দায় সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন। কান্তিরাভা শাসন করেন সুনীল-মেনডেজ-নোগুয়েরা-সুরেশরা। দ্বিতীয়ার্ধে মোলিনা ম্যাজিকও দেখা গেল না। বরং দ্বিতীয় হাফে সুনীল ছেত্রী পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচ নিয়ে চলে যান বেঙ্গালুরুর সাজঘরে। বক্সের ভিতরে দীপেন্দু টেনে ফেলে দেন মেনডেজকে। বেঙ্গালুরুর তিনটি গোলেই তাঁর অবদান স্পষ্ট। রেফারি পেনাল্টি দেন। সুনীল ছেত্রী পেনাল্টি থেকে ৩-০ করার সঙ্গে সঙ্গেই আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেলেন। আইএসএলে তার গোলসংখ্যা ৬৪। এই ম্যাচ জেতার ফলে বেঙ্গালুরু লিগ টেবলের শীর্ষে। মুম্বইয়ের সঙ্গে ড্র, নর্থ-ইস্টকে হারানোর পরেও বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধেও হেরে গেলেন কামিন্সরা।
অসম্ভব ক্ষিপ্রতার নাম সুনীল ছেত্রী। ওগবেচেকে টপকে আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতার শিরস্ত্রাণ এখন সুনীল ছেত্রীরই মাথায়। এক স্টেপে পেনাল্টি শঠে পরাস্ত করলেন মোহনবাগানের বিশাল কাইথকে। বাগানের জালে বল জড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক হয়ে গেলেন আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ১৫৮টি আইএসএল ম্যাচ থেকে সুনীলের গোলসংখ্যা এখন ৬৪। অ্যাসিস্ট ১১। সব মিলিয়ে তাঁর অবদান ৭৫। উল্লেখ্য, ওগবেচের গোলসংখ্যা ছিল ৬৩। সুনীল ছেত্রীর নামের পাশে ৬৪টি গোল। জাতীয় দলের জার্সিতে ১৫১টি ম্যাচ থেকে ৯৪টি গোল রয়েছে তাঁর। ভারতের নীল জার্সিতে তাঁকে আর খেলতে দেখা যায় না। বুট জোড়া তুলে রেখেছেন বিখ্যাত এগারো নম্বর জার্সিধারী। ক্লাবের হয়ে এখনও ফুল ফোটাচ্ছেন সুনীল।