আর জি কর কাণ্ডের মোড় ঘোরাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী?বানভাসি জেলা পরিদর্শনে হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন প্লাবিত এলাকায় মমতা!
আবার প্রশ্নের সামনে রাজ্য সরকার। ডিভিসি জল ছাড়বে জেনেও আগেভাগে কোনও ব্যবস্থা নয়। বানভাসি পরিস্থিতি সৃষ্টি হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামবাসীদের একাংশের কানাঘুঁষোয় স্পষ্ট। আরজিকর কাণ্ডের মোড় ঘোরাতে তৎপর মমতা। প্লাবিত গ্রামবাসীদের বক্তব্য, সব জানেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আসছেন সহমর্মিতা জানাতে। তরিঘড়ি বান দেখতে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতা বিদ্বজনের কাছেও বেশ স্পষ্ট বলে মনে করছেন প্রত্যেকেই। গ্রামবাসদের বক্তব্য, উনি এসে গোড়ালি জলে নেমে ছবি তুলবেন, তারপর আবার যথারীতি রওনা দেবেন। এরকম চিত্র বরাবরই দেখে আসছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। জুনিয়ার ডাক্তারদের আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার রাজ্যের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তা স্পষ্ট। সেই আর জি কর কাণ্ডের অভিমুখ রাজ্যবাসীর সামনে বদলাতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টা বলে দাবি গ্রামবাসী ও জনসাধারনের।
নিম্নচাপের বৃষ্টি, ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত বহু এলাকা। বিভিন্ন জেলায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এই অবস্থায় বেশ কয়েকটি জায়গা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধে হাওড়া, হুগলির কিছু এলাকায় যেতে পারেন মমতা। দুপুরে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় বন্যার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার উদয়নারায়ণপুর বিডিও অফিসে পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়, জেলাশাসক পি দীপাপপ্রিয়া, স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
মঙ্গলবার ডিভিসি থেকে প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক জল এক সঙ্গে ছাড়ার ফলে হাওড়ার নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। উদয়নারায়ণপুরে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে বুধবার ভোর থেকে জল বাঁধ টপকে ঢুকে পড়েছে। আমতার ভাটোরা দ্বীপ এলাকার বেশ কিছু জায়গায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল হু-হু করে ঢুকছে। পুজোর আগে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক দিন ধরে। তার মধ্যে মমতা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরেজমিনে বন্যাবিধ্বস্ত কিছু এলাকা পরিদর্শন করবেন।
উদয়নারাণপুর, আমতা অঞ্চলের নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ‘ফ্লাড সেন্টার’গুলি খুলে দেওয়া হচ্ছে। ওই শিবিরগুলিতে শুকনো খাবার, শিশুদের খাবার, পানীয় জল এবং ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি গবাদি পশুদের থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। চাষবাসেও বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন। উদ্ধারকাজের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে জেলায় জেলায়।