October 3, 2024

বিস্ফোরক দাবি,‌‘পশ্চিমবঙ্গকে বাজারে পরিণত করেছেন মমতা’ কলেজে ভরতি হতে টিএমসি নেতাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে হয় মেয়েদের

0

কলেজে ভরতি হতে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে হয় মেয়েদের। অনার্স পাওয়ার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের কাছে নিজেদের বিক্রি করে দিতে হয়। বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সুকান্ত মজুমদার। পালটা মুখ খুলেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপিকে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে তবেই কলেজে অ্যাডমিশন মেলে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আরজি করের মতো রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ‘থ্রেট কালচার’ চলার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই আবহেই সুকান্ত অভিযোগ করেন যে বিভিন্ন কলেজে ‘ভরতি চক্র’ চলছে। রাজ্যে এখন একটাই নীতি চলছে, সেটা হল ‘ফেলো কড়ি, মাখো তেল’। সেইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে সুকান্ত অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী পুরো পশ্চিমবঙ্গকে বাজারে পরিণত করেছেন। অনার্স নিয়ে কলেজে ভরতি হওয়ার জন্য বাজারে গিয়ে নিজেকে বিক্রি করতে হয় বলে দাবি করেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী।

সুকান্তের কথায়, ‘কলেজে শুধু থ্রেট কালচার নয়, ভরতি চক্র চলে। আপনি তৃণমূল নেতাদের পয়সা দিন …..। অনেক ক্ষেত্রে…..বলতে খারাপ লাগছে। বেশ কিছু জায়গায় আমরা দেখেছি….মেয়েদের সঙ্গে….বিশেষ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের লোভ দিয়ে তাঁদের দেওয়া হয়। মানে অ্যাডমিশনের লোভ দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার মতো, শ্লীলতাহানি করার মতো ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কলেজে ঘটছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরো পশ্চিমবঙ্গকে বাজার অর্থনীতির ….. পুরো বাজারে পরিণত করে রেখেছেন। আপনি ফিজিক্স অনার্স চান, আপনাকে বাজারে গিয়ে বিক্রি হতে হবে। আপনি জিয়োগ্রাফিতে অনার্স চান বা হিস্ট্রিতে অনার্স চান, আপনাদের তৃণমূল নেতাদের সামনে গিয়ে বিক্রি হতে হবে। বাজারটা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো বোঝেন। সেজন্য উনি গোটা রাজ্যটাকে বাজারে ……। ফেলো কড়ি, মাখো তেল। অন্য কোনও পলিসি নেই। পয়সা দিন, সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিন।’

কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের (শিক্ষা রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ তালিকায় আছে) রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেই ‘চক্র’-কে দমন করতে কী পদক্ষেপ করছেন, কোনও পদক্ষেপের পরিকল্পনা আছে কিনা, তা খোলসা করে বলেননি সুকান্ত। তাছাড়া ‘বেশ কিছু জায়গা’ বলতে ঠিক কোন কোন জায়গায় এরকম ‘ভরতি চক্র’ চলে বলে দাবি করেছেন, সে বিষয়েও কিছু জানাননি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে, হাথরস, কাঠুয়া, উন্নাওতে যাঁরা ধর্ষকদের মালা পরিয়েছেন, তাঁরাই এ রাজ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য আরজি কর আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইছেন। এমনটাই অভিযোগ করলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করলেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তারেরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের তরফে ওই বৈঠকে ছিলেন দেবাশিস হালদার, অনিকেত মাহাতোর মতো পরিচিত মুখেরা। দেবাশিসের কথায়, ‘‘রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ক্ষুদ্র স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গোড়া থেকেই আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইছে। আমরা বার বার স্পষ্ট করে জানিয়েছি, হাথরস-কাঠুয়া-উন্নাওতে যাঁরা ধর্ষকদের মালা পরিয়েছেন, তাঁদের ক্ষমতা দখলের চক্করে আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে দেব না। জনগণ দেবে না।’’

জুনিয়র ডাক্তারদের নাম করে বিশেষ ওই রাজনৈতিক দল ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে বলেও অভিযোগ করেন দেবাশিস, অনিকেতরা। দেবাশিস বলেন, ‘‘এই দলেরই কয়েক জন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন এবং মহালয়ার দিন নির্যাতিতার জন্য জুনিয়র ডাক্তারেরা তর্পণ করবেন বলে ভুয়ো খবর ছড়ান। ওই কর্মসূচির সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের কোনও সম্পর্ক নেই। বিভাজনকামী যে কোনও রাজনীতিকে প্রথম থেকেই প্রত্যাখ্যান করেছে এই আন্দোলন। আগামীতেও তা-ই করবে।’’

রাজ্য সরকারকেও বার্তা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। জানিয়েছেন, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে যে বৈঠকের পর তাঁরা কর্মবিরতি আংশিক তুলে নিয়েছেন, সেই বৈঠকে তাঁরা কিছু লিখিত নির্দেশিকা আদায় করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, দু’একটি বিচ্ছিন্ন উদাহরণ ছাড়া ওই নির্দেশিকা প্রতি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজে প্রয়োগ করা হয়নি। দেবাশিস বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, সরকার যদি রোগী পরিষেবা এবং ডাক্তারদের সুরক্ষার বিষয়ে এই ধরনের গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে চলে, আমরা আন্দোলনকে তীব্রতর করতে বাধ্য হব।’’ পঞ্চম দাবির বাস্তবায়নের জন্যেও সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে দাবি করেছেন তাঁরা। বিষয়গুলি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আবার আলোচনায় বসতে চান বলেও জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, কর্মবিরতি উঠে যাওয়ার পর অনেকে প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপের শিকার হচ্ছেন। তাঁদের মন্তব্য, ‘‘আমাদের ডাকে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন সময়ে যাঁরা ‘রাতদখল’ বা অন্য কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। নয়তো আন্দোলন আরও তীব্র হবে।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed