October 7, 2024

‘ক্রাইসিস ম্যান’ মনোজ কলকাতার পুলিশ কমিশনার, সদ্য প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাঠানো হয়েছে এডিজি এসটিএফ পদে

0

বিনীত গোয়েলের পরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে ১৯৯৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার মনোজকে বসানো হল। এতদিন যিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে ছিলেন, সেই বিনীত গোয়েলকে পশ্চিমবঙ্গের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সে (এসটিএফ) পাঠানো হল। অন্যদিকে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনের আবহেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ইনটেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চেও রদবদল করা হয়েছে। কলকাতার নয়া পুলিশ কমিশনার হলেন ‘ক্রাইসিস ম্যান’ মনোজকুমার বর্মা। কলকাতার সদ্য প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাঠানো হয়েছে এডিজি (এসটিএফ) পদে। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের একাধিক পদে বদল আনা হয়েছে।

১৯৬৮ সালে মনোজের জন্ম। সেপ্টেম্বরই তাঁর জন্মমাস। ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন। রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরে মনোজের জন্ম। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করা মনোজ ২০১৯ পর্যন্ত দার্জিলিঙের আইজি পদে ছিলেন। তার পরে তাঁকে নিয়ে আসা হয় ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের দায়িত্বে। ভাটপাড়া এবং কাঁকিনাড়ায় গোলমালের সময় তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মনোজ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন। সেই সময়ে জঙ্গলমহল জুড়ে মাওবাদীদের কার্যকলাপ তুঙ্গে। মনোজ সেই কার্যকলাপ রুখতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছিলেন। এর পর ডিআইজি পদমর্যাদায় উন্নীত হয়ে মনোজ চলে যান শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে। ২০১৭ সালে দার্জিলিঙের আইজি। পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সেই সময়ের আন্দোলনও মনোজ সামলেছিলেন দক্ষতার সঙ্গে।

সিপি, ডিসি (নর্থ) এবং দুই স্বাস্থ্যকর্তাকে বদলি করছে রাজ্য সরকার, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মানা হল
২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রতি দিনিই কোথাও না কোথাও খুন-মারামারি-গন্ডগোল লেগেই থাকত। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার মনোজকে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের প্রধান করে পাঠায়। ব্যারাকপুরের সিপি হিসাবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মনোজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ব্যারাকপুরে থাকাকালীন একধিক বার তাঁকে জরুরি পরিস্থিতিতে ‘অ্যাকশনে’ নামতে দেখা যায়। এক বার ভাটপাড়ায় গোলমালের সময়ে হেলমেট না পরেই গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছিলেন। হাত দিয়েই ইট-পাটকেল আটকানোর চেষ্টা করেন মনোজ। সেই সময় বাহিনী এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা না করে খালি হাতে অ্যাকশনে নামার জন্য তাঁর ভূমিকা কিছুটা সমালোচিতও হয়। মনোজ সে সবকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি কখনও। ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের পুলিশ পদক পেয়েছিলেন মনোজ। ২০১৯ সালে পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ পদক। স্বাধীনতা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁকে ওই পদক দেন। ভাটপাড়ায় শান্তি ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলেই মনোজকে ওই পদক।

কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) অভিষেক গুপ্তকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ইএফআর-এর সেকেন্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার পদে। তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে দীপক সরকারকে। তিনি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) ছিলেন। অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশ কমিশনার পদে বসানো হয়েছে মনোজ বর্মাকে। তিনি ছিলেন রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। তাঁর জায়গায় নতুন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) হচ্ছেন জাভেদ শামিম। শামিম এত দিন ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা বিভাগ (আইবি)-এর এডিজি। ওই পদে বসানো হল জ্ঞানবন্ত সিংহকে। তিনি এত দিন ছিলেন ডিরেক্টরেট অফ ইকোনমিক অফেন্সেস-এর ডিরেক্টর। বিনীত এখন নিযুক্ত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএএফ)-এর এডিজি পদে। ওই পদে ছিলেন ত্রিপুরারি অথর্ব। তাঁকে ডিরেক্টরেট অফ ইকোনমিক অফেন্সেস-এর ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছে। সিপি জানান, আন্দোলন যে হিংস্র হয়ে উঠবে, তা পুলিশ আন্দাজ করতে পারেনি। তাঁর কথায়, ‘‘একে আমাদের ব্যর্থতা বললে বলতে পারেন।’’ এ বার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতার কমিশনার পদ থেকে সরানো হল বিনীতকে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed