সন্দীপরা গেলেন জেলে, ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে অভিযুক্তদের উত্তপ্ত আরজি কর, তাড়া করলেন প্রতিবাদীরা
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে জেলে পাঠানো হল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে দাবি ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হল। নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেনি সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা। সেই রিপোর্ট পেলে দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হতে পারে। সিবিআই আরও তিনদিন ওই দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে। বুধবার সন্দীপ এবং অভিজিৎকে আদালতে পেশ করা হয়। সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয় যে টালা থানার মধ্যেই ভুয়ো নথি বানানো হয়েছিল এবং তথ্যপ্রমাণের হেরফের করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে টালা থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে হার্ড ডিস্ক এবং ডিভিআরও। যে রিপোর্ট দিনদুয়েকের মধ্যে চলে আসবে বলে আশাপ্রকাশ করেছে সিবিআই। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় যাতে রুদ্ধদ্বার শুনানি হয়, সেই আবেদনও জানায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে যেভাবে জনরোষ আছড়ে পড়েছে, তা ‘বিরল থেকে বিরলতম’। যদিও রুদ্ধদ্বার শুনানির বিরোধিতা করেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিতের আইনজীবী। শিয়ালদা আদালতে সিবিআই আরও একটা জিনিস বুঝিয়ে দিয়েছে যে আরজি কর মামলার তদন্তের নিষ্পত্তি হতে সময় লাগবে। আর সেটার কারণ কী, তা একাধিকবার স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে বলা হয়, ‘আমাদের হাতে এমন কোনও জাদুকাঠি নেই যে এখনই তদন্তের নিষ্পত্তি হবে।’
‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অভিযুক্তদের তাড়া করলেন প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তারেরা। ধাক্কাধাক্কিতে এক জনের জামা ছিঁড়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। অভিযুক্তেরা হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে কোনও রকমে বাইরে যেতে পেরেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, আরজি করে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চালিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেন একাধিক চিকিৎসক। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করে। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছে ৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নেরা। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে বুধবার তলব করা হয়েছিল। তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে (যেখানে অধ্যক্ষের দফতর রয়েছে) হাজিরা দেন। হাসপাতালে তাঁদের ঢুকতে দেখেই জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারী জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে এই হাসপাতালে। ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরা সকালে হাসতে হাসতে তদন্ত কমিটিতে ঢুকেছেন। এত স্পর্ধা এখনও কী করে এঁদের হচ্ছে? আমরা জানতে চাই।’’