‘বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের দৃঢ়তা, তেজ, সততার কাছে মুখ্যমন্ত্রীর হার’ বাড়িতে নেমন্তন্ন করে আলোচনা করলেন না। কী গোপন করতে চান উনি?
মুখ্যমন্ত্রীর ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বারবার।
প্রথমত : সন্দীপ ঘোষের (আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ) বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তারদের সব থেকে বেশি অভিযোগ ছিল। অথচ সন্দীপের পদত্যাগের পরে তাঁকে পুনর্নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এর পরে ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে কী করে বিশ্বাস করবেন? মুখ্যমন্ত্রী বার বার সুপ্রিম কোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আসলে ‘ভয় দেখাচ্ছেন’ বলেই দাবি মানু্ষের।
দ্বিতীয়ত : মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে নেমন্তন্ন করে আলোচনা করলেন না। কী গোপন করতে চান উনি? ভিতরে এক বলবেন, বাইরে এক রকম বলবেন, এটা তো সরকারের অভ্যাস। তাই কি ডাক্তারদের কোনও কথাতেই রাজি হলেন না? বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের দৃঢ়তা, তেজ, সততার কাছে মুখ্যমন্ত্রী হার মেনেছেন। তাই ৩২-৩৩ দিন পরে এখন তাঁর মনে হয়েছে দেখা করা উচিত। এর আগে কখনও স্বাস্থ্যসচিব, মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছেন, কখনও বলেছেন আমি আর বসব না।
তৃতীয়ত : কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার বা ভিডিয়োও চাইছেন না, শুধু কার্যবিবরণীর বা ‘মিনিটস’ শর্তেই আলোচনায় রাজি। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, তাঁরা অপেক্ষা করতে রাজি নন। বেরিয়ে যেতে বলেন চন্দ্রিমা। ঘটনাটা ঘটেছে, সন্দীপ ও অভিজিতের গ্রেফতারের খবর আসার পরেই। সত্যিই ভয় পেয়েছেন?
এদিকে, সাফাই গেয়ে চন্দ্রিমা রাতে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুপুরে জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্নাস্থলে গিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে ওঁদের সঙ্গে কথা বললেন। বাড়িতে বৈঠকের জন্য তিন ঘণ্টা ঠায় বসে রইলেন। বেরিয়ে এসে কত ভাবে কথা বলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু হল না! কেউ কোথাও কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাবে দেখেছেন? সবাই যখন উঠে গেলেন, তখন ওঁরা কথা বলতে চাইলেন। দেখা যাক, পরে কী হয়।” মমতার দিনভর এই সব পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন’, ‘ঐতিহাসিক’ বলে সমাজমাধ্যমে প্রচার চালিয়েছেন তৃণমূলের নানা স্তরের নেতারাও।