October 3, 2024

‘‌দিদি আমায় ভালোবাসে’‌ সাতসকালে কেষ্ট সুর, তা সত্ত্বেও, জেল ফেরৎ অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করলেন না মমতা!

0

বোলপুরে কেষ্টর প্রত্যাবর্তনের প্রথমদিন। দেখা করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেষ্টর গ্রেফতারইর সময়, মমতা বলেছিলেন যে ‘কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে ফিরিয়ে আনব।’ আদৌ পরবর্তীতে স্নেহের কেষ্টর সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তাও স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের পরই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রায় দু’বছর পরে বোলপুরের নিচুপট্টিতে নিজের বাড়িতে ফেরার পথে সকালেই অনুব্রত বলেছিলেন যে শরীর ভালো থাকলে মমতার সঙ্গে দেখা হবে। ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে আসছেন। দিদির জন্য আছি, বরাবরই থাকব। আমি দিদিকে ভালোবাসি। দিদি আমায় ভালোবাসে।’‌

মমতা দেখা না করলেও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা অনুব্রতকে ‘বীরের’ মতোই স্বাগত জানিয়েছেন। জামিনের পর বীরভূমে ওড়ে সবুজ আবির। সাড়ে ২৫ মাস পরে অনুব্রত নিজের ‘গড়ে’ ফেরার পর উচ্ছ্বাসের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। সবুজ আবির মেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। বিলি করেন নকুলদানা। গাড়ি থেকে নামার সময় অনুব্রতকে লক্ষ্য করে পুষ্পবর্ষণও চলে। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে একেবারে উৎসবের পরিবেশ। রীতিমতো বাজি ফাটানো। বাড়ি সংস্কার। অনুব্রত একটু অসুস্থ। ব্যথা আছে পায়ে। কোমরেও ব্যথা। ওজনও কমে গিয়েছে অনেকটা। তিহাড় জেল থেকে বের করার পর বেশ রোগা লাগছিল। চোখে-মুখে ধকলের স্পষ্ট। ধকল নিয়েই কলকাতার বিমান ধরে সকালে ফেরেন বীরভূমে।

বাংলায় বয়ান, বুঝতেই পারলেন না বিচারক? সেই ফাঁকে টুক করে জামিন পেলেন অনুব্রত। খাঁচা থেকে বাঘ বেরোবে। কীভাবে জামিন পেলেন কেষ্ট মণ্ডল? গরু পাচারের অভিযোগে ইডির মামলাতেও জামিন অনুব্রত মণ্ডলের। প্রশ্ন উঠছে ঠিক কীসের ভিত্তিতে জামিন পেলেন অনুব্রত? অনুব্রতর জামিনের কপি রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্ট আপলোড করেছে তাতে বলা হচ্ছে অনুব্রত যে গরু পাচারের সরাসরি যুক্ত বা আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তা উল্লেখ করেনি ইডি। আসলে গরু পাচার মামলায় যারা অভিযুক্ত ও যারা সাক্ষী সকলেই বাংলায় তাদের বয়ান নথিভুক্ত করেছেন। লেখা সেই বয়ান দেখে বুঝতে পারছেন না বিচারকরা। এমনকী সেই বয়ান ইংরেজিতে অনুবাদ করার জন্য ইডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইডি তা করে উঠতে পারেনি। বয়ানের বাংলার তর্জমা করা হয়নি। বয়ানের বাংলা অনুবাদ হয়নি বলে কাউকে আটকে রাখা যাবে এটা করা যায় না। সেকারণে জামিন দেওয়া হচ্ছে অনুব্রতকে। এখানেই ইডির ভূমিকা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন।

বীরভূমের বাড়িতে ফিরে কেঁদে ফেললেও ‘বজ্রকঠিন’ অনুব্রত? বাড়িতে ঢুকতে পারলেন না মন্ত্রীরাও। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে যান মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তবে তাঁরা ঢুকতে পারেননি অনুব্রতের নিচুপট্টির বাড়িতে। প্রশ্ন উঠছে, বীরভূমে নয়া কোনও ‘খেলা’ শুরু?
সকাল থেকে হত্যে দিয়েও অনুব্রতের বাড়িতে ঢুকতেই পারলেন না রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। খানিকক্ষণ অপেক্ষা করার পরে ফিরে যান বীরভূম জেলা কোর কমিটির দুই হেভিওয়েট সদস্য। অনুব্রতের বাড়িতে প্রায় ঘণ্টাখানেক কাটান বীরভূম জেলা কোর কমিটির অপর এক সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ। ‘নো এন্ট্রি’ মন্ত্রী ও বিধায়ক চন্দ্রনাথ এবং বিকাশের। কেউই ‘কেষ্ট’-র ‘টাইম’ পাননি। স্রেফ জানানো হয়েছে যে অনুব্রত পরে দেখা করবেন। অনুব্রতকে তৃণমূল ‘সাইডলাইন’ করে দিয়েছে?‌ অনুব্রত জামিন পাওয়ার পরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ বলছে, ‘কেষ্ট’-র ক্যারিশমা এখনও আছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অনুব্রত নিজের ঘরের দেওয়ালেও হাসিমুখে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এখনও রয়েছে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed