October 5, 2024

‘‌লাইনে এরপর… তাই চন্দ্রিমাকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন’‌ ! গ্রেফতার হতে পারেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল খোদ?‌

0

‘ওসির পর কার পালা, ভয় পেয়েছে চোদ্দোতলা’। বৃষ্টি মাথায় ফের কলকাতায় ‘রাত দখল’

‘‘প্রমাণ লোপাটের তত্ত্ব অন্তত প্রমাণ হল। ওসি হয়তো কারও কথায় কাজ করেছিলেন। এ বার নিশ্চয়ই তাঁরাও রেহাই পাবেন না।’’ ঝেঁপে আসা বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় স্লোগান উঠছে, ‘আসুক যত বৃষ্টি ঝড়, জাস্টিস ফর আর জি কর’! বৃষ্টি থামতে অনেকেই মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। স্লোগানের পাশাপাশি জনতার গুঞ্জন শোনা গেল যে, টালা থানার ওসিকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে খবর পেয়েই তাহলে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ভেস্তে দিলেন। এ বার কি তাহলে সিপি বিনীত গোয়েলকে সরানো হবে?

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন, ধর্ষণের ঘটনায় নমুনা সংগ্রহ এবং ময়না তদন্তের প্রক্রিয়ার খামতি নিয়ে আগেই আঙুল তুলেছে সিবিআই। এ বার কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের লেখা কেস ডায়েরির পাতাতেও কিছু ‘উদ্ভট ভুল’ দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ‘রহস্যজনক’ এই ভুলের বিষয়ে সিবিআই উচ্চ আদালতে জানাবে বলেও তদন্তকারীদের সূত্রের। প্রসঙ্গত, শনিবার গভীর রাতে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তাকে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে এই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও।

৯ অগস্ট সকালে আর জি করের ঘটনাটি জানাজানি হয়। ১৩ অগস্ট হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সিবিআই। সিবিআই তদন্তভার নিলেও পরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল দাবি করেন, কলকাতা পুলিশ ত্রুটিহীন ভাবে তদন্ত চালিয়েছে। কিন্তু সিবিআইয়ের প্রশ্ন, এত দিন ‘কার ইন্ধনে’, কী ভাবে কলকাতা পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছিল? জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের অনেককেই ‘আড়ষ্ট’ মনে হয়েছে। আর জি করের ঘটনাটির তদন্তের প্রাথমিক পর্বে কোনও রাজনৈতিক চাপ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। নিহত চিকিৎসকের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকদেরও ডেকে একাধিক বার কথা বলেছে সিবিআই। তাঁদের জবাবও ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তের খামতি নির্দিষ্ট ‘পয়েন্ট’ ধরে শীর্ষ আদালতে মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।”

এদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র বৈঠকের ‘‌মিনিটস’‌ নিয়েই কথা বলতে রাজি হন। ততক্ষণে উলটোদিক থেকে বৈঠক করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এই আবহে বিস্ফোরক অভিযোগ, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির খবরে বৈঠক বাতিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজেও কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয়নি জুনিয়র ডাক্তারদের। মাঝে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাইরে এসে তাঁদেরকে ভিতরে যেতে বলেছিলেন। বৃষ্টিতে ভিজতে বারণ করেছিলেন। চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে লাইভ স্ট্রিমিং বা ডাক্তারদের তরফ থেকে ভিডিয়ো রেকর্ড করতে দেননি। এই আবহে চিকিৎসকরাও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কা ও দাবি, গ্রেফতার হতে পারেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল খোদ।

মুখ্যমন্ত্রী এবং জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে বৈঠক বাতিলের সঠিক কারণ – টালা থানার ওসি এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি আশঙ্কা করেছেন যে এরপর সারিতে থাকা পরবর্তী ব্যক্তিটি হতে পারেন বিনীত গোয়াল। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মনোজ পন্তকে বৈঠক বাতিল করতে বলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বলে অভিযোগ। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনকারীরা বৈঠকের আর্জি জানাচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে তখন বলতে শোনা যায়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আজ আর বৈঠক সম্ভব না। প্রসঙ্গত, বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরও চিকিৎসকরা আর্জি জানিয়েছিলেন, যাতে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্যে হলেও বৈঠক হয়। লাইভ নিয়ে জটিলতা। লাইভ স্ট্রিমিংয়েরই দাবি। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। চিকিৎসকরা ধরনামঞ্চে ফিরে এসে সরকারকে পালটা তোপ দেগে প্রশ্ন তোলে, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির খবর কানে পৌঁছাতেই কি বৈঠক করা হল না?

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed